২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার

মনপুরায় দেড় মাস ধরে ১০০ পরিবার পানিবন্দি, বৃহৎ কেওড়া বন ধ্বংসের আশংকা

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০২:০৩ অপরাহ্ণ, ০৯ জুলাই ২০২১

মনপুরায় দেড় মাস ধরে ১০০ পরিবার পানিবন্দি, বৃহৎ কেওড়া বন ধ্বংসের আশংকা

সীমান্ত হেলাল, মনপুরা >> ভোলার মনপুরায় ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের পর থেকে দেড় মাস ধরে পানিবন্দি হয়ে আছে ১০০ পরিবার। দীর্ঘস্থায়ী জলাবদ্ধতার কারণে ঘর থেকে বের হতে পারছেন না এসব বাড়ি ঘরের মানুষ। একদিকে কঠোর লকডাউন অপর দিকে পানিবন্দি থাকায় চুলো জ¦লছেনা অনেকের ঘরে। বেশিরবাগ ঘরের চুলো পানিতে ডুবে যাওয়ায় রান্না না হওয়ায় খেয়ে না খেয়ে অর্ধাহারে অনাহারে দিনাতিপাত করছেন তারা। তাই দ্রুত জলাবদ্ধতা নিরসনে টেকসই পাইপলাইন অথবা কালভার্ট নির্মাণের দাবি জানান এলাকাবাসী।

জানা যায়, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে গত ২৫ মে উপজেলা সদর হাজীর হাট ইউনিয়নের সাথে উত্তর সাকুচিয়া ইউনিয়নের একমাত্র সংযোগ সড়ক আলম নগর ক্রসড্যামটি ভেঙে যায় মেঘনার প্রবল স্রোতে। পরে ভেঙে যাওয়া অংশে মেরামত করা হলে ক্রসড্যামের ভেতরের অংশ হয়ে পড়ে পানিবন্দি। মেঘনার জোয়ার ও ভারী বৃষ্টির পানি জমে বিশাল জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয় এলাকাজুড়ে।

এদিকে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় জলাবদ্ধতার কারণে ৫০ একর কৃষি জমি রয়েছে অনাবাদি। আমনের ভরা মৌসুমেও জমি চাষাবাদ করতে পারছেন না কৃষকরা। স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক মোস্তাফিজ, কৃষ্ণ দাস, হানিফ, সুজন, জীবন গোয়াল, রুহুল আমীন মাঝি, কালু ব্যাপারী, হারুন, শাহাবুদ্দিন সর্দার ও রুবেল জানান, এভাবে পানিবন্দি থাকলে ফসল ফলাতে না পেরে চরম খাদ্য সংকটে পড়তে হবে তাদের। এমনিতে লকডাউনে তারা কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। তাছাড়া যদি জমি চাষাবাদ করতে না পারেন তাহলে পরিবার পরিজন নিয়ে না খেয়ে থাকতে হবে তাদের।

এছাড়াও জলাবদ্ধতার কারণে পানিতে ডুবে রয়েছে বন বিভাগের বৃহৎ আকারের কেওড়া বাগান। মায়াবী হরিণের অভয়ারণ্য বাগানটি ডুবে থাকায় হরিণখেঁকোদের খপ্পরে পড়ে হরিণ নিধন হতে পারে বলে ধারনা করছেন স্থানীয়রা। দ্রুত পানি নিষ্কাশন না করলে কেওড়া গাছের গোড়া পঁচে গিয়ে ম্যানগ্রোভ বাগানটি ধ্বংস হয়ে যাওয়ার আশংকা করছেন পরিবেশ সচেতন মহল।

এদিকে জলাবদ্ধতার কারণে দেখা দিয়েছে চরম গোখাদ্যের অভাব। কৃষকরা তাদের গরু, মহিষ, ছাগল চারণভূমিতে চড়াতে না পেরে রাস্তার ওপরে কৃত্রিম খাবারের ব্যবস্থা করতে দেখা গেছে।

পানিবন্দি ১০০ পরিবার, ৫০ একর অনাবাদি কৃষি জমি ও বৃহৎ ম্যানগ্রোভ বাগানকে ধ্বংসের হাত রক্ষা করতে হলে আলম নগর ক্রসড্যামের ভেঙে যাওয়া অংশে টেকসই পাইপলাইন অথবা কালভার্ট নির্মাণের দাবি জানান এলাকাবাসী।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ শামীম মিঞা জানান, আমি জলাবদ্ধ স্থান পরিদর্শন করেছি। ২/৩ দিনের মধ্যেই পাইপ লাইনের মাধ্যমে জলাবদ্ধ স্থানের পানি নিষ্কাসনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এবং খুব শীঘ্রই স্বাভাবিকভাবে পানি নিরসনের জন্য কালভার্ট নির্মাণ করা হবে।’

6 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন