২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বুধবার

রাবিতে করোনা শঙ্কায় শিক্ষার্থীদের ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৮:০২ অপরাহ্ণ, ১৫ মার্চ ২০২০

বার্তা পরিবেশক, অনলাইন :: সারা বিশ্বে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। ইতিমধ্যে বাংলাদেশেও পাঁচ জনের শরীরে শনাক্ত হয়েছে এই ভাইরাস। এরপর থেকেই গোটা দেশে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। তাই করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থীরা সোমবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন।
রোববার দুপুরে বিভাগের সেমিনার কক্ষে সকল বর্ষের শিক্ষার্থীদের সম্মতিক্রমে তারা এ ঘোষণা দেন।

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী আসিফ হাসান দিগন্ত বলেন, যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয় তাহলে তা খুব দ্রুতই ছড়িয়ে পড়বে। তখন বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করেও কোনো লাভ হবেনা। ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পরে যদি বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে, এ ভাইরাসও এসব শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাহলে কি বিশ্ববিদ্যালয় এই ভাইরাস মহামারি আকার ধারণ করা পর্যন্ত অপেক্ষা করছে?

বিভাগের সভাপতি সহযোগী অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, করোনাভাইরাসের প্রেক্ষাপটে এখনই উপযুক্ত সময়। সারা বিশ্বই যখন অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করছে তখন খারাপ কিছু হওয়ার আগেই সিদ্ধান্ত নেওয়া জরুরি। একবার করোনা ভাইরাসের বিস্তার শুরু হয়ে গেলে তা ঠেকানো খুব দুরূহ হয়ে যাবে।
শিক্ষার্থীদের ক্লাস পরীক্ষা বর্জন সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা নিজ উদ্যোগে ক্লাস পরীক্ষা বর্জন করেছে। তবে আমাদের বিভাগের অফিস বন্ধ থাকবে না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নির্দেশনা না পাওয়া পর্যন্ত বিভাগের সকল কর্যক্রম অব্যাহত থাকবে।

এই ভাইরাস বিস্তার বন্ধে অনেক দেশে শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় এই ভাইরাস প্রতিরোধে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের দাবি জানিয়ে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা। রোববার বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনের সামনে তারা এ দাবি জানান।
কর্মসূচিতে অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন বলেন, কারোনাভাইরাস সারা বিশ্বে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। এই ভাইরাস একজনের সংক্রমণ হলে তা অতিদ্রুত ছড়িয়ে পড়বে অন্যদের মাঝে। বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন দেশে থাকা শিক্ষকরা দেশে ফিরে আসছেন। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে আছে। তারা এক সাথে ক্লাস ও পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। বর্তমানে ভাইরাসটি বিশ্বব্যাপী দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। আমরা যদি আগে থেকেই সতর্ক না হই তাহলে এটি আমাদের দেশে মহামারী আকার ধারণ করতে পারে। এসময় তিনি করোনাভাইরাসের পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করার আগে ক্যাম্পাস বন্ধের দাবি জানান।
জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জনসমাগম এড়িয়ে চলার ঘোষণা দিয়েছেন। তবে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের একসাথে ক্লাসে উপস্থিতি, হলের ডাইনিংয়ে, ক্যান্টিনে, হোটেলে একসঙ্গে বসে খাবার খেতে হচ্ছে। তাছাড়া ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের সমাগম সর্বদা বিদ্যমান।

সমাজকর্ম বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আব্দুল মোমিন বলেন, সম্প্রতি করোনাভাইরাস প্রতিরোধে বিশ্ববিদ্যালয়ে জনসমাগম ঘটে এমন অনুষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়। কিন্তু আমরা এক সাথে ক্লাস করি, পরীক্ষায় অংশ্রগহণ করি এতে জনসমাগম ঘটে। এদের মধ্যে কারো এ ভাইরাসের সংক্রমণ থাকলে দ্রুত অন্যদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়বে। তাই এই মহামারী থেকে রক্ষায় বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করা হোক।

করোনাভাইরাস মোকাবিলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পদক্ষেপ সম্পর্কে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, করোনাভাইরাস মোকাবিলায় আমাদের সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে হবে। আতঙ্ক ছড়ানো যাবে না। আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। শিক্ষার্থীদের সচেতন হওয়ার জন্য প্রশাসন কাজ করছে। সর্বোপরি শিক্ষার্থীসহ সকলকে সচেতন ও সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণার সিদ্ধান্ত কর্তৃপক্ষ প্রয়োজন মনে করলে আলোচনা করে নেবে বলে জানান তিনি।

5 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন