২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার

বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৫:৫৮ অপরাহ্ণ, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০

বার্তা পরিবেশক, অনলাইন ::  ভারত-বাংলাদেশ উভয় দেশের সিএন্ডএফ এজেন্টদের আমদানি-রপ্তানি কাজে যাতায়াতে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) বাধা দেওয়ায় দেশের বৃহত্তম স্থলবন্দর বেনাপোল-পেট্রাপোলে আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ভারতের সাথে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ রয়েছে। আজ সকালে মালামাল আমদানি-রপ্তানির জন্য কাগজপত্র নিয়ে পেট্রাপোল বন্দরে প্রবেশ করতে গেলে হঠাৎ করে বিএসএফের বাধার মুখে পড়ে সিএন্ডএফ কর্মচারিরা। একই ভাবে ভারতীয় কর্মচারিরাও বেনাপোল চেকপোস্টে প্রবেশ করতে পারেনি। কাউকে প্রবেশ করতে দেয়নি বিএসএফ। এর ফলে উভয় বন্দরে কোনো ট্রাক পণ্য নিয়ে আসতে ও যেতে পারেনি। উভয় দেশে প্রবেশের অপেক্ষায় পণ্য বোঝাই কয়েক হাজার ট্রাক আটকা পড়েছে। এর মধ্যে পঁচনশীল পণ্যও রয়েছে। তবে কাস্টমসের কর্মকর্তারা আমদানি-রপ্তানি সচল করতে ভারতীয় পেট্রাপোল বন্দরের কাস্টমস কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে কাস্টমসের কর্মকর্তারা।

বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান জানান, দ্রুত আমদানি-রপ্তানির সুবিধার্থে দুই দেশের সিঅ্যান্ডএফ স্টাফরা কাগজপত্র প্রস্তুত করতে বেনাপোল ও পেট্রাপোল বন্দরে কাস্টমস কর্তৃপক্ষের দেওয়া পরিচয় পত্রের মাধ্যমে যাতায়াত করে থাকেন। আজ মঙ্গলবার সকালে কাগজপত্র নিয়ে ভারতে প্রবেশ করতে চাইলে বিএসএফ বাধা দেয়। তারা বলেন, এভাবে প্রবেশ করা যাবে না। পাসপোর্ট নিয়ে প্রবেশ করতে হবে।

তারা বলেন, আমরা ভারতে এবং ভারতের সিএন্ডএফ ব্যবসায়ীরা যদি কাগজপত্র আদান প্রদান করতে না পারি তবে ব্যবসা বাণিজ্য মুখ থুবড়ে পড়বে। এই কাগজপত্র পেয়ে উভয় দেশে আইজিএম খোলা হয় তারপর মালামাল দুই দেশে প্রবেশ করে। কিন্তু হঠাৎ করে ভারতীয় বিএসএফ সদস্যরা স্টাফদের বন্দরে যাতায়াতে নিষেধাজ্ঞা জারি করায় আমদানি-রফতানি কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।

এদিকে আমদানি-রপ্তানি সচল করতে আজ বুধবাার দুপুরে বেনাপোল চেকপোস্ট বন্দর টার্মিনাল মিলনায়তনে উভয় দেশের সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশন ও কর্মচারি এসোসিয়েশনের নেতৃবন্দ প্রশাসনের সঙ্গে এক বৈঠকে মিলিত হয়। বৈঠকে ভারতীয় প্রতিনিধিদলের নেতৃবৃন্দরা জানান, ভারতীয় বিএসএফ তাদের জানিয়েছে মঙ্গলবার সকালে একটি আদেশ এসেছে যাতায়াত বন্ধে। এ বিষয়টি তাদের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের আদেশ। পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত বিএসএফ কাউকে যেতে দিচ্ছে না। এ অবস্থায় এ পথে আমদানি-রপ্তানি করা সম্ভব নয়। আমরা বিষয়টি উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।

তারা আরো জানান, আমদানি-রপ্তানি কাজ দেখভালের দায়িত্ব ভারতের কাস্টমস কর্তৃপক্ষের। কিন্তু তারাও এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না।

বৈঠকে বেনাপোল স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের উপপরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবির তরফদার, বেনাপোল কাস্টমসের সহকারি কমিশনার উত্তম চাকমা, বেনাপোল পোর্ট থানার ওসি মামুন খান, বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্টস এসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন, সাবেক সভাপতি শামছুর রহমান, সহসভাপতি খায়রুজ্জামান মধু, কামাল উদ্দিন শিমুল, যুগ্ম সম্পাদক জামাল হোসেন, কাস্টমস সম্পাদক নাসির উদ্দিন, বন্দর সম্পাদক শাহাবুদ্দিন, সিএন্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মুজিবর রহমান, সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান, ভারতের পেট্রাপোল সিএন্ডএফ এজেন্ট স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রতন কুমার বিশ্বাস, সাধারণ সম্পাদক কার্ত্তিক চক্রবর্তী, সাবেক সভাপতি বিশ্বজিৎ ঘোষ, বনগাঁ মোটর ওনার্স এসোসিয়েশনের সাধারন সম্পাদক দিলীপ দাস, মটর পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারন সম্পাদক প্রভাস কুমার প্রমুখ।

এ ব্যাপারে বেনাপোল বন্দরের উপপরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবির তরফদার বলেন, দীর্ঘদিনের যাতায়াতের বিষয়টি কোনো আলোচনা বা সময় না দিয়ে ভারতীয় বিএসএফের এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া সঠিক হয়নি। এ কারণে এ পথে দুই দিন আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধ রয়েছে। বেনাপোল-পেট্রাপোল সিএন্ডএফ এজেন্টের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। তারা বিএসএফের সাথে কথা বলে দ্রুত আমদানি-রপ্তানি সচল করার চেস্টা করছেন। আমরাও পেট্রাপোল বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে বাণিজ্য সচল করার চেষ্টা করছি।

2 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন