২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

মুক্তিযোদ্ধা না হয়েও পাচ্ছেন ভাতাসহ সরকারি সব সুবিধা

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৬:০৯ অপরাহ্ণ, ০৬ ডিসেম্বর ২০১৯

বার্তা পরিবেশক, অনলাইন:: মুক্তিযোদ্ধা না হয়েও ভাতাসহ সব ধরনের সরকারি সুযোগ সুবিধা ভোগ করার অভিযোগ উঠেছে টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে মো.আলমগীর হোসেন হিরু নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে গত ১৪ নভেম্বর মুক্তিযোদ্ধাবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন তার বড় দুই ভাই আব্দুল বাছেদ মুন্সী (৭৮) ও বাবলু মিয়া ওরফে বাবু মিয়া (৭৫)

মন্ত্রীর কাছে লিখিত অভিযোগের অনুলিপি জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিল, সভাপতি/সম্পাদক টাঙ্গাইল প্রেসক্লাব, প্রেসক্লাব মির্জাপুর ও রিপোটার্স ইউনিটি মির্জাপুর বরাবর পাঠিয়েছেন।

বড় দুই ভাইয়ের দাবি, আলমগীর প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ কোনোভাবেই মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়নি। অথচ মিথ্যা তথ্য দিয়ে কৌশলে মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় নিজের নাম অন্তর্ভুক্ত করে সরকারি ভাতা নিচ্ছেন। এছাড়াও মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কোঠায় তার এক ছেলে পুলিশে ও মেয়েকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে চাকরি দিয়েছেন। অপর ছেলেকেও একইভাবে পুলিশে চাকরি দেয়ার চেষ্টা করছেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, মির্জাপুর পৌরসভার বাওয়ার কুমারজানী গ্রামের মৃত হাকিম উদ্দিনের চার ছেলের মধ্যে আলমগীর হোসেন হিরু সবার ছোট। তার বয়স যখন ৭ বছর তখন হাকিম উদ্দিন মারা যান। পরে বড় তিন ভাই তাকে লালন পালন করে বড় করেছেন। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় হিরুর বয়স ছিল ১০/১২ বছর।

এ বিষয়ে আলমগীর হোসেন হিরুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে বলেন, তিনি মির্জাপুর মুক্তিযোদ্ধা পৌর কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক কমান্ডার মোহাম্মদ আলীর সঙ্গে যুদ্ধ করেছেন। তবে বিষয়টি তার বড় ভাই ও গ্রামের লোকজন জানেন না। কোন বাহিনীতে যুদ্ধ করেছেন জানতে চাইলে তিনি কাদেরিয়া বাহিনীর নাম বলেন। তবে, কাদেরিয়ার পুরো নাম জানতে চাইলে তিনি বলতে পারেননি।

মির্জাপুর পৌর মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের সাবেক কমান্ডার মোহাম্মদ আলী বলেছেন, আলমগীর হোসেন হিরু নামে কোনো মুক্তিযোদ্ধাকে তিনি চেনেন না।

অপরদিকে মির্জাপুর উপজেলা কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক কমান্ডার সরকার হিতেষ চন্দ্র পুলক বলেন, আলমগীর হোসেন হিরু নামে কোনো ব্যক্তির নাম লাল মুক্তি বার্তায় নেই।

একই গ্রামের বাসিন্দা ও মির্জাপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক কমান্ডার অধ্যাপক দুর্লভ বিশ্বাস বলেন, আলমগীর হোসেন হিরু যে একজন মুক্তিযোদ্ধা ২০১০ সালের জুনে মির্জাপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিল নির্বাচনের ভোটার তালিকা দেখে আমি তা প্রথম জানতে পারি।

ইউএনও মো. আবদুল মালেক বলেন, যেহেতু পরিবার থেকে মন্ত্রী বরাবর অভিযোগ হয়েছে তাই মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আব্দুল বাছেদ মুন্সী ও বাবলু মিয়া ওরফে বাবু মিয়া বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। কেউ মিথ্যা তথ্য দিয়ে তাদের বিতর্কিত করবে নিজেদের বিবেক তা মেনে নিতে পারেনি বলে মন্ত্রী বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছি। বিতর্কিত মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে প্রতিটি বাড়ি থেকেই এভাবে প্রতিবাদ করা উচিত। তারা অভিযোগে তদন্ত সাপেক্ষে আলমগীর হোসেন হিরুর মুক্তিযোদ্ধা সনদ/গেজেট স্থগিত করে সম্মানী ভাতা, সন্তানদের চাকরি থেকে বহিষ্কারসহ সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা বাতিলের দাবি জানান।

0 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন