২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার

মাছ ব্যবসায়ী ক্লিনিক খুলে নিজেই করতো অপারেশন!

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৭:০৮ অপরাহ্ণ, ১০ জুলাই ২০২০

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল:: মোস্তফা কামাল (৪০) একজন পরিচিত মাছ ব্যবসায়ী। উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেছেন ব্যবসায়ী বিভাগে পড়ে। অথচ এই ব্যক্তি পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলা সদরে খুলে বসেছেন এক ক্লিনিক। এবং নিজেই করেন প্রসূতি নারীর সিজারিয়ান অস্ত্রোপাচার। বরিশাল র‌্যাব গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শহরের ‘দক্ষিণ বন্দর মাহিমা ক্লিনিকে হানা দিয়ে কথিত চিকিৎসক মোস্তফা কামাল ওরফে মাছ মোস্তফাকে আটক করে। এছাড়া উপজেলার ধানীসাফা বন্দরের হাজী আবদুর রাজ্জাক সার্জিক্যাল ক্লিনিকের এক ভুয়া চিকিৎসকের বিরুদ্ধে চিকিৎসার নামে দরিদ্র মানুষের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই অভিযোগে আমির হোসেন (৪৫) নামের ওই ভুয়া চিকিৎসককে আটক করে র‌্যাব।

পরে ওই দুই ভুয়া চিকিৎসককে ভ্রাম্যমাণ আদালতে হাজির করা হলে মহিমা ক্লিনিকের মালিক মোস্তফা কামালকে তিন মাস ও আমির হোসেনকে ৬ মাসের দণ্ড প্রদান করা হয়। র‌্যাব-৮ এর ওই অভিযানের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পিযুষ কুমার চৌধুরী এ দণ্ডাদেশ দেন। আজ শুক্রবার দণ্ডিতদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

সাজাপ্রাপ্ত হচ্ছে- মঠবাড়িয়া উপজেলার আমড়াগাছিয়া ইউনিয়নের সোনাখালী গ্রামের আমির হোসেনের ছেলে মোস্তফা কামাল ও নোয়াখালী জেলার শাহাজাদপুর উপজেলার আবুল খায়ের মিয়ার ছেলে।

স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, ভুয়া চিকিৎসক মোস্তফা কামাল মঠবাড়িয়া পৌরশহরের মাছের আড়তের ব্যবসা করে আসছেন। ২০০৯ সালে সে শহরের হাসপাতাল সড়কে মহিমা ক্লিনিক নামে একটি হাসপতাল চালু করেন। ওই হাসপাতালে নিজেই মালিক আবার নিজেই চিকিৎসক সেজে সিজারিয়ান অপারেশন করে আসছিলেন। ক্লিনিকের বৈধ অনুমোদন না থাকলেও তিনি প্রভাবশালী মদদে ক্লিনিক পরিচালনা করে আসছেন এলাকায় গুঞ্জন ওঠে। ইতিপূর্বে ক্লিনিকে কয়েক দফা প্রসূতি নারীর মৃত্যুসহ নানা দুর্ঘটনা ঘটে। এসব দুর্ঘটনা টাকার বিনিময়ে ম্যানেজ করে মোস্তফা নিজেই মালিক নিজেই চিকিৎক হয়ে রোগীদের ঝুঁকিতে ফেলে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।

অনুরুপভাবে উপজেলার ধানীসাফা বন্দরের হাজী আব্দুর রাজ্জাক সার্জিক্যাল ক্লিনিকের চিকিৎসকের কোন বৈধ কাগজ ও সনদপত্র না থাকায় সত্বেও ভুয়া ডাক্তার সেজে সিজারিয়ান অপারেশন করে আসছেন। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গোপনে অভিযোগ পেয়ে র‌্যাব-৮ এর একটি দল এ দুই ক্লিনিকে অভিযান চালায়। এসময় ওই দুই ক্লিনিক দিয়ে কথিত দুই ডাক্তারকে আটক করে র‌্যাব। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতে মাধ্যমে তাদের দণ্ডাদেশ প্রদান করে জেলহাজতে পাঠানো। সেই সাথে ক্লিনিক দুটি বন্ধ করে দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে মঠবাড়িয়া উপজেলা স্থাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আলী হাসান বরিশালটাইমসকে জানান, ক্লিনিকে ভুয়া ডাক্তার দিয়ে সিজারিয়ান অপরেশন করা দুঃখজনক ও ঝুঁকির ব্যাপার। এসব ক্লিনিক ও কথিত চিকিৎসকদের যথাযথ অনুমোদন আছে কিনা আমার জানা নেই।’

3 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন