২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

বেতাগীতে সড়ক যেন ধান-খড় শুকানোর চাতাল!

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৪:০৪ অপরাহ্ণ, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২০

হৃদয় হোসেন মুন্না, বেতাগী:: বরগুনার বেতাগীতে এখন চলছে আউশ ধান কাটা আর মাড়াইয়ের মৌসুম। এ মৌসুম শুরুর সঙ্গে সঙ্গে উপজেলার বিভিন্ন পাকা সড়কের ওপর শুরু হয়ে যায় ধান মাড়াই আর খড় শুকানোর প্রতিযোগিতা। এরপর স্তুপ করে রাখা হয় ওই সব শুকনো খড়। এমন দৃশ্য এখন চোখে পড়ে উপজেলার প্রতিটি সড়কে। এতে করে ওই সব সড়কে প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা, বাড়ছে দুর্ঘটনার ঝুঁকি।

গত শুক্রবার সরেজমিনে উপজেলার হোসনাবাদ, মোকামিয়া, কাজিরহাট চান্দখালী ইত্যাদি সড়ক-মহাসড়ক ঘুরে দেখা গেছে, চাষিরা মাঠ থেকে ধান কেটে রাস্তার উপর স্তুপ করে রাখছেন। অনেক স্থানে সড়কের উপরই চলছে, ধান মাড়াই-এর উৎসব। ধান মাড়াই করার পরও, শেষ হচ্ছে না এর যন্ত্রনা। এরপর খড় রাস্তায় বিছিয়ে শুকানো হচ্ছে দিনের পর দিন। এর ফলে এসব কালো পিচের সড়ক এখন সোনালী রং ধারন করেছে। এসব সড়কে চরম আতংক আর ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছে পথচারীসহ সব ধরনের যানবাহন। ভিজা ধানের খড়ের কারনে সাইকেল-মোটরসাইকেলসহ যানবাহন পিছলে দুর্ঘটনা ঘটছে।

বেতাগী বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন হিজলতলাজ-জলিশা বাঁজার সড়কের হোসনাবাদ ইউনিয়নের নিউ মার্কেট এলাকায় ধান শুকানোর কাজ করতে থাকা হানিফ সরকার বরিশালটাইমসকে বলেন, এখন খোলা জায়গা না থাকায় ধান, খড় এগুলো শুকানো কঠিন হয়ে পড়েছে। অথচ সময়মতো শুকাতে না পারলে ধান নষ্ট হয়। তাই পাকা রাস্তার ওপরই ধান শুকাতে হচ্ছে। তা ছাড়া সড়কে এসব শুকাতে সময়ও কম লাগে। তবে এতে পথচারীদের চলাচলে সমস্যার কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, একটু দেখে শুনে গেলেই আর সমস্যা হবে না।

মোকামিয়া এলাকায় আঞ্চলিক মহাসড়কের ওপর ধানমাড়াই করছিলেন কৃষক হাবিবুর রহমান। তিনি বরিশালটাইমসকে জানান, আগে তো ধান মাড়াইয়ের জন্য বাড়ির উঠানে অনেক খোলা জায়গা ছিল। এখন নেই। তাই গ্রামের প্রায় সবাই এভাবে রাস্তার ওপরে ধান মাড়াই ও শুকানোর কাজ করে।

বেতাগী পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ডর সাবেক কাউন্সিলর রমেন চন্দ্র দেবনাথ বরিশালটাইমসকে বলেন, ‘রাস্তায় ধান মাড়াই ও খড় শুকানোয় সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়ে ভ্যান, রিকশা, মোটরসাইকেল আর অটোরিকশাগুলো। জায়গার অভাবে মানুষ রাস্তায় ধান মাড়াই ও শুকানোর কাজ করছে। তাই তাদের বাধাও দিতে পারি না।’

মোটরসাইকেল চালক মোঃ রবিচান হাওলাদার বরিশালটাইমসকে বলেন, ‘সড়কগুলোতে ধান মাড়াই ও শুকানোর সময় চলা কঠিন হয়ে যায়। তা ছাড়া এসব শুকানোয় রাস্তা পিচ্ছিল হয়ে থাকায় একটু অসতর্ক হলেই দুর্ঘটনার ঝুঁকি থাকে।’
এ বিষয়ে বেতাগী উপজেলা নাগরিক অধিকার ফোরামের আহ্বায়ক সাইদুল ইসলাম মন্টু বরিশালটাইমসকে বলেন, ‘রাস্তায় ধান মাড়াই ও শুকানোটা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এই জনদুর্ভোগ নিরসনে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’

বেতাগী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সুহৃদ সালেহীন বরিশালটাইমসকে বলেন, ‘রাস্তা আটকে যাতে কেউ যানচলাচলে বাধা ও জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করতে না পারে সেজন্য প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

3 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন