২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার

বৈশাখী মেলাকে ঘিরে ব্যস্ত উজিরপুরে মৃৎশিল্পীরা

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৪:১৯ অপরাহ্ণ, ০৭ এপ্রিল ২০১৯

আর মাত্র কয়েক দিন পরই বাঙালি জাতির প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখ। আর এই উৎসবকে ঘিরে বরিশালের উজিরপুর উপজেলার বিভিন্নস্থানে নানা রঙের পণ্য নিয়ে গ্রামে গ্রামে বসবে বৈশাখী মেলা।

মেলায় বর্ণিল মৃৎশিল্পের কদর থাকায় দিনরাত ব্যস্ত সময় পার করছেন এখানকার কুমাররা। তাই পহেলা বৈশাখের এসব মেলাকে সামনে রেখে ঘুম নেই মৃৎশিল্পীদের চোখে। তারা মেলার চাহিদা মেটাতে ও শিশুদের জন্য মাটির তৈরি বিভিন্ন ধরনের খেলনা প্রস্তুত করতে পরিবারের সবাইকে নিয়ে দিন-রাত ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে।

মনের মাধুরী মিশিয়ে মাটির তৈরি খেলনার আকৃতি দিচ্ছেন তাঁরা। চাকার মাধ্যমেও মাটিকে বিভিন্নভাবে আকৃতি দেওয়া হয়। কেউ কেউ আবার মাটির সিমেন্টের তৈরি সাজ ব্যবহার করেও মাটির খেলনা প্রস্তুত করছেন। তারপর সেই মাটির জিনিসপত্র আগুনে পুড়িয়ে শক্ত করা হয়। এরপর রং-তুলির আঁচরে সেগুলোকে ফুটিয়ে তোলা হয়।

উপজেলার কালিরবাজার, কুমার বাজার, উত্তর ধামুড়াসহ বেশ কয়েকটি পালপাড়া ঘুরে দেখা গেছে, কেউ মাটি গুঁড়া করে কাদা করছেন, কেউ মাটি দিয়ে বিভিন্ন ধরনের হাঁড়ি-পাতিল তৈরি করছেন, কেউবা শিশুদের খেলনা পুলিশ, পুতুল, তাল, আম, মাছ, ব্যাংক, হাতিসহ বিভিন্ন পশুপাখির আকৃতি তৈরিতে ব্যস্ত।

আবার কেউ মাটির তৈরি জিনিসপত্রে রং-তুলি দিয়ে হরেক রকমের নকশা করছেন। অনেকে সদ্য তৈরি পণ্যগুলো রোদে শুকাচ্ছেন। এক দল ব্যস্ত রোদে শুকানো জিনিসগুলো আগুনে পোড়ানোর কাজে। এসব কাজে স্কুল-কলেজ পড়ুয়া ছেলেমেয়েরাও তাদের বাবা-মাকে নানাভাবে সাহায্য করছে। পালপাড়াগুলোয় শিল্পীদের মধ্যে পণ্য তৈরির বেশ প্রতিযোগিতা লক্ষ করা গেছে।

পৌর সদরের কুমার বাজার এলাকার মৃৎশিল্পী পরিতোষ পাল জানান, এবারের বৈশাখী মেলার পণ্য তৈরির জন্য বিভিন্ন স্থান থেকে মাটি সংগ্রহ করেছেন। পণ্যগুলো উপজেলার বিভিন্নস্থানের মেলাগুলোতে সরবরাহ করা হবে। তিনি প্রত্যেক বছরের ন্যায় এবারও বৈশাখী মেলার জন্য পুলিশ, পাখি, বাঘ, তালসহ শিশুদের খেলনা তৈরি করেছেন।

একই এলাকার মৃৎশিল্পী কালা চাঁদ পালের স্ত্রী বলেন, প্রতিবারের মতো এবারও পহেলা বৈশাখীকে সামনে রেখে গত এক মাস ধরে তারা দিন-রাত সমানে কাজ করে যাচ্ছেন। খুবই ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা পালপাড়ার লোকজন। তিনি আরও জানান, ‘এখন তো আর মাটির কাজ করে কোন লাভ হয়না। দীর্ঘদিনের পেশা বলে এখনো এটি করছেন তারা। সরকারের কোন অনুদান পেলে এই কাজটা চালিয়ে যেতে আরো সহজ হবে বলেও জানান তারা।

একই এলাকার আরেক শিল্পী কার্তিক পাল জানান, তিনি পুতুল, সোনালি রঙের পাতিল, লবণ বাটি, ব্যাংক ইত্যাদি তৈরি করছেন। তবে বর্তমান এ মৌসুম জুড়ে তাদের পাল পাড়ার মৃৎশিল্পীরা খুব ব্যস্ত সময় পাড় করলেও কিছুদিন পরেই বেকার হয়ে পড়বেন তারা। তখন তাদের একেবারেই অলস সময় কাটাতে হবে।

এছাড়া বৈশাখ মৌসুম থেকে উপার্জিত আয়ের ওপরই মৃৎশিল্পীদের বছরের বাকি দিনগুলো চলায় সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

10 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন