বিশেষ বার্তা পরিবেশক:: বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর ‘ভয়ঙ্কর কিলার’ খ্যাত টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ রাতের আঁধারে টেকনাফ ছেড়েছেন। গত সোমবার গভীর রাতে তিনি টেকনাফ ছেড়ে গেছেন। টেকনাফের একাধিক বাসিন্দার অভিমত, পাপের বোঝা পূর্ণ হওয়ায় প্রাকৃতিক বিচার থেকে বাঁচতে পারেননি ‘রক্তখেকো’ প্রদীপ দাশ। গত কয়েক বছরে ইয়াবা নির্মূলের নামে সে যা করেছে, তা ভয়ঙ্কর দানবীয় কাহিনীকেও হার মানিয়েছে। সূত্র: যুগান্তর।

স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি সংবাদকর্মীদের জানান, সরকারের মাদক নির্মূলের ঘোষণার পর আশায় বুক বেঁধেছিলেন। মনে করেছিলেন অভিযান শুধু মাদক ব্যবসায়ী ও অপরাধীদের বিরুদ্ধে হবে। কিন্তু তা হয়নি।

‘টেকনাফে যার যার পাকাবাড়ি আছে, তাদেরকে ধরে নিয়ে দিনের পর দিন হাজতে রেখে অমানসিক নির্যাতন করে আদায় করেছেন বিপুল অর্থ। চাইলেও ভয়ে কেউ অভিযোগ বা অনুযোগ করার সুযোগ পায়নি। ’

স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়- ওসিকে টাকা দেওয়ার কথা কোনোভাবে প্রকাশ হলেই তার ওপর অথবা তার পরিবারের ওপর চলত ইয়াবার মামলা, হামলা ও অমানসিক বর্বরতা।

টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল বশর সাংবাদিকদের বলেন, দীর্ঘ জীবনে অনেক পুলিশ অফিসার দেখেছি। কিন্তু টাকার জন্য রক্তের ঘ্রাণ নেওয়ার অফিসার দেখিনি। ক্রসফায়ারের নামে মানুষ খুন করা ছিল ওসি প্রদীপের নেশা।

ক্ষমতাসীন দলীয় এই নেতা আরও বলেন- সে খুন, ইয়াবার মামলা ও হুমকি দিয়ে টেকনাফে চাকরির সময়ে অন্তত ২০০ কোটি টাকা নিয়ে গেছে।

এদিকে গত ৩১ জুলাই টেকনাফের শামলাপুরে পুলিশের চেকপোস্টে ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক লিয়াকতের গুলিতে নিহত সেনাবাহিনীর মেজর (অবসরপ্রাপ্ত) সিনহা হত্যা মামলায় আসামি হওয়ার পর বুধবার রাতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে ওসি প্রদীপ কুমার দাশকে প্রত্যাহার করে চট্টগ্রাম রেঞ্জে সংযুক্ত করা হয়।

কিন্তু তার আগেই গত সোমবার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে টেকনাফ ছাড়েন ওসি প্রদীপ। তবে তিনি বর্তমানে কোথায় আছেন, তা বলতে নারাজ পুলিশের কর্মকর্তারা।

কক্সবাজার পুলিশ সুপার (এসপি) এবিএম মাসুদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশকে প্রত্যাহার করে চট্টগ্রাম রেঞ্জ অফিসে সংযুক্ত করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বর্তমানে থানার ওসি (তদন্ত) এবিএমএস দোহা দায়িত্বে রয়েছেন।

তবে প্রদীপের অবস্থানের বিষয়টি তিনি বলতে অনিহা প্রকাশ করেন।’