১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

বেতাগীতে মনিটরিংয়ের অভাবে লাগামহীন নিত্যপণ্যের বাজার

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০২:২৭ অপরাহ্ণ, ২৮ অক্টোবর ২০২০

হৃদয় হোসেন মুন্না, বেতাগী:: বরগুনার বেতাগীতে দফায় দফায় হু হু করে বেড়েই চলেছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম। মহামারী করোনাভাইরাস দ্বারা সৃষ্ট আতঙ্ক, উদ্বেগ, অনিশ্চয়তা হ্রাস পেতে না পেতেই মানুষের মধ্যে নতুনভাবে ভর করছে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির আতঙ্ক। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রভাবে উপজেলার নিন্ম ও মধ্য আয়ের পরিবারগুলো দিশেহারা হয়ে পড়েছে। গত কয়েক সপ্তাহের ব্যবধানে বেগুন, রসুন, আলু, শসা, আদা, কাঁচা মরিচ ও পেঁয়াজসহ অধিকাংশ শাক-সবজির দাম কেজিপ্রতি গড়ে ৫ টাকা থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এর মধ্যে পেঁয়াজ, রসুন, আলু, আদা ও কাঁচা মরিচ অনেকটাই ক্রেতাদের নাগালের বাইরে চলে গেছে।
বিশেষ করে সবজির বাজারে দেখা দিয়েছে ভয়ানক আগুন। সম্প্রতি নিন্মচাপের প্রভাবে কয়েক দিনের বৃষ্টির কারণে কৃষকরা জমিতে চাহিদা মত সবজি উৎপাদন করতে পারেনি। এতে দ্রুত বেড়ে যায় সবজির দাম। বাজার ঊর্ধ্বগতির জন্য সবজি বিক্রেতারা বৃষ্টিকে দুষলেও বাজার মনিটরিং না হওয়াকে দুষছেন ক্রেতারা।
ক্রেতাদের অভিযোগ, নিয়মিত বাজার মনিটরিং না থাকায় বিভিন্ন শ্রেণীর ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে ইচ্ছেমতো নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি করছেন।
গতকাল বুধবার সাপ্তাহিক হাঁটের দিন বেতাগী পৌর শহরের কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত সপ্তাহের তুলনায় দাম বেড়ে কেজিপ্রতি বেগুন ৬০ টাকা, আলু ৪০ টাকা, কাঁচা মরিচ ১৮০ টাকা, পেঁয়াজ ৮৫ টাকা, শসা ৫০ টাকা, রসুন ১২০ টাকা এবং আদা ১০০ টাকা এবং মুসুর ডাল প্রকারভেদে কেজিপ্রতি ৭৫ টাকা থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে কিছুটা স্বাভাবিক রয়েছে পোল্ট্রি মুরগি ও মাছের দাম। প্রতি কেজি পোল্ট্রি মুরগি ১২০ টাকা, দেশি মুরগি ৩৫০ টাকা থেকে ৪০০ টাকা, গরুর মাংস ৫৫০ টাকা এবং খাসির মাংস ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
উপজেলার হোসনাবাদ ইউনিয়ন থেকে বাজার করতে আসা জাহাঙ্গীর খলিফা বরিশালটাইমসকে জানান, বাজারে কোন তরকারির দাম কেজি প্রতি ৫০ টাকার নিচে নেই। ফলে বাজার করতে গিয়ে অল্প কিছু কিনেই বাড়ি ফিরতে হচ্ছে। এতে করে সংসার চালাতে চরম বেগ পেতে হচ্ছে।
সাধারণ ক্রেতারা বলছেন, কখনো বৃষ্টি, কখনো সরবরাহ কম থাকা, আবার কখনো কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে দাম বাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মূল্যতালিকা টাঙানো এবং নির্ধারিত মূল্যে পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে কিনা, সেটি পর্যবেক্ষণের জন্য সব বাজারে দ্রব্যমূল্য মনিটরিং কমিটি গঠনের ব্যবস্থা করতে হবে।

কাঁচা বাজারের ব্যবসায়ী মোহাম্মাদ আলী বরিশালটাইমসকে জানান, সম্প্রতি বৃষ্টি ও বন্যায় কৃষি ক্ষেত নষ্ট হয়ে ফসল পচে গেছে। তাই বাজারে সরবরাহ কম থাকায় কিছু পণ্যের দাম বেড়েছে।

উপজেলা সচেতন নাগরিক পরিষদের আহবায়ক সাইদুল ইসলাম বরিশালটাইমসকে বলেন, বাজারে চাল, ডাল, পেঁয়াজ, আদা, রসুন, আলু, কাঁচা মরিচসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে ক্রেতাদের উঠেছে নাভিশ্বাস। আজ এক দামে কোনো একটি পণ্য কিনে নিয়ে গেলে পরদিন দেখা যায় সেই পণ্যের দাম কেজিতে বেড়ে গেছে কয়েক টাকা। এ পরিস্থিতিতে পরিবার-পরিজন নিয়ে বেঁচে থাকার তাগিদে অনেকে জীবনযাত্রার মান কমিয়ে আনতে বাধ্য হচ্ছেন।
বাজার মনিটরিংয়ের বিষয়ে জানতে বেতাগী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সুহৃদ সালেহীনের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি পরে কথা বলবেন জানিয়ে বিষয়টি এড়িয়ে যান।’

4 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন