২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার

রং কালো-দাঁতে ফাঁক, তার সিনেমাই ১০০ কোটির ক্লাবে

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৩:২৭ অপরাহ্ণ, ০৬ জানুয়ারি ২০১৯

গায়ের রংটা কালো। সেই সঙ্গে দাঁতের মধ্যে ফাঁক। এই দুই কারণে পরিচালকদের কাছে অবহেলার পাত্র ছিলেন তিনি। তাকে কোনো কাজে নেয়া হতো না। সরাসরি মুখের ওপর না বলে দেয়া হতো। আজ সেই নিগৃহীত মানুষটির সিনেমাই ১০০ কোটির ক্লাবে। এই মানুষটি আর কেউ নন-অভিনেতা সিদ্ধার্থ যাদব। আর যেই ছবির কথা বলা হচ্ছে সেটি হলো সিম্বা।

সিম্বা’য় সিদ্ধার্থ যাদব রণবীর সিংহের ডান হাত। আর সেই সুবাদেই তিনি এখন শিরোনামে। তবে এই জায়গায় পৌঁছানোর জন্য কম কাঠখড় পোড়াতে হয়নি অভিনেতাকে। পদে পদে লাঞ্ছনার শিকার হতে হয়েছে।

মুম্বাইতেই সিদ্ধার্থ যাদবের জন্ম আর বেড়ে ওঠা। অভিনয়ে হাতেখড়ি হওয়ার আগে পুলিশ অফিসার হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন আজকের অভিনেতা। পুলিশ হলেন না ঠিকই। কিন্তু পুলিশ অফিসার সন্তোষ তাওড়ের ভূমিকায় অভিনয় করে শিরোনামে সিদ্ধার্থ।

১৬ বছর ধরে ইন্ডাস্ট্রিতে লাগাতার কাজ করে যাচ্ছেন সিদ্ধার্থ যাদব। বহু মারাঠি ছবিতে দেখা গেছে তাকে। রোহিত শেট্টিরও বেশ কিছু ছবিতে অভিনয় করেছেন সিদ্ধার্থ। তার মধ্যে ‘গোলমাল’, ‘গোলমাল রিটার্নস’ এই ছবি দুটিতে সিদ্ধার্থের অভিনয় অনেকেরই মনে আছে। টেলিভিশনের বেশ কিছু সিরিয়াল এবং কিছু কমেডি শো’তেও অভিনয় করেছেন সিদ্ধার্থ।

সিদ্ধার্থ যাদবের স্ত্রীর নাম ত্রুপ্তি অক্কলয়ার। পেশায় ত্রুপ্তি একজন সাংবাদিক। স্বরা এবং ইরা নামের দুই মেয়ে রয়েছে তাদের। একটি নাটকের মঞ্চে ত্রুপ্তির সঙ্গে প্রথমবার দেখা হয় সিদ্ধার্থের। আর প্রথমবার দেখামাত্রই ত্রুপ্তির প্রেমে পড়ে যান অভিনেতা। তার কিছু দিনের মধ্যেই একটি রেলস্টেশনে ত্রুপ্তিকে প্রোপোজ করেন সিদ্ধার্থ। পাঁচ বছর পর সিদ্ধার্থকে হ্যাঁ করেন ত্রুপ্তি।

অভিনেতার বাবা মুম্বাই মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের প্রাক্তন অফিসার। তার ভাই একজন চিকিৎসক এবং বোন সমাজকর্মী। অভিনয় জীবনের শুরুর দিকে তাকে অনেক পরিচালকের কাছ থেকেই নানা কথা শুনতে হয়েছে। সম্প্রতি এক সংবাদমাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে সিদ্ধার্থ দাবি করেছেন, তার গায়ের রং কালো, দাঁতের মাঝে ফাঁক-এই সব বলে অনেক পরিচালকই মুখের ওপর তাকে না করে দিতেন।

সিদ্ধার্থের কথায়, ‘১৯৯৯ সালে হিন্দি সিরিয়ালের জন্য প্রথমবার অডিশন দিই। আমার সঙ্গে স্পটবয়ের মতো ব্যবহার করে সেখানে হাসিঠাট্টা করছিলেন পরিচালক। শুধু তা-ই নয়, আমাকে পানি দিতে বলা হয়েছিল সেখানে। প্রথমে ভেবেছিলাম, পানি দেয়াটা হয়তো অডিশনের অঙ্গ। কিন্তু সবাই হাসিঠাট্টা করায় বুঝতে পারলাম যে, আমাকে নিয়ে মজা করা হচ্ছে। সেদিন খুব কষ্ট পেয়েছিলাম।’

শুধু ইন্ডাস্ট্রি নয়। অভিনেতার প্রতিবেশীরাও তার গায়ের রং থেকে চেহারা ইত্যাদি নিয়ে ঠাট্টা করতেন। তবে সিদ্ধার্থের কথায়, ‘আমার ভাই মনে সাহস জোগাতেন। বলতেন, তোর মধ্যে এমন অনেক গুণই আছে, যেগুলোর জন্য আমরা গর্বিত।’

কলেজে ভর্তি হয়েই সিদ্ধার্থের মনে অভিনয়ের ইচ্ছা জাগে। আর তখনই থিয়েটারে নাম লেখান সিদ্ধার্থ। বেশ কিছু মারাঠি নাটকেও অভিনয় করেন। কলেজের দ্বিতীয় বর্ষে একটি মারাঠি কমেডি শো করার জন্য ডাক পান অভিনেতা।

4 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন