২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

ম্যাজিস্ট্রেটের বিয়ের খবর বেড়িয়ে আসল ৪ প্রেমিক, অভিযোগ গুরুতর

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৯:২৯ অপরাহ্ণ, ০৬ জুলাই ২০২০

বিশেষ বার্তা পরিবেশক:: ভোলা জেলার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নাদির হোসেন শামীমের বিয়ের খবরে বেড়িয়ে এসেছে তার চার প্রেমিক। সেই সাথে আরও বেড়িয়ে এসেছে কু-কীর্তির নানান খবর। পূর্বেও গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলায় একাধিক বিয়েসহ রয়েছে বহুমুখী অভিযোগ। রোববার এই ম্যাজিস্ট্রেটের বিয়ের খবরে বেকে বসেছেন প্রেমিকারা। তাদের মধ্যে একজন গ্রামের বাড়িতে অনশন শুরু করেন। এবং আরেকজন জেলা প্রশাসকের কাছে অপকর্মের ফিরিস্তি তুলে ধরে অভিযোগ করেছে। যা নিয়ে সরকারি কর্মকর্তার গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার ২ নম্বর গৌরীপুর ইউনিয়নের পশ্চিম শালীহর গ্রামে শুরু হয়েছে তোলপাড়।

সূত্রের খবর হচ্ছে- ৩৬তম বিসিএস উত্তীর্ণ হয়ে নাদির হোসেন শামীম ভোলা জেলায় সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট হিসাবে যোগ দেন। ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার ২ নম্বর গৌরীপুর ইউনিয়নের পশ্চিম শালীহর গ্রামের আব্দুল কদ্দুসের পুত্র শামীমের সাথে গত রোববার সাতক্ষীরার আরেক জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের বিয়ের সিদ্ধান্ত হয়। রাজধানীর ঢাকায় এ বিয়ে হওয়ার খবর শুনে স্বামীর স্বীকৃতির দাবিতে গত শনিবার সন্ধ্যায় এক নারী গৌরীপুর পৌর শহরের উত্তরবাজার মহল্লায় ম্যাজিস্ট্রেট নাদির হোসেন শামীমের বাবার ভাড়া বাসায় অবস্থান নেন। ওই নারী এ সময় তাকে স্ত্রী মর্যাদা দাবি করেন। ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ, জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক ও এলাকাবাসী ঘটনাস্থলে যান।

তবে তার পিতা আব্দুল কদ্দুস ছেলের সঙ্গে তাদের পারিবারিক সম্পর্ক নেই দাবি করেন। এবং এই নারীর সঙ্গে তাদের ছেলের কোনো সম্পর্ক আছে কি না তা তিনি জানেন না।

অন্যদিকে এই ম্যাজিস্ট্রেটের বিয়ের খবরে চট্টগ্রামের আরেক নারীও শামীমের স্ত্রী দাবি করেন। ওই নারী সাংবাদিকদের জানান, তার সঙ্গে হুজুর দিয়ে ধর্মীয় শরীয়া মোতাবেক বিয়ে করে আড়াই বছর ঘরসংসারও করেছেন। তিনি এ অভিযোগটি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও থানা প্রশাসকেও অবহিত করেছেন।

এদিকে রোববার সকালে গৌরীপুরের আরেক নারী নাদির হোসেন শামীমের বিরুদ্ধে ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক বরাবরে লিখিত অভিযোগ নিয়ে যান। কিন্তু জেলা প্রশাসক না থাকায় সেই অভিযোগ রিসিভ করেনি কেউ।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, চলতি বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি এক প্রেমিকা বিয়ের দাবিতে নাদির হোসেন শামীমের বাবার রেলওয়ে স্টেশন এলাকার ভাড়া বাসায় অবস্থান নেন। ওই নারী অযৌক্তিক দাবি নিয়ে পরিবারকে নির্যাতন-নিপীড়নের অভিযোগ এনে শামীমের বাবা উল্টো ওই নারীর বিরুদ্ধে গৌরীপুর থানায় সাধারণ ডায়রি করেন। এ নারীর বান্ধবী ঘটনার সাক্ষী দেওয়া এবং তার বান্ধবীকে বিয়ে করার জন্য শামীমের পরিবারের অনুরোধ জানান। এই অনুরোধের ঘটনাকে ‘ভয়ভীতি প্রদর্শন’ উল্লেখ শামীমের ভাই কবীর হোসেন সুজন ২৩ ফেব্রæয়ারি আরেকটি সাধারণ ডায়রি করেন।

গৌরীপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. এমদাদুল হক সাংবাদিকদের জানান, সাধারণ ডায়েরি করা হলেও তদন্ত কাজ তাদের অনুরোধে বন্ধ রাখা হয়।

গৌরীপুর থানার ওসি মো. বোরহান উদ্দিন সাংবাদিকদের জানান, গৌরীপুর উত্তর বাজার এলাকায় বিয়ের দাবিতে এক নারীর অবস্থান নিয়েছেন। খবর পেয়ে সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও ভোলার জেলা প্রশাসক স্যারকে অবহিত করা হয়েছে। জেলা প্রশাসকের বিচারের আশ্বাস ও মেয়েটিকে ঘটনা এলাকায় মামলা করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

রোববার আরেকটি মেয়ে লিখিত অভিযোগ নিয়ে আসে, তাকে জেলা প্রশাসক ময়মনসিংহ পাঠানো হয়েছে, জানান ওসি।

গৌরীপুর পৌরসভার মেয়র সৈয়দ রফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, ওই ম্যাজিস্ট্রেটের বাড়িতে এক নারী অবস্থান নিলে সেখানে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলরকে মাসুদ মিয়া রতন ও দিলুয়ারা আক্তারকে পাঠানো হয়। এখন জানা গেছে আরও ২টি মেয়ের সঙ্গে নাদির হোসেন শামীম সাহেব অনৈতিক সম্পর্ক। তারাও মৌখিক অভিযোগ করেছেন। এ ঘটনায় আমরা বিব্রত।

মহিলা কাউন্সিলার দিলুয়ারা আক্তার সাংবাদিকদের জানান, মেয়েদের ঘটনা শোনে আমি রীতিমত বিস্মিত!

তবে এ বিষয়ে জানতে ম্যাজিস্ট্রেট নাদির হোসেন শামীমকে ফোন দিলে দুটি নাম্বার বন্ধ পাওয়া যায়। তার ভাই এ প্রসঙ্গে সোমবার বিকেলে বলেন, অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে তারা মিথ্যা অপবাদ ছাড়াচ্ছে। এই নিয়ে এর আগে দুই নারীর বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়রি পর্যন্ত করা হয়েছে। ম্যাজিস্ট্রেট বিয়ের কথা সত্যতা স্বীকার করে বলেন, রোববার আমি ঢাকায় ওই বিয়েতে উপস্থিত থেকে বিয়ে সম্পন্ন করেছি। উনি (ম্যাজিস্ট্রেট) নববধূ নিয়ে নিজ কর্মস্থলে চলে গেছেন।’

1 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন