১৭ই এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বুধবার

শিরোনাম

রাজাপুর পুলিশ ক্রসফায়ারের ভয় দেখায়, ওসির বিরুদ্ধে অভিযোগ

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৯:১৩ অপরাহ্ণ, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

ঝালকাঠির রাজাপুর থানার পরিদর্শক (ওসি অপারেশন) মুনীর উল গিয়াসের বিরুদ্ধে ৫ লাখ টাকা ঘুষ দিতে না পারায় কলেজছাত্রকে শারিরিক নির্যাতন ও মিথ্যা চুরির মামলায় জড়িয়ে হয়রাণি করার অভিযোগ উঠেছে। নির্যাতিত কলেজছাত্র মো. ইমরান হোসেন আদনান রোববার সকালে ঝালকাঠি স্পেশাল জজ আদালতে এ সংক্রান্ত একটি নালিশী অভিযোগটি দায়ের করেন।

নালিশীতে এছাড়াও রাজাপুর থানার উপ-পরির্দশক (এসআই) নজরুল ইসলাম, সহকারি উপ-পরিদর্শক (এএসআই) সঞ্চিবন বালা এবং ডা. মো. আবুল খায়ের মাহমুদ রাসেলকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

আদালতের বিচারক অভিযোগটি দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) দায়ের করার পরামর্শ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন- আইনজীবী খান শহিদুল ইসলাম।

অভিযোগে বলা হয়- রাজাপুর উপজেলার জগাইরহাট এলাকার প্রয়াত শাজাহান আলীর ছেলে স্থানীয় বড়ইয়া ডিগ্রি কলেজের বিএ দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মোহাম্মদ ইমরান হোসেন আদানান বিদেশে যাওয়ার জন্য চেষ্টা চালাচ্ছিলেন। এ কাজের জন্য থানায় পুলিশ ক্লিয়ারেন্স আনতে গেলে রাজাপুর থানা পুলিশ ১০ হাজার টাকা দাবি করে। ৫ হাজার টাকা দিলে গত বছরের (২০১৬ সালের) ৫ ডিসেম্বর ঝালকাঠি পুলিশ সুপার কার্যালয়ের বিশেষ শাখা থেকে আদনানের বিরুদ্ধে কোন মামলা বা অভিযোগ নেই উল্লেখ করে প্রত্যায়ণপত্র দেয়া হয়। কিন্তু গত বছরের (২০১৬ সালের) ৭ ডিসেম্বর রাতে ১১ টার দিকে রাজাপুরের বাসা থেকে দুই ভাই আদানান ও মুরাদকে থানায় ডেকে পাঠান ওসি মুনীর উল গীয়াস।

আদালত চত্ত্বরে এসে মো. ইমরান হোসেন আদনান অভিযোগ করে বলেন- এ সময় থানায় আটকে রেখে আমাকে বেধড়ক পেটায় পুলিশ। তখন ওসি আমাদের দুই ভাইকে বলেন ‘শালা তোর বাবা ৪০ বছর বিদেশ ছিল তোদের অনেক টাকা। তাই ৫ লাখ টাকা দিলে ওর (আদনানের) জীবন ভিক্ষা দেয়া যাবে অন্যথায় ক্রসফায়ারে দেয়া হবে বলে হুমকি দেন ওসি মুনীর উল গীয়াস।’’

এদিকে মারধরের এক পর্যায় আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। আদনানের ছোট ভাই মামলার ১নম্বর সাক্ষী কামরুল হাসান মুরাদ বলেন- পুলিশের নিযাতন সহ্য করতে না পেরে বাসায় গিয়ে তার মাকে সাথে নিয়ে থানায় আসে ওসির হাতে দুই লাখ টাকা দেয়ার পর ভাইয়ের ওপর মারধর থামায়।

অপরদিকে আটককালে আদনানের কাছ থেকে তার পূবালী ব্যাংক রাজাপুর শাখার (হিসাব নং ৭১৪০৪৫৫)  অনুকূলে একটি চেকের পাতায় টাকার অংক ফাঁকা রেখে জোরপূর্বক স্বাক্ষর করিয়ে নেয় ওসি। পরদিন ৮ ডিসেম্বর একটি চুরির মামলায় সন্দেহভাজন আসামি দেখিয়ে রাজাপুর থানা পুলিশ আদনানকে আদালতে সোপর্দ করেন। কামরুল হাসান মুরাদ আরও বলেন- আমার ভাইয়ের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ নেই উল্লেখ করে মাত্র দুদিন আগে পুলিশ প্রত্যায়ণপত্র দিল। কিন্তু ৫ লাখ টাকা ঘুষ দিতে না পারায় দুদিন পর তাকে চুরির মামরায় সন্দেহভাজন আসামি দেখিয়ে আদালতে পাঠায়।

নির্যাতিত কলেজছাত্র ইমরান হোসেন আদনান জানান- ২/১ দিনের মধ্যেই ওসি মুনীর উল গীয়াসের বিরুদ্ধে দুদকে অভিযোগ দায়ের করা হবে। প্রসঙ্গত, ক্রসফায়ারের হুমকি দিয়ে ৫ লাখ টাকা ঘুষ দাবী ও কলেজছাত্রকে থানায় আটকে নির্যাতন ও মিথ্যা চুরির মামলায় সন্দেহভাজন আসামি করার অভিযোগটি দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচার হলে সারা দেশব্যাপী সমালোচনার ঝড় ওঠে।

কলেজছাত্র আদনানকে থানায় আটকে নির্যাতনের অভিযোগে ওসিসহ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সোমবার আদালতে মামলা দায়ের করবেন বলেও সাংবাদিকদের জানান তিনি।

9 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন