২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বুধবার

ভালোবাসার ফাগুন রাঙালো কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১২:৫৫ অপরাহ্ণ, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০

সাইদুল ইসলাম, লাবন্য ইসলাম:: প্রকৃতিতে এসেছে মধুর বসন্ত। সঙ্গে যোগ হয়েছে ভালোবাসা দিবস। পয়লা ফাল্গুন আর বিশ্ব ভালোবাসা দিবসের রঙ লেগেছে বিশ্বের বৃহত্তম সমুদ্রসৈকত কুয়াকাটায়।

একে তো সরকারি ছুটির দিন, তার ওপর বসন্ত-ভালোবাসা দিবস। বিশেষ দিনকে ঘিরে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে উপচে পড়ছে ভালোবাসার ঢেউ!  ফাগুনের আগুনে জ্বলছে পর্যটন শহরটি।

শুধু পর্যটক-ই নয়, ফাগুন আর ভালোবাসার আনন্দে মেতে ওঠেছেন স্থানীয়রাও। বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুর থেকে বাড়তে থাকে তারুণ্যের উচ্ছ্বাস! শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) হবে বসন্ত আর ভালোবাসার মহামিলন! সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই মিলনে যোগ দিতে সৈকতে জমায়েত হবেন লাখো পর্যটক।

কুয়াকাটা সিকদার  গেস্ট হাউস যুবলীগ নেতা জানান, এখন কেবল শীতকালীন পর্যটন মৌসুমে নয়, সারা বছরই কমবেশি লোকজন কুয়াকাটায় বেড়াতে আসে। তবে ঈদ, পূজাসহ নানা উৎসবে পর্যটকের ভিড় বেশি থাকে।

তিনি জানান, ফাগুন উৎসব উপলক্ষে শুক্রবার হোটেল সিকদারের প্রায় সব কক্ষই আগাম বুকিং হয়ে গেছে। শনিবারও (১৪ ফেব্রুয়ারি) একই অবস্থা থাকবে। তবে রোববার (১৫ ফেব্রুয়ারি) থেকে চাপ কমে যাবে।

এ সময়ে কুয়াকাটা শহরের বাইরের পর্যটন এলাকা বিশেষ করে ব্যাপক ভিড় থাকবে বলে জানান ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য জাকির হোসেন।

তিনি বলেন, শুক্রবার ফাগুন দিবসে কয়েক হাজার তরুণ-তরুণীসহ অন্তত ৩ হাজার পর্যটক কুয়াকাটায় অবস্থান করবেন। ইতোমধ্যে এ প্রবাল কুয়াকাটায় প্রায় ৫০ হোটেলের সব কক্ষই আগাম বুকিং হয়ে গেছে।

‘অন্যান্য বছর বিশ্ব ভালোবাসা দিবসের আগের দিন পয়লা ফাগুন উদযাপন করা হলেও এবার এ দুই বিশেষ দিন এক হয়ে যাওয়ায় মানুষের কাছে দিনটি হয়েছে আরও বিশেষ।’

অনেকেই বলছে, এ যেন ফাগুন আর ভালোবাসার মহামিলন। তাই এ দিনকে ঘিরে কুয়াকাটা অন্তত লাখো পর্যটকের সমাগম হয়েছে। কেউ প্রিয়জনের সঙ্গে, কেউ বাবা-মা; অনেকেই প্রিয় বন্ধুর সঙ্গে ছুটে এসেছেন বিশ্বের দীর্ঘতম কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে।

সৈকতের বালিয়াড়িতে বসে সময় কাটানো, সমুদ্র স্নান, বিকেলে প্রিয়জনের পাশে দাঁড়িয়ে সূর্যাস্ত অবলোকনসহ প্রিয়সব মুহূর্ত যেন রঙিন হয়ে ওঠেছে ভালোবাসার রঙে। আর সমুদ্রের উত্তাল ঢেউয়ের সঙ্গেও যেন চলছে ভালোবাসার মিতালি।

ফাগুনের এ উত্তাপ নিতে বৃহস্পতিবার সবান্ধবে কুয়াকাটা এসেছেন বিভিন্ন জেলার লোকজন,

হরেক রকম প্রজাপতি, রাজকাঁকড়া আর চামচ ঠুঁটো বাটান পাখি দেখা ও ছবি তোলার ইচ্ছাও তাদের।

তবে বরিশালের তামান্না রিদয় এসেছেন ভিন্ন কারণে। আত্মীয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানে কুয়াকাটা আসতে হয়েছে বলে দেখে যাচ্ছেন কুয়াকাটা ।  যেন কলার বেচার সঙ্গে রথ দেখাও গেলো।
কুয়াকাটা শহরের বন ভবনের সামনের ফুল বিক্রেতা ইলিয়াস বলেন, বৃহস্পতিবার থেকেই ফুলের দোকানে চাপ তৈরি হয়েছে। তবে শুক্রবারই অর্ডার বেশি।

এদিকে বিশেষ দিনে পর্যটকদের বাড়তি চাপ সামলাতে জোরদার করা হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

পটুয়াখালী জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জসিম উদ্দিন বরিশালটাইমসকে জানান, এ বিশেষ দিনটিকে ঘিরে যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে শহরের কয়েকটি পয়েন্টে চেকপোস্ট বসানোসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। এছাড়াও সৈকতসহ আশপাশের এলাকায় পর্যটকদের আগমন ও স্থানীয়দের পদচারনা নিরাপদ করতে পুলিশের পাশাপাশি র্যাব ও  সাদা পোশাকধারী পুলিশ আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত থাকবে।

কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশের এসপি বরিশালটাইমসকে জানান, আমরা আশা করছি এই দিনে লাখো পর্যটকের সমাগম হবে। তাই সমুদ্র সৈকতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। পর্যটকদের নিরাপত্তা দিতে সার্বক্ষণিক ট্যুরিস্ট পুলিশ কাজ করছে।

তিনি বলেন, বিশ্ব ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে পর্যটকদের নিরাপদ ভ্রমণ নিশ্চিত করতে সব পর্যটন স্পটে ট্যুরিস্ট পুলিশের পোশাকধারী এবং সাদা পোশাকে সদস্যরা রয়েছেন। বিশেষ করে লালকাঁকরারচর বিচসহ আশপাশের বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে নেওয়া হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

4 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন