২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার

বেতাগীতে করোনায় মৃত এএসআই খালেকের পরিবার পেল ঘর

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৬:১৮ অপরাহ্ণ, ২৯ এপ্রিল ২০২১

বেতাগীতে করোনায় মৃত এএসআই খালেকের পরিবার পেল ঘর

হৃদয় হোসেন মুন্না, বরগুনা >> ১৬ বছর চাকরি পুলিশে। এরপরও দালান বা পাকা বাড়ি দূরের কথা, পুরোনো বাড়িঘর মজবুত করে মেরামতই করতে পারেননি পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আব্দুল খালেক (৩৬)। ঢাকার মিরপুর পুলিশ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে কর্মরত এই পুলিশ কর্মকর্তা ২০২০ সালের ৩০ এপ্রিল রাজধানীর একটি হাসপাতালে করোনায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।  জেলা পুলিশের সদস্যরা বরগুনার বেতাগী উপজেলার সদর ইউনিয়নের ঝোপখালী গ্রামে তাঁর গ্রামের বাড়িতে লাশ দাফন করতে গিয়ে দেখেন, এই এএসআইয়ের পরিবারের করুণ অবস্থা। ১৬ বছর পুলিশের চাকরিজীবনে বসবাসযোগ্য একটি ঘরও নির্মাণ করতে পারেননি আব্দুল খালেক। এমতবস্থায় তার হঠাৎ মৃত্যুতে তিন সন্তান নিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছেন অন্ত:সত্ত্বা স্ত্রী ফাতিমা বেগম।

এ মানবেতর পরিস্থিতি জানার পর বরগুনার তৎকালীন পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেন নিহত এএসআই খালেকের পরিবারের জন্য একটা ছোট বাড়ি নির্মাণ করে দেওয়ার কথা দেন। সেই স্বপ্ন অবশেষে পূরণ হয়েছে খালেকের পরিবারের। বেতাগী উপজেলার সদর ইউনিয়নের ঝোপখালী গ্রামে বাংলাদেশ পুলিশের উদ্যোগে  খালেকের পরিবারকে দুই কক্ষবিশিষ্ট একটি পাকাবাড়ি নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (২৯ এপ্রিল) দুপুরে বেতাগী থানার অফিসার ইনচার্জ কাজী শাখাওয়াত হোসেন তপু খালেকের পরিবারের হাতে নবনির্মিত বাড়ির চাবি হস্তান্তর করেন।

জানা যায়, আব্দুল খালেক ২০০৪ সালে কনস্টেবল পদে বাংলাদেশ পুলিশে যোগদান করেন। এরপর সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) হিসেবে পদোন্নতি পান। চাকরি পাওয়ার আগে নিজ এলাকার একটি মসজিদের ইমামের দায়িত্ব পালন করতেন তিনি। চাকরি জীবনেও বিভিন্ন স্থানে কর্মরত অবস্থায় তিনি ইমামের দায়িত্ব পালন করেছেন। দরিদ্র পরিবারের সন্তান আব্দুল খালেক চাকরিও করতেন স্বল্প বেতনে। তাই স্ত্রী-সন্তান নিয়ে মাথা গোঁজার জন্য একটি ঘরও বানিয়ে যেতে পারেননি তিনি।

নিহত এএসআই আব্দুল খালেকের স্ত্রী ফাতিমা বেগম বলেন, পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে সন্তানদের নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ি। এই দুরবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে বাংলাদেশ পুলিশ উদ্যোগ নেওয়ায় তিনি সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানান।

বেতাগী থানার অফিসার ইনচার্জ কাজী শাখাওয়াত হোসেন তপু বলেন, ঢাকার মিরপুর পুলিশ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে কর্মরত অবস্থায় আব্দুল খালেক করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েন তাঁর পরিবার। তাঁদের বাসযোগ্য ভালো বাড়িও ছিল না। তাঁদের এই দুরবস্থা দেখে বাংলাদেশ পুলিশের উদ্যোগে দুই কক্ষবিশিষ্ট একটি পাকাবাড়ি নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে।

3 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন