২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার

মহিপুরে প্রতিবন্ধী পরিবারের জমি দখলের অভিযোগে মানববন্ধন

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৩:৩১ অপরাহ্ণ, ৩০ জুলাই ২০২০

বার্তা পরিবেশক কুয়াকাটা:: দৃষ্টি ও শারীরিক প্রতিবন্ধী পরিবারের বসত বাড়ির জমি জবর দখলের অভিযোগে মানববন্ধন করেছে প্রতিবন্ধী সংগঠনের সদস্যরা। পটুয়াখালী জেলার মহিপুর থানার লতাচাপলী ইউনিয়ন গোলাপ প্রতিবন্ধী উন্নয়ন সংস্থার ব্যানারে বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় শেখ রাসেল সেতুর উপর এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিভিন্ন শ্রেণির পেশার প্রায় দুই সস্রাধীক নারী পুরুষ অংশগ্রহণ করেন।

মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা অভিযোগ করেন, কুয়াকাটা খানাবাদ কলেজের প্রতিষ্ঠাতা আলহাজ্ব মোঃ জহিরুল ইসলাম খান কলেজের নাম ব্যবহার করে দৃষ্টি ও শারীরিক প্রতিবন্ধী ৩ সন্তানের জনক অসহায় আনোয়ার হাওলাদারের জমি জবরদখলসহ উৎখাতের পায়তারা চালাচ্ছে। প্রতিবন্ধী পরিবারটি জহিরুল ইসলাম খানের অন্যায় অত্যাচারে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।

বর্তমানে দৃষ্টি ও শারীরিক প্রতিবন্ধী ৩ মেয়েকে নিয়ে অতি কষ্টে জীবনযাপন করছে অসহায় আনোয়ার হাওলাদার। দৃষ্টি প্রতিবন্ধী এই পরিবার নিজের বসতবাড়ী রক্ষা করতে জনপ্রতিনিধিসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের কাছে এর প্রতিকার চেয়ে ঘুরলেও কোন সুফল পায় নি। অবশেষে এই অসহায় পরিবারটি বসতভিটা রক্ষার দাবীতে রাস্তায় এসে দাড়াতে বাধ্য হয়।

ভূক্তভোগি আনোয়ার হাওলাদার বলেন, তিনি ৬ সন্তানের জনক। ৬ সন্তানের মধ্যে সুরাইয়া ও সুমাইয়া দৃষ্টি প্রতিবন্ধী। আরেক মেয়ে মিনারা শারীরিক প্রতিবন্ধী। অপর তিন সন্তান মিরাজ, রিয়াজ ও শাহিন লেখাপড়া করে। তিনি ৬ সন্তানের লেখাপড়া ও ভরণ পোষণ নিয়ে হিমসিম খাচ্ছে। এমন অবস্থায় খানাবাদ কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও বিএনপি নেতা কলেজের প্রভাব খাটিয়ে তার ক্রয়কৃত ৬৩ শতাংশ জমির মধ্যে ৩০ শতাংশ জমি দখল করে নেয়। বাকি ৩৩ শতাংশ জমির মধ্যে বসতবাড়ি রয়েছে। এখন সেই বসতভিটাটুকু দখল করতে মরিয়া হয়ে ওঠেছে। বার বার হুমকী দেয়া হচ্ছে বসতভিটা থেকে উৎখাত করার। আনোয়ার আরো বলেন, বসত ভিটার জমি জহিরুল ইসলাম খান নিজেই তাকে ক্রয় করে দেন। এখন তিনিই আবার এই জমি তার দাবী করে উৎখাতসহ নানা ধরনের হুমকী দিয়ে আসছেন।

লতাচাপলী ইউনিয়ন গোলাপ প্রতিবন্ধী উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি প্রতিবন্ধী আঃ রহিম আকন বলেন, সরকার আমাদের প্রতিবন্ধীদের উন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে। প্রতিবন্ধীদের নানাভাবে সহযোগিতা করে যাচ্ছে। সেখানে বিএনপি নেতা জহিরুল ইসলাম কলেজের প্রভাব বিস্তার করে প্রতিবন্ধী পরিবারকে সহযোগিতা না করে উল্টো তাদের জমি ও বসতবাড়ী থেকে উৎখাত করার অপচেষ্টা করছেন। তাই প্রতিবন্ধীদের অধিকার রক্ষায় মানববন্ধন অংশগ্রহণ করেছি।

এ বিষয়ে খানাবাদ কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও বিএনপি নেতা জহিরুল ইসলাম খান বরিশালটাইমসকে জানান, আনোয়ার হাওলাদার এর কোন জমি তিনি দখল কিংবা দখলের চেষ্টা কখনও করেননি। প্রতিবন্ধী পরিবার হওয়ায় তার নিজের সম্পত্তি হওয়া সত্ত্বেও তাকে সহানুভূতি করে থাকতে দিয়েছেন।

জহিরুল ইসলাম আরো বলেন, লতাচাপলী মৌজার ৮১৫ খতিয়ানের জমি আগেই বিক্রি হয়ে গেছে। আনোয়ার পরে ওই জমি ক্রয় করে। সেখানে দলিলের মারপ্যাচে তার দলিল মার খেয়েছে। তিনি দাবী করেন আনোয়রের বসত ভিটার জমি তার। বিএস জরিপ তার নামে হয়েছে।

লতাচাপলী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আনছার উদ্দিন মোল্লা বলেন, জহিরুল ইসলাম খান কলেজের নাম ব্যবহার করে প্রতিবন্ধী পরিবারের জমি দখল চেষ্টা ও উৎখাতের পায়তারা চালাচ্ছেন। ওই প্রতিবন্ধী অসহায় পরিবার তার কাছে এসে এ বিষয় অভিযোগ করেছে। কিন্ত জহির খান প্রভাবশালী বিএনপির একজন নেতা হওয়ায় সে জবরদখল করে বিভিন্ন জনের জমি দখল ও ভোগদখল করছেন। তিনি (জহিরুল ইসলাম) তার কথা শুনছেন না। এমনকি প্রতিবন্ধী পরিবারের জমির অধিগ্রহণের টাকা আত্মসাৎ করার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তিনি ওই অসহায় প্রতিবন্ধী পরিবারকে আইনের আশ্রয় নেওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন।

1 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন