২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বুধবার

রাঙ্গাবালী বিএনপির সভাপতি-সম্পাদকসহ ৪৫ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৯:৫৮ পূর্বাহ্ণ, ১৩ ডিসেম্বর ২০১৮

পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলায় খালগোরা বাজারে মঙ্গলবার বিকেলে আওয়ামী লীগ-বিএনপির নির্বাচনী সভা চলাকালে দু’দলের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।

এঘটনাকে কেন্দ্র করে উপজেলা বিএনপির সভাপতি-সম্পাদকসহ ৪৫ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে একটি মামলা করা হয়েছে।

মঙ্গলবার রাতে রাঙ্গাবালী থানায় এ মামলা (মামলা নম্বর-৫) দায়ের করা হয়। এ মামলায় বিএনপি’র ২০জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

বিশেষ ক্ষমতা ও বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান এনামুল ইসলাম লিটু বাদী হয়ে মামলাটি করেন। এতে উপজেলা বিএনপির সভাপতি কবির হোসেন তালুকদার ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান ফরাজীসহ দলের ৪৫ জন নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়। এছাড়া অজ্ঞাতনামা হিসেবে দলের ৬০-৭০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

আটকরা হলেন, চরমোন্তাজ ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি আলী আহমেদ, উপজেলা ছাত্রদল সহ-সাধারণ সম্পাদক সোহানুর রহমান সোহাগ, চরমোন্তাজ ইউনিয়ন যুবদলের সহ-সভাপতি বাহাদুর মুন্সি, চরমোন্তাজ ইউনিয়ন যুবদল সদস্য রেজাউল মাতবর, হারুন মোল্লা ও হারুন হাওলাদারসহ ২০জন।

মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৭টায় উপজেলা আওয়ামী লীগের নির্বাচনী কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান এনামুল ইসলাম লিটু বলেন, আওয়ামী লীগ প্রার্থীর উঠান বৈঠকে অতর্কিতভাবে বিএনপির নেতাকর্মীরা হামলা চালায়। এতে আওয়ামী লীগের অসংখ্য নেতাকর্মী আহত হন।

এ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন, রাঙ্গাবালী সদর ইউপি চেয়ারম্যান সাইদুজ্জামান মামুন খান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নূরে আলম ফকু, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবিএম আব্দুল মন্নান ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ প্রমুখ।

এবিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা বিএনপির সভাপতি কবির হোসেন তালুকদার বলেন, পূর্ব নির্ধারিত ঘোষণা অনুযায়ী আমাদের সভার আয়োজন করা হয়। কিন্তু আওয়ামী লীগ একইসময় পাল্টা সভার আয়োজন করেন। পরে হঠাৎ আওয়ামী লীগের লোকজন আমাদের ওপর হামলা চালায়। এতে আমাদের ২০-৩০জন নেতাকর্মী আহত হয়। তাদেরকে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। আমরা থানায় মামলা করতে চাইলেও আমাদের মামলা নেয়নি পুলিশ।

আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মহিব্বুর রহমান মহিব কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না। ওইসময় কলাপাড়ায় দোয়া মাহফিল ছিল। সেখানে খুব ব্যস্ত ছিলাম। এ ব্যাপারে স্থানীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন।

বিএনপির মনোনীত প্রার্থী এবিএম মোশাররফ হোসেন বলেন, খালগোড়া বাজার এলাকায় জাহাগারিয়া শাহ সুফি মাদ্রাসা মাঠে আমাদের পূর্ব নির্ধারিত সভা ছিল। সভার জন্য আমরা আগেই উপজেলা প্রশাসন থেকে অনুমতি নিয়েছিলাম। কিন্তু আওয়ামী লীগের কর্মীরা আমাদের ওপর প্রতিহিংসা পরায়ন হয়ে হামলা করেছে। সুষ্ঠ নির্বাচনের জন্য আমরা শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানাই।

এ ব্যাপারে রাঙ্গাবালী থানার ওসি মিলন কৃষ্ণ মিত্র বলেন, নির্বাচনী সভায় হামলার ঘটনায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এনামুল ইসলাম লিটু বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় আমরা ইতোমধ্যে ২০জনকে গ্রেফতার করেছি। বাকি আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় উপজেলার খালগোড়া বাজারে বিএনপির প্রার্থী এবিএম মোশাররফ হোসেনের উপস্থিতিতে এক উঠান কৈঠকের আয়োজন করা হয়। একই সময় ওই বাজারের বালুর মাঠে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মহিব্বুর রহমান মহিবের সমর্থকরাও পথ সভার আয়োজন করে। একপর্যায় দুই পক্ষের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে উভয়পক্ষের অর্ধশত নেতাকর্মী আহত হয়েছে। এ ঘটনায় স্থানীয় ব্যবসায়ী ও লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

7 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন