২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার

রবি ও এয়ারটেল সীমে অটো ”নগদ” একাউন্ট সার্ভিস চালু!

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১০:২৮ অপরাহ্ণ, ১৫ মে ২০২০

বার্তা পরিবেশক, অনলাইন:: বাংলাদেশে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই স্ট্যাটাস দিয়ে দাবি করছেন যে মোবাইল অপারেটর রবি ও ও এয়ারটেলের সিম যারা ব্যবহার করছেন তাদের নাম্বারে ”নগদ” অ্যাকাউন্ট চালু হয়েছে স্বয়ংক্রিয়ভাবে। নগদ বাংলাদেশের ডাক বিভাগের একটি মোবাইল ব্যাংকিং পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান, তবে এর ব্যবস্থাপনা ও মার্কেটিং পরিচালনা করছে বেসরকারি একটি কোম্পানি। এটিকে সরকারি অর্থাৎ ডাক বিভাগের বলা হলেও নগদের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিজে ডাক বিভাগ বা সরকারি কোনো কর্মকর্তা নন।

প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভির আহমেদ মিশুক বলছেন নগদ সরকারি প্রতিষ্ঠান এবং এটি ডাক বিভাগের একটি ব্র্যান্ড। তবে একটি চুক্তির আওতায় বেসরকারি একটি কোম্পানি ডাক বিভাগের ‘নগদ’ কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

সাধারণ মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রমের জন্য মোবাইল নাম্বারের বিপরীতে অ্যাকাউন্ট খুলতে হলে গ্রাহককে তার জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি বা ছবি তুলে দিতে হয় সংশ্লিষ্ট কোম্পানিকে।

আবার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির নির্দেশনা অনুযায়ী মোবাইল ফোনের সিম কেনার জন্য রেজিস্ট্রেশনের সময়ও এসব তথ্য গ্রাহককে দিতে হয়। ফলে রবি বা এয়ারটেলের গ্রাহকদের এসব তথ্যও সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী সিম নেয়ার সময় দিতে হয়েছে। রবি ও নগদে’র কর্মকর্তারা দাবি করছেন এখানে গ্রাহককে নগদে অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য দোকানে বা এজেন্টের কাছে যেন যেতে না হয় সেজন্য এই যৌথ উদ্যোগ নিয়েছেন তারা।

কিন্তু রবি বা এয়ারটেলের গ্রাহক নাম্বারে কি করে নগদের অ্যাকাউন্ট স্বয়ংক্রিয় ভাবে চালু হতে পারে ?
রবির চিফ কর্পোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অফিসার সাহেদ আলম বিবিসি বাংলাকে বলছেন তাদের গ্রাহকদের মধ্যে পর্যালোচনা করে তারা সুনির্দিষ্ট কিছু গ্রাহককে একটি এসএমএস পাঠিয়েছেন যে তারা রবি’র মোবাইল ব্যাংকিং পার্টনার নগদে অ্যাকাউন্ট খুলতে চান কি-না।

যেসব গ্রাহক হ্যাঁ সূচক উত্তর দিচ্ছেন তাদের আরেকটি লিংক দিয়ে পিন সেট করতে বলা হচ্ছে এবং পিন সেট করলেই অটোমেটিক তার নাম্বারটি নগদ অ্যাকাউন্ট নাম্বার হয়ে যাবে। রবি জানিয়েছে, “সম্প্রতি ডাক বিভাগের ডিজিটাল আর্থিক সেবা নগদের সেবা গ্রহণে আমাদের সম্মানিত গ্রাহকদের অনুরোধ জানানোর বিষয়ে একটি সমঝোতা চুক্তি হয়। দেশের প্রচলিত আইন-কানুন অনুসরণ করে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির অনুমোদন সাপেক্ষেই এ চুক্তি করা হয়েছে”।

সাহেদ আলম বলছেন গ্রাহকের অনুমতি পাওয়ার পর তারা নগদকে গ্রাহকের নাম্বার দিয়ে থাকেন এবং পরে নগদই প্রয়োজনীয় গ্রাহক তথ্যাদি নিশ্চিত করে থাকে। রবি ও নগদে’র কর্মকর্তাদের তথ্য অনুযায়ী রবি’র গ্রাহক নির্দিষ্ট নাম্বারে অনুমতিসূচক ডায়াল করলে সেই নাম্বারের বিপরীতে রবি’র কাছে থাকা পরিচয়পত্রের নাম্বার নগদের কাছে প্রেরণ করে রবি। তবে তাদের দাবি রবির কাছে থাকা সব গ্রাহকের পরিচয়পত্র সহ অন্য তথ্যাদি রবি নগদকে দেয়নি।

“শুধু মাত্র যেই গ্রাহক আগ্রহী হয়ে অনুমতি দিচ্ছে তার পরিচয়পত্র নাম্বারই পাচ্ছি আমরা, যা আমরা নির্বাচন কমিশনের সার্ভার থেকে সরকারি নিয়মানুযায়ী ভেরিফাই করে নিচ্ছি। তাই এ নিয়ে উদ্বেগের কিছু নেই,” বলছিলেন নগদের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।

কিন্তু রবি কি করে জাতীয় পরিচয়পত্র নাম্বার নগদকে দিচ্ছে?
রবির চিফ কর্পোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অফিসার সাহেদ আলম বলছেন, “আমি নগদ’কে গ্রাহকের নাম, ঠিকানা, জাতীয় পরিচয়পত্র কিছু দিচ্ছি না। যেসব গ্রাহক অনুমতি দিচ্ছেন তাদের মোবাইল নাম্বার দেয়া হচ্ছে, বাকী কাজ নগদ করছে গ্রাহকদের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে ও তা পরে তারা ভেরিফাই করে নিচ্ছে”।

তিনি বলেন, “নগদে এমএফএস হিসাব খোলার অনুমতি চেয়ে রবির সম্মানিত গ্রাহকদের আমরা একটি এসএমএস লিংক পাঠাচ্ছি। এ বিষয়ে অনুমতি প্রদান করলে নগদের অ্যাপ ব্যবহার করে অথবা নির্দিষ্ট ইউএসএসডি কোড ডায়াল করে গ্রাহক সহজেই নগদে অ্যাকাউন্ট খুলত পারবেন। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি’র এ বিষয়ে যথাযথ অনুমোদন রয়েছে এবং গ্রাহকের ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষার বিষয়ে রবি সর্বদাই বদ্ধপরিকর”।

আর নগদের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভির আহমদ মিশুক বলছেন তারা রবির কাছ থেকে গ্রাহক নাম্বার আর জাতীয় পরিচয়পত্র নাম্বার নিচ্ছেন। পরে সরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে নগদ সেটি নির্বাচন কমিশন কিংবা আরেকটি সরকারি পোর্টাল পরিচয় ডট কমের মাধ্যমে ভেরিফাই করে নিচ্ছেন। তিনি বলেন মোবাইল ব্যাংকিংয়ের জন্য অ্যাকাউন্ট খোলার ক্ষেত্রে গ্রাহককে নিজেকেই জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি দিতে হতো। “তবে রবির সহযোগিতায় এখন তার তা দিতে রবির আগ্রহী গ্রাহককে নিজে এসে দিতে হবে না। আমরাই সেটি নিজ উদ্যোগে যাচাই করে নিবো”। মিস্টার আহমেদ বলেন ইতোমধ্যেই প্রায় ত্রিশ হাজারের বেশি রবি গ্রাহক নগদে অ্যাকাউন্ট খুলতে সম্মতি দিয়েছেন যাদের অ্যাকাউন্ট খোলা সম্পন্ন হয়ে গেছে।

বিটিআরসি কী বলছে?
নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির সিনিয়র সহকারী মো: জাকির হোসেন খাঁন জানিয়েছেন মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট বা এমএফএস ওপেন করার সময় গ্রাহককে জাতীয় পরিচয়পত্র দেয়ার নিয়ম রয়েছে। এখানেও তাই হচ্ছে। গ্রাহক না চাইলে এটি হবে না।

15 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন