২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার

রাতভর নির্যাতন শেষে ভোরে মাথা ন্যাড়া করল কোদাল দিয়ে

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১১:০০ অপরাহ্ণ, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২০

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল:: কক্সবাজারের উখিয়ায় গরু চুরির অপবাদে কোদাল দিয়ে মাথা ন্যাড়া করাসহ এক যুবককে অমানবিক নির্যাতন করেছে প্রভাবশালী মহল। শুক্রবার রাতে কক্সবাজারের উখিয়ার জালিয়াপালং ইউনিয়নের পশ্চিম সোনারপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নির্যাতনের শিকার সৈয়দ আহমদ ওই এলাকার জাকির হোসেনের ছেলে। তাকে রাতভর নির্যাতন শেষে শনিবার সকালে মাথা ন্যাড়া করে ছেড়ে দেওয়া হয়। নির্যাতনকারী স্থানীয় জালাল আহমদ এ সময় ছবি ও ভিডিও মোবাইলে ধারণ করে এবং তা পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়।
এই ঘটনায় অভিযুক্ত জালাল আহমদসহ ৪জনকে আসামি করে উখিয়া থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন নির্যাতনের শিকার সৈয়দ আহমদের বোন জোবাইদা বেগম।

পুলিশ অভিযোগের বরাত দিয়ে জানায়- স্থানীয় শামসুল আলমের ছেলে জালাল আহমদ বিনা অপরাধে সৈয়দ আহমদকে সোনারপাড়া বাজার থেকে ধরে নিয়ে গরু চুরির অপবাদে নির্যাতন করেন। রাতভর বাড়ির উঠানে গাছের সঙ্গে রশি দিয়ে বেঁধে গলায় জুতার মালা পরিয়ে কোদাল দিয়ে মাথা ন্যাড়া করে দেন। পরে কোদাল দিয়ে ন্যাড়া মাথায় আঘাত করেন। এ ঘটনায় সৈয়দ জ্ঞান হারিয়ে ফেললে স্থানীয় ইউপি সদস্য মোহাম্মদ রফিক ঘটনাস্থল থেকে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়।

সৈয়দের বোন জোবাইদা বেগম সাংবাদিকদের বলেন, নির্যাতনের শিকার আমার ভাই এখন গুরুতর অসুস্থ। সে উখিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে। তার নাক এবং মুখ দিয়ে প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছে। এ কারণে আমি সুষ্ঠু বিচার চেয়ে অভিযুক্ত জালাল আহমদসহ চারজনকে আসামি করে উখিয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জালাল আহমদ মানবপাচারসহ বহু মামলার আসামি। বর্তমানে নদীপথে মানবপাচার বন্ধ থাকায় নতুন করে ইয়াবা কারবারে জড়িয়ে পড়েন জালাল আহমদ। তার অপকর্মের খবর পুলিশকে বলে দিয়েছে সন্দেহে সৈয়দকে গরু চুরির অপবাদ দিয়ে নির্যাতন করেছেন।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মোহাম্মদ রফিক সাংবাদিকদের বলেন, নির্যাতনের শিকার সৈয়দ আহমদ স্থানীয় দোকানদার। তাকে জালাল আহমদ গরু চুরির অভিযোগে বাজার থেকে ধরে নিয়ে বেঁধে রাখেন। তাকে মারধরও করা হয়। যে গরুটি চুরির অভিযোগ তোলা হয় সেটি মালিকের বাড়িতেই ছিল। তবুও অপরাধী হলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কথা। কিন্তু মারধর করা ঠিক হয়নি। এভাবে নির্যাতন করা অমানবিক।

তবে নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করে জালাল আহমদ বলেন, এলাকায় যাতে আর কোনো সময় গরু চুরির ঘটনা না ঘটে, পুরো এলাকাবাসীকে শিক্ষা দিতে এমনটি করা হয়েছে।

জালিয়াপালং ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল আমিন চৌধুরী বলেন, নির্যাতিত ছেলেটি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। সে চুরির সঙ্গে জড়িত নয় বলে জেনেছি। যিনি নির্যাতন করেছেন তার সঙ্গে ওই যুবকের পরিবারের দ্বন্দ্ব ছিল। প্রতিশোধ নিতে এমন ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটানো হয়েছে।

উখিয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মঞ্জুর মোরশেদ সাংবাদিকদের বলেন, আমি কেবলমাত্র এই থানায় যোগদান করেছি। অভিযোগটি আমার কাছে এখনও আসেনি। অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

9 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন