২৮শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার

শরীরের থেকে মাথার ওজন দ্বিগুণ ছোট্ট শিশু আরিফার!

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৩:২৬ অপরাহ্ণ, ০৬ মার্চ ২০২১

উত্তম কুমার হাওলাদার, কলাপাড়া:: ছোট্ট শিশু আরিফা। বয়স মাত্র ৩ বছর। পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার লতচাপলী ইউনিয়নের তাজেপাড়া গ্রামের দরিদ্র ভ্যান চালক কাওছার মুসুল্লীর এক মাত্র মেয়ে। জন্মের পরই তার বাবা মায়ের স্বপ্ন ছিল আকাশ ছোঁয়া। কিন্তু ছোট্ট এই মেয়েটি শরীরের থেকে মাথার ওজন দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর মাথার ভার সইতে না পেরে এ শিশুটি প্রতিনিয়তই যন্ত্রনায় কাতর। ২৪ ঘন্টাই বিছানায় শুয়ে রাখতে হয় তাকে। শিশুটিকে সুস্থ করে তুলতে সর্বশান্ত হয়ে পড়েছে শিশু আরিফার পিতা। তারপরও অবস্থার কোন পরিবর্তন হয়নি। একমাত্র কন্যা শিশুর সুচিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ করে তুলতে মা-বাবা ব্যাকুল। তাদের পক্ষে মেয়ের ব্যায় বহুল এই চিকিৎসা তো দূরের কথা পরিবারে ঠিকমত দুবেলা খাবার জোটেনা। তাই সমাজের বিত্তবানদের প্রতি সাহায্যের আবেদন হতদরিদ্র অসহায় এই দম্পতির।

জানা গেছে, আরিফার জন্মের তিনমাস অতিবাহিত হওয়ার পরই শরীরের তুলনায় মাথা বড় হতে থাকে। হতদরিদ্র ভ্যান চালক পিতা কাওছার মুসুল্লী সন্তানকে সুস্থ করে তুলতে ডাক্তার কবিরাজ থেকে শুরু করে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকৎসা করিয়েছেন। কিন্তু আরিফার মাথা স্বাভাবিক হচ্ছে না। ক্রমশই মাথা বড় হতে থাকে। বর্তমানে শিশুটির মাথার ওজন প্রায় ১০ কেজি। এ অবস্থা দেখে ব্যথিত প্রতিবেশীরাও।

আরিফার মা ডালিয়া বেগম বলেন, সংসারে এক ছেলে থাকার পর ২০১৮ সালে ১০ এপ্রিল জন্ম হয় আরিফার। বেশ কিছুদিন ভালই ছিল। এর পর আস্তে আস্তে মাথা বড় হতে থাকে। সন্তানের কথা চিন্তা করে আরিফার বাবা নিজ বসতভিটাটুকুও বিক্রি করে বরিশালসহ ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকৎসাও করিয়েছেন। তারপরও অবস্থার পরিবর্তন হয়নি। দিন যতই যাচ্ছে ততই মাথার ওজন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

আরিফার বাবা কাওছার মুসুল্লী বলেন, চিকিৎসায় যে পরিমান টাকার প্রয়োজন তা জোগার করার আর কোন উপায় নেই। ছিল নিজ বসতভিটা মেয়ের চিকিৎসার করাতে গিয়ে ধার দেনা হয়ে তাও বিক্রি করে দিয়েছি। এখন অন্যের বাড়িতে থাকতে হচ্ছে।

মুসুল্লিয়াবাদ সরকারি প্রাথমি বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো.ইউনুস বলেন, এখন শিশু আরিফার চিকিৎসা তো দূরের কথা অর্থাভাবে পরিবারে ঠিকমত দুবেলা খাবার জোটেনা। একমাত্র কন্যার চিকিৎসায় সর্বস্ব হারিয়ে ভিখারী পিতা-মাতা। তাই এই শিশুটির চিকিৎসায় সরকারের পাশাপাশি এগিয়ে আসবে সমাজের বিত্তবানরা এমন প্রত্যাশা করেছেন এই শিক্ষক।

কলাপাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাক্তার জুনায়েদ খান লেলিন বলেন- শিশুটি হাইড্রোসেফালাস রোগে আক্রান্ত। রোগটি জটিল। অপারেশন করে তাকে সুস্থ করে তোলা সম্ভব বলে তিনি জানিয়েছেন।

1 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন