২৮শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার

ভারতের হাইকোর্টে বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পাচ্ছেন সমকামী!

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০১:৩৯ অপরাহ্ণ, ১৬ নভেম্বর ২০২১

ভারতের হাইকোর্টে বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পাচ্ছেন সমকামী!

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল >> ভারতের হাইকোর্টে এবার বিচারপতি হিসেবে একজন সমকামীকে নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। মঙ্গলবার এ খবর জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস ও নিউজ এইটিন।

গত ১১ নভেম্বর কলেজিয়ামের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। আগেও কৃপালের নাম প্রস্তাব করা হয়েছিল। কিন্তু তার সঙ্গী একজন ইউরোপীয় এবং সুইজারল্যান্ডের দূতাবাসে কর্মরত বলে সম্ভাব্য স্বার্থ সংঘাতের অজুহাতে কেন্দ্রের পক্ষ থেকে একাধিকবার তার নামে আপত্তি জানানো হয়।

প্রধান বিচারপতি ছাড়াও কলেজিয়ামের সদস্য বিচারপতি ইউ ইউ ললিত এবং বিচারপতি এ এম খানউইলকর, মোট তিন সদস্যের এই কলেজিয়ামই হাই কোর্টের বিচারপতি নিয়োগে নাম সুপারিশ করেন।

অক্সফোর্ড ও কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন নিয়ে পড়াশোনা করা কৃপাল দু’দশক ধরে পেশায় রয়েছেন। তার বাবা বি এন কৃপাল ২০০২ সালে ছিলেন ভারতের প্রধান বিচারপতি।

গত এপ্রিলে এক সাক্ষাৎকারে কৃপাল বলেন, আমার পার্টনার বিদেশি বংশোদ্ভূত বলে তা নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে দেখানো হচ্ছে। এটাকে সন্দেহজনক হিসেবে দেখানো হচ্ছে। কিন্তু এটা আদৌ সত্য নয়। আমি কেন আমার সেক্সুয়ালিটির জন্য বিচারপতি হিসেবে বিবেচনাধীন হবো না?

নিউজ এইটিনের খবরে বলা হয়, কলেজিয়াম ২০১৮ সালে প্রথম সৌরভ কৃপালের নাম বিচারপতি পদে সুপারিশ করেছিল। কিন্তু তিন বছর আগের সেই সুপারিশ সে সময় গ্রাহ্য হয়নি। কিছুদিন পর ফের বিষয়টি নিয়ে ভাবনাচিন্তা করা হবে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কলেজিয়াম।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের খবরে বলা হয়, সৌরভ কৃপাল প্রকাশ্যেই নিজেকে সমকামী বলে ঘোষণা করেছেন। সে কারণেই হয়তো পরবর্তী পর্যায়ে সুপারিশ করতে এই বিলম্ব। যদি কলেজিয়ামের সুপারিশ কেন্দ্র মেনে নেয়, তাহলে তিনিই হবেন দেশের প্রথম ঘোষিত সমকামী বিচারক।

গত ফেব্রুয়ারিতে তৎকালীন কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী রবিশংকর প্রসাদকে চিঠি দিয়ে গোয়েন্দা তথ্যের ব্যাখ্যা চেয়েছিলেন প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদে। জবাবে ফের কৃপালের সঙ্গী ‘বিদেশি’ বলে আপত্তি জানিয়েছিল কেন্দ্র।

২০১৭ সালে প্রধান বিচারপতি গীতা মিত্তল, বিচারপতি সঞ্জীব খান্না এবং রবীন্দ্র ভাটকে নিয়ে গঠিত তৎকালীন দিল্লি হাই কোর্টের কলেজিয়াম কৃপালের নাম সুপারিশ করেন।

বিচারপতি মিত্তল ২০২০ সালের ডিসেম্বরে অবসর নিয়েছেন। বিচারপতি খান্না এবং বিচারপতি ভাট এখন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি। ঘটনাচক্রে কৃপালের বিষয়ে কলেজিয়াম সিদ্ধান্ত গ্রহণ পিছিয়ে দেওয়ার দু’দিন পর ২০১৮ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৭ ধারা খারিজ করে দেয় সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ। যে ধারায় সমকামকে অপরাধ হিসাবে গণ্য করা হত।

ওই মামলায় আবেদনকারী নভতেজ জোহর ও ঋতু ডালমিয়ার আইনজীবী ছিলেন কৃপাল।

নিউজ এইটিনের খবরে বলা হয়, ২০১৯ সালের জানুয়ারি, এপ্রিল এবং গত বছরের আগস্টে কৃপালকে নিয়ে সিদ্ধান্ত স্থগিত রাখে কলেজিয়াম। তবে ১৯ মার্চ দিল্লি হাই কোর্টের ৩১ জন বিচারপতি সর্বসম্মতিক্রমে তাকে সিনিয়র অ্যাডভোকেট হিসাবে পদোন্নতি দিয়েছিলেন।

3 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন