২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

মুসলিমদের কাঁধে দোষ চাপানোয় ভারতের ওপর ক্ষুব্ধ যুক্তরাষ্ট্র

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৮:১২ অপরাহ্ণ, ০৩ এপ্রিল ২০২০

বার্তা পরিবেশক, অনলাইন :: নয়াদিল্লির নিজামুদ্দিন মসজিদে তাবলিগ জামায়াতের এক অনুষ্ঠান থেকে বেরোনো কয়েকজনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর বিষয়টিকে ঘিরে সংখ্যালঘুদের ওপর দোষ চাপাতে ভারত সরকার যেভাবে উঠে-পড়ে লেগেছে, তাতে বেজায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ধর্মীয় স্বাধীনতা বিষয়ক অ্যাম্বাসেডর অ্যাট লার্জ স্যাম ব্রাউনব্যাক। তিনি ‘দোষারোপের খেলা বন্ধ করে’ করোনা ঠেকাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন নয়াদিল্লির প্রতি।

গত বৃহস্পতিবার (২ এপ্রিল) ব্রাউনব্যাক বলেন, ‘ভারতে কয়েকদিনে করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ার জন্য কোনো একটি নির্দিষ্ট সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষকে সরকারের দায়ী করা উচিৎ নয়। আমরা জানি এই ভাইরাসের প্রকৃত উৎসস্থল ঠিক কোথায়? আমরা জানি এই ভাইরাস মহামারি। গোটা পৃথিবী এখন করোনাভাইরাসে স্তব্ধ। সেখানে কেবল একটি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর দোষ চাপিয়ে যে খেলা চলছে তা বন্ধ হওয়া প্রয়োজন। সরকারের প্রয়োজন এই নোংরা খেলার বিরুদ্ধে একটা কড়া পদক্ষেপ নেয়া।’
গত ১ এপ্রিল ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জানায়, লকডাউন ঘোষণার আগে নিজামুদ্দিন মসজিদে ১৩ থেকে ১৫ মার্চ অনুষ্ঠিত তাবলিগের ওই অনুষ্ঠানে অংশ নেয়া অন্তত ১৩৪ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত করা হয়েছে। বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশের অনেক নাগরিক ও ভারতের বিভিন্ন প্রান্তের কয়েক হাজার মানুষ পাঁচটি ট্রেনে ভ্রমণ করে ওই তাবলিগে অংশ নেন।

এরপর থেকে ভারত সরকার নিজামুদ্দিন মসজিদের ওই জমায়েতকে করোনা সংক্রমণের ‘হটস্পট’ হিসেবে চিহ্নিত করে আসছে। যদিও ভারতে করোনা এসেছে জানুয়ারিতেই। কিন্তু উগ্র হিন্দুত্ববাদী মতাদর্শে বিশ্বাসী বিজেপি সরকার এজন্য ধর্মীয় প্রচারকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারি দেয়। তাদের এই দোষ চাপানোর কাণ্ডে উসকানি দেয় ভারতীয় কিছু সংবাদমাধ্যমও। কিছু সংবাদমাধ্যমে ফলাও করে বলা হয়, করোনাভাইরাসের এই পরিস্থিতিতে তারা জমায়েত হলেন কেন?

অথচ ১৬ মার্চ বিজেপির সম-আদর্শের একটি হিন্দু ধর্মীয় সংগঠন দিল্লিতেই গোমূত্র পার্টি করে, যেখানে কয়েকশ লোক অংশ নেন। ১৯ মার্চ পর্যন্ত খোলা ছিল তিরুপতি মন্দির। যেখানে প্রতিদিন অন্তত ৪০ হাজার দর্শনার্থী যান। এমনকি লকডাউন ঘোষণা হয়ে যাওয়ার পরেও খোলা ছিল কাশ্মীরের বৈষ্ণদেবী মন্দির, যেখানে শত শত পূণ্যার্থীর যাতায়াত ছিল, এবং সেখানে এখনো আটকা পড়েছেন ৫০০ পূণ্যার্থী। এসব জমায়েতের ব্যাপারে সরকারও উচ্চবাচ্চ্য করেনি, উসকানি দেয়া সেই সংবাদমাধ্যমগুলোও কিছু বলেনি। কিন্তু নিজামুদ্দিন মসজিদের জমায়েতের ওপরই করোনা সংক্রমণের সব দায় চাপাতে এখন সবাই উঠে-পড়ে লেগেছে। নাগরিক সমাজের অনেকে এটাকে ‘ইসলামফোবিয়া’র চূড়ান্ত রূপ বলেও আখ্যা দিচ্ছেন।

স্যাম ব্রাউনব্যাক ভারত সরকার ও তাদের অনুসারী সংবাদমাধ্যমের এমন অবস্থানে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, কোনো রকম দোষারোপের খেলায় না গিয়ে ভারতের উচিত পরিস্থিতি উত্তরণে সঠিক উপায় বের করা।

তিনি সব ধর্মাবলম্বীদের উদ্দেশে বলেন, সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে নিজেদের মত করে ধর্মীয় আচার পালন করুন এবং শান্তি বজায় রাখুন।

6 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন