১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

মনপুরায় বিআরডিবি’র কর্মকর্তাকে প্রাণনাশের হুমকি

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৪:৪৫ অপরাহ্ণ, ১২ জুলাই ২০২০

সীমান্ত হেলাল, মনপুরা:: ভোলার মনপুরায় সরকারি ঋণের কিস্তি আদায়ে বাঁধা প্রধান করছে সংঘবদ্ধ দালাল চক্র। বিআরডিবি থেকে ঋণ গ্রহীতারা কিস্তি দিতে রাজি থাকলেও তাতে বাঁধা প্রদান করছে চক্রটি। এছাড়া দালাল চক্রের মূল হোতা মোঃ হুমায়ন কবির সেলিম মালতিয়ার বিরুদ্ধে গ্রহীতাদের কাছ থেকে ঋণের কিস্তি উত্তোলন করে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।

এদিকে বিআরডিবি’র ইরেসপো প্রকল্পের ঋণের কিস্তি আদায় করতে গেলে পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা (সংযুক্ত) মোঃ মাহতাব উদ্দিন ভূঁইয়াকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়ার অভিযোগও উঠেছে খোদ দালাল চক্রের বিরুদ্ধে।

বৃহস্পতিবার (৯ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১ টায় উপজেলার দক্ষিন সাকুচিয়া ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের লতাখালী নামক স্থানে ঋণের কিস্তি আদায় করতে গেলে এই ঘটনা ঘটে।

এ ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা (দায়িত্বরত) এইচ. এম সুমনের বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন ঋণের কিস্তি আদায়কারী সংযুক্ত আরডিও মোঃ মাহতাব উদ্দিন ভূঁইয়া। একই সাথে প্রাণনাশের হুমকি প্রদানের অভিযোগ এনে মনপুরা থানায় সাধারন ডায়েরী করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তিনি।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা (সংযুক্ত) মোঃ মাহতাব উদ্দিন ভূঁইয়া, সহকারি পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা (ভাঃ দাঃ) মোঃ হাফিজুর রহমান ও বিআরডিবি ইরেসপো’র মাঠ সংগঠক মোঃ রবিউল ইসলাম সহ উপজেলার দক্ষিন সাকুচিয়া ইউনিয়নের লতাখালী নামক স্থানে ঋণের কিস্তি আদায়ের জন্য যায়। সেখানে তারা ঋণ গ্রহীতা কারিমার স্বামীর সাথে কথা বলছিলো। এ সময় দালাল চক্রের মূল হোতা মোঃ সেলিম মালতিয়া ও তার ভাই জুয়েল মালতিয়া ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বিআরডিবি’র অফিসারদেরকে অকথ্য ভাষায় গালি গালাজ করেন ও মারধর করতে উদ্ধ্যত হন এবং ঋণের কিস্তি আদায়ে বাঁধা প্রধান করেন।

পরবর্তীতে ঋণের কিস্তি আদায় করতে গেলে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি প্রদান করেন। এছাড়া তিনি ঋণের কিস্তির টাকা অফিসে জমা না দিয়ে তাকে দেয়ার কথা বলেন গ্রহীতাদেরকে। দালাল চক্রের মূল হোতা সেলিম মালতিয়ার হুমকির মুখে বিআরডিবি’র অফিসারগন স্থান ত্যাগ করে চলে আসেন।

অনুসন্ধানে জানা যায়, বিআরডিবি’র ইরেসপো প্রকল্পের অধীনে ৫ টি মহিলা সমিতির ৫৮ জন মহিলা সদস্যকে ৫ লক্ষ ৯০ হাজার ২ শত ৬৪ টাকা ঋণ দেয়া হয়। এদের মধ্যে অনেকেই ঋণের কিস্তি প্রদান করলেও তা উত্তোলন করে আত্মসাত করেন দালাল চক্রের মূল হোতা মোঃ সেলিম মালতিয়া। ঋণ খেলাপী হওয়ায় অনেক গ্রহীতাকে বিআরডিবি থেকে নোটিশ পাঠানো হয়েছে এবং ১৩ জন সদস্যের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে সার্টিফিকেট মামলা চলমান রয়েছে।

নোটিশের প্রেক্ষিতে কুলসুম বেগম, মোসাম্মৎ সুইটি বেগম, খায়রুন নেছা, জাহানারা বেগম, আছমা বেগম, সামছুন্নাহার, বিলকিস বেগম, মাফিয়া খাতুন, পিয়ারা বেগম, মমতাজ বেগম, কারিমা বেগমসহ অনেকেই ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে রাজি হয়েছেন। কিন্তু তাদের সবাইকে সেলিম মালতিয়া টাকা অফিসে জমা না দিয়ে তার কাছে জমা দেয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করে আসছেন।

এ ব্যাপারে জানতে অভিযুক্ত মোঃ হুমায়ুন কবির সেলিম মালতিয়ারের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার ফোনটি বন্ধ রয়েছে।

পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা (সংযুক্ত) মোঃ মাহতাব উদ্দিন ভূঁইয়া জানান, সংঘবদ্ধ দালাল চক্রের মূল হোতা মোঃ সেলিম মালতিয়া ও তার ভাই জুয়েল মালতিয়ার বিরুদ্ধে উর্ধ্বতন কর্মকর্তার বরাবরে লিখিত অভিযোগ করা হয়ে। সেই সাথে হেনস্তা ও প্রাণনাশের হুমকি প্রদানের ঘটনায় মনপুরা থানায় সাধারন ডায়েরি করার প্রস্ততি চলছে।

5 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন