২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার

মেডিকেল কলেজে পড়ার সুযোগ পেলেন রাখাইন কিশোরী

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৫:৪২ অপরাহ্ণ, ১১ এপ্রিল ২০২১

মেডিকেল কলেজে পড়ার সুযোগ পেলেন রাখাইন কিশোরী

নিজস্ব প্রতিবেদক, কলাপাড়া >> মেডিকেল (এমবিবিএস) কলেজে পড়ার সুযোগ পেয়েছেন পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় আদিবাসী রাখাইন মেধাবী ছাত্রী ম্যাচোখেন। তিনি উপজেলার ধুলাসার ইউনিয়নের অজপাড়া বৌলতলিপাড়া গ্রামে শৈশব ও কিশোর বয়সে সংগ্রাম করে বেড়ে উঠেছেন। পিইসি পাশের পর বরিশাল নগরীর ব্যাপ্টিস্ট মিশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে এসএসসি ও বরিশাল সরকারি মডেল স্কুল এন্ড কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করে। এবার মেডিকেলের ভর্তি যুদ্ধে ম্যাচোখেন জয়ী হয়। সদ্য ঘোষিত মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার ফলাফলে ম্যাচোখেন কিশোরগঞ্জ জেলার শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজে সুযোগ পেয়েছে।

অদম্য রাখাইন ছাত্রী ম্যাচোখেন বলেন, বাড়ি থেকে তিন কিলোমিটার দূরে বিল পেড়িয়ে খেচাওপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাথমিকের শিক্ষা নিতে যেতে হতো। বর্ষার ৬ মাস স্কুলেই যেতে পাড়তে না। তার বাবা রাখাইন কৃষক উচোথান, মা গৃহিনী খেওয়ান অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন । যখন স্কুলে যেতে পাড়তেন না তার প্রায়ত দাদাই থানচাচিং তালুকদার ঘরে বসে পড়াতেন। যে কারণে প্রাথমিক সমাপনীতে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়ে আত্মবিশ্বাস হয়ে ওঠে মেধাবী এই শিক্ষার্থী।

এরপর ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে বরিশাল নগরীর ব্যাপ্টিস্ট মিশন বালিকা বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। বাবা-মা ছেড়ে হোস্টেলে থেকে লেখাপড়া করতে হতো অনেক সংগ্রাম করে। এ বিদ্যালয় থেকে জেএসসি ও এসএসসিতে জিপিএ-৫ পায় ম্যাচোখেন। একইভাবে চলতি সালে মডেল স্কুল এন্ড কলেজ থেকে এইচএসসি জিপিএ-৫ পেয়ে পাশ করেন। স্কুল শিক্ষক এবং কলেজ শিক্ষকদের সহযোগিতা ও আন্তরিকতার কথা অকপটে স্বীকার করেন শিক্ষার্থী ম্যাচোখেন।

ম্যাচোখেন জানিয়েছেন, তার ইচ্ছে অনাগ্রসর রাখাইন জনগোষ্ঠীর চিকিৎসা সেবা দিবেন। কেননা রাখাইনরা বাংলায় ততোটা দক্ষ নন।

বাবা রাখাইন কৃষক উচোথান বলেন, মেয়ের আগ্রহ ও স্বপ্ন যাতে বিনষ্ট না হয় তাই তার মা অবসরে টেইলারিং’র কাজ করে এবং তিনি নিজে আগাম সবজি চাষ করে আয় বাড়াতেন। ছোট বেলা থেকেই লেখাপড়ায় অদম্য ছিল তার কন্যা।

এ বিষয়ে রাখাইন উন্নয়ন কর্মী প্রকৌশলী ম্যাথুজ বলেন. রাখাইন সম্প্রদায় থেকে ম্যাচোখেন দ্বিতীয়বারের মতো মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। এর আগে ১৯৭২ সালে তালতলী উপজেলার আগাঠাকুরপাড়া থেকে এক ছাত্রী মেডিকেলে চান্স পেয়ে ডাক্তার হয়েছিল। ম্যাথুজ আরও বলেন.ম্যাচোখেন আমাদের সম্প্রদায়ের সম্পদ। এ প্রজন্মের রাখাইন শিক্ষার্থীদের অনুপ্রেরণা যোগাবেন ম্যাচোখেন।’

3 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন