১৮ই এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার

ভোলায় এসএসসি পরীক্ষার্থীকে ইউপি সচিবের মারধর: আতঙ্কিত শিক্ষার্থী

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১০:৪৮ পূর্বাহ্ণ, ১২ জানুয়ারি ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক, ভোলা:: ভোলায় পরানগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থীকে মারধর ও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করার অভিযোগ উঠেছে দৌলতখানের ভবানীপুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মোঃ আলমগীর হোসেনের বিরুদ্ধে। গত রোববার (১০ জানুয়ারি) বিকালে ভোলা সদর উপজেলার পরানগঞ্জ বাজারের নাজিউর রহমান কলেজের পেছনে মীর বাড়িসংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ইউপি সচিবের মারধরের শিকার এসএসসি শিক্ষার্থী সোহাগ বর্তমানে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। নির্যাতনের শিকার শিক্ষার্থীর পরিবার জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, ইউএনওসহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন।

সূত্রে জানা গেছে, পূর্ব ইলিশা ইউনিয়নের বাসিন্দা মোঃ সিরাজ উদ্দিন মোল্লার ছেলে পরানগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী মোঃ সোহাগ প্রতিদিনের মতো প্রাইভেট পড়ে বাড়ি ফেরার পথে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে তার সহপাঠী বন্ধু মিতুলের সাথে কথা বলছিলো। এসময় ওই পথ দিয়ে দৌলতখান উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মো. আলমগীর হোসেন আরও একজন লোকসহ যাচ্ছিলো। শিক্ষার্থী মিতুল সহপাঠী মোঃ সোহাগকে সাইড দিতে বলে। সোহাগ সচিব আলমগীরকে সাইড দেয়। সচিব আলমগীর ও তার সাথে থাকা লোক কিছু দূর চলে যায়। সোহাগ তার সহপাঠি বন্ধু মিতুলের উদ্দেশে বলে মানুষই তো যাইতেছে, গাড়িতো আর যাইতেছে না যে মাইরা দিয়া চলে যাবে। ভয়ের কি আছে। দুই বন্ধুর সাথে চলা এই কথা দূর থেকে শুনতে পেয়ে ইউপি সচিব আলমগীর হোসেন উত্তেজিত হয়ে তেঁড়ে এসে এসএসসি পরীক্ষার্থী সোহাগকে মারধর করে। সচিব আলমগীর উত্তেজিত মেজাজে বলে তোর বাড়ি কোথায়, বাপের নাম কি, তোর বাপেরে বাড়ি থেকে এনে তোকে ও বাপকে পিঠাবো। আমাকে চিনিস? এসময় শিক্ষার্থী সোহাগ ও মিতুল সচিব আলমগীর হোসেনকে উদ্দেশে করে বলে আপনাকে তো কিছু বলি নাই। আপনি কেনো এমন করছেন। আলমগীর হোসেন আরও উত্তেজিত হয়ে সোহাগকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। একজন ইউপি সচিবের এমন আচরণে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে শিক্ষার্থী সোহাগ ও মিতুল।

নির্যাতনের শিকার শিক্ষার্থী মোঃ সোহাগের বড় ভাই এম শাহরিয়ার জিলন বলেন, দুই বন্ধুর কথপোকথনকে কেন্দ্র করে ইউপি সচিব আলমগীর হোসেন আমার ভাই সোহাগকে মারধর ও অশোভন আচরণের ঘটনায় আমরা ব্যথিত হয়েছি। একজন ইউপি সচিবের কাছ থেকে এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনা আশা করিনি। আমার ভাই এসএসসি পরীক্ষার্থী সোহাগ এ ঘটনার পর থেকে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। আমি এ ঘটনায় জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, ইউএনওসহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ভবানীপুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মো. আলমগীর হোসেন বরিশালটাইমসকে বলেন, আমি রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলাম। তারা রাস্তা অবরোধ করে রাখছিলো। তারা দুজন কথা বলছিলো, আমি ডাক দিলে কথা না শুনায় সোহাগকে থাপ্পর দিয়েছি।

বাল্যবিয়ে ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট সাহাদাত হোসেন শাহীন বরিশালটাইমসকে বলেন, এসএসসি পরীক্ষার্থী সোহাগকে মারধরের ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। তুচ্ছ কারণে শিক্ষার্থীকে মারধরের ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। একজন সরকারী চাকুরীজীবি ব্যক্তির কাছ থেকে এ ধরনের আচরণ কেউ আশা করে না। প্রশাসনের কাছে এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।’

দৌলতখান উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মো. আলমগীর হোসেনের আগেও একাধিক লোকের সাথে এমন অশোভন আচরণ করেছেন বলে জানা গেছে।’

3 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন