১৮ই এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার

লিটমাস স্ট্রিপে ধরা পড়বে খাদ্যে ভেজাল

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৯:৪৩ অপরাহ্ণ, ১৫ নভেম্বর ২০১৮

বাংলাদেশের মতো দেশে খাদ্যে ভেজাল একটি বড় সমস্যা। এ থেকে মুক্তি পেতে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) গবেষকরা একধরনের লিটমাস স্ট্রিপ উদ্ভাবন করেছেন। যার মাধ্যমে একজন ক্রেতা নিজেই খাদ্যে ফরমালিন আছে কি না, তা পরীক্ষা করে নিতে পারবে।

এই উদ্ভাবনে বুয়েটের কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের গবেষকদের প্রায় তিন বছর সময় লেগেছে। বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মহিদুস সামাদ খান জানান, উচ্চতর ডিগ্রি নিয়ে তিনি দেশে ফেরার পর খাদ্যে ভেজালের ব্যাপকতা অনুধাবন করেন। এ সময় বাইরে অর্জিত গবেষণার অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে একটি কিট উদ্ভাবনের চিন্তা আসে তাঁর মাথায়, যাতে সাধারণ মানুষ সহজেই খাদ্যে ভেজাল শনাক্ত করতে পারে।

গবেষকরা বলছেন, যে খাবারে ফরমালিনের উপস্থিতি যত বেশি থাকবে, উদ্ভাবিত লিটমাস পেপারটি তত বেশি গাঢ় বেগুনি

রং ধারণ করবে। এতে সহজেই খাদ্যে বিষের আধিক্য জানা যাবে।

গবেষক সাকিব ফেরদৌস বলেন, ‘আমাদের উদ্দেশ্য ছিল এ রকম একটি কেমিক্যাল খুঁজে বের করা, যেটি ফরমালিনের সঙ্গে বিক্রিয়া করবে এবং বিক্রিয়ার ফলে এমন একটি রং দেবে, যেটি সহজেই চোখে ধরা পড়ে।’

ড. মহিদুস সামাদ খানের তত্ত্বাবধানে সম্পন্ন হয়েছে এ গবেষণা। ইতিমধ্যে ৫৫টি খাবারে এর সফল প্রয়োগ হয়েছে। বিভাগের প্রভাষক মো. নাজীবুল ইসলাম বলেন, ‘এ গবেষণায় আমাদের জন্য দুটি চ্যালেঞ্জ ছিল। এক হচ্ছে খুব ইজি হতে হবে, অন্যটি হচ্ছে খুব সাশ্রয়ী হতে হবে। এ জন্য লিটমাস পেপারকে বেছে নেওয়া হয়েছে। আমরা হিসাব করে দেখেছি, এটা এমন সাশ্রয়ী হবে, যাতে আমাদের দেশের মানুষ প্রতিদিনই ব্যবহার করতে পারবে।’

অসামান্য এই উদ্ভাবনটির উৎপাদন ব্যয় কমিয়ে এনেছেন গবেষকরা। দেশীয় ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান রেনেটা সাধারণ মানুষের হাতে লিটমাস স্ট্রিপ পৌঁছে দিতে এরই মধ্যে উৎপাদন কার্যক্রম শুরু করেছে।

রেনেটার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এম রীনাত রিজভী বলেন, ‘বুয়েটের এ রকম উদ্ভাবনে আমরা আগ্রহী হই। এ রকম একটি প্রকল্পে সম্পৃক্ত করতে পেরে আমরা নিজেদের সৌভাগ্যবান মনে করছি। আশা করছি, খুব কম সময়ের মধ্যে এটি সাধারণ মানুষের হাতে পৌঁছতে পারব।’

গবেষণা প্রধান ড. মহিদুস সামাদ বলেন, ‘একসময় আমরা যখন ফরমালডিহাইডকে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করতে পারব, তখন এই স্ট্রিপের প্রয়োজনীয়তা ফুরিয়ে আসবে। একজন উদ্ভাবক হিসেবে আমি সেই দিনের অপেক্ষায় আছি, যেদিন ওই স্ট্রিপ আর বাংলাদেশে ব্যবহার করতে হবে না।’

7 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন