২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার

শুধু রমজানে কেন ভেজালবিরোধী অভিযান : হাইকোর্ট

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১২:০৬ পূর্বাহ্ণ, ১৩ মে ২০১৯

শুধু রমজান মাস আসলেই কেন ভেজালবিরোধী অভিযান সেই প্রশ্ন তুলেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে সারা বছর এসব অভিযান পরিচালনা করা উচিত বলেও মন্তব্য করেন আদালত।

হাইকোর্টের বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রোববার এ মন্তব্য করেন।

এ সময় বিএসটিআই পরীক্ষায় মানহীন ৫২টি পণ্য অবিলম্বে বাজার থেকে প্রত্যাহারের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে এসব খাদ্যপণ্য বিক্রি ও সরবরাহে জড়িতদের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ারও নির্দেশ দেয়া হয়।

নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের প্রতি এ নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এসব নির্দেশ বাস্তবায়ন করে আগামী ১০ দিনের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতেও বলা হয়েছে।

আদালত আদেশে বলেন, শুধু রমজান মাসে ভেজালবিরোধী অভিযান কাম্য নয়, সারা বছর এ অভিযান চলা উচিত। খাদ্য নিরাপদকরণের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা যেন শুধু কর্মকর্তা হিসেবে কাজ না করেন, তারা যেন দেশপ্রেমিক হিসেবে জনগণের প্রতি ভালোবাসা দেখিয়ে দায়িত্ব পালন করেন। একটি সমন্বিত উদ্যোগ (খাদ্যের মান নিয়ন্ত্রণ, তদারকি প্রতিষ্ঠানগুলোর) ছাড়া আসলে সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। বাংলাদেশ সরকার, ক্ষমতাসীন দল ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রত্যাশা মাদকের বিরুদ্ধে যেমন যুদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে, তেমনি খাদ্যে ভেজালের বিরুদ্ধে যেন যুদ্ধ ঘোষণা করা হয়। এ জন্য প্রয়োজনে জরুরি অবস্থা ঘোষণারও অনুরোধ জানান হাইকোর্ট।

আদালত আরও বলেন, যদিও এ বিষয়গুলো দেখার দায়িত্ব নির্বাহী বিভাগের। আদালতের এগুলো দেখার বিষয় না। তারপরও জনস্বার্থ বিবেচনায় এ বিষয়গুলো আদালত এড়িয়ে যেতে পারে না। খাদ্য নিরাপত্তার ব্যাপারে আপস করার কোনো সুযোগ নেই। তাছাড়া এ সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য প্রত্যেকটা নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের সমন্বিত অংশগ্রহণ করা দরকার।

আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার শিহাব উদ্দিন খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোখলেছুর রহমান। নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার মুহম্মদ ফরিদুল ইসলাম।

৫২টি পণ্য বাজার থেকে প্রত্যাহার বা জব্দ চেয়ে কনসাস কনজ্যুমার সোসাইটির (সিসিএস) পক্ষে ব্যারিস্টার শিহাব উদ্দিন খান জনস্বার্থে (৯ মে) বৃহস্পতিবার এ রিট দায়ের করেন। ওই রিটের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ও বিএসটিআইয়ের দুই কর্মকর্তার বক্তব্য জানতে রোববার আদালতে হাজির হতে বলেন। সে অনুযায়ী বিএসটিআইয়ের উপ-পরিচালক মো. রিয়াজুল হক ও নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের পরিচালক সহদেব চন্দ্র সাহা নির্ধারিত দিনে হাজির হন।

শুনানিতে আদালত বলেন, দুধের কী অবস্থা দেখুন। দুধে পানি মেশানো হচ্ছে। টেলিভিশনে দেখলাম, ইটের গুঁড়ো দিয়ে মসলা বানাচ্ছে, ভূসি দিয়ে মসলা বানানো হচ্ছে। অথচ নামীদামি কোম্পানির বিজ্ঞাপনে দেখি তাদের মসলা সবচেয়ে ভালো। এ খাদ্যে ভেজালের কারণে গত ১০ বছরে দেশে ক্যান্সার রোগীর সংখ্যা উদ্বেগজনক হারে বেড়ে গেছে।

আদালত আরও বলেন, সুস্থভাবে বাঁচতে হলে প্রয়োজনে হলুদ ছাড়াই তরকারি রান্না করে খেতে হবে। প্রয়োজনে সিদ্ধ ডিম খাব। আদালত ডিম নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করে বলেন, এখনতো প্লাস্টিকের ডিম পাওয়া যায়।

এ সময় রিটকারী আইনজীবী ব্যারিস্টার শিহাব উদ্দিন খান বলেন, কোম্পানিগুলো এমনভাবে বিজ্ঞাপনের প্রচারণা চালায় যে, যিনি মসলা খান না তিনিও ওই মসলা কিনতে প্রলুব্ধ হন। আদালত বলেন, এসব অভিযান নিয়েও ব্যবসায়ীদের অভিযোগ শোনা যায়। তাদের অভিযোগ, তাদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের চাঁদা চাওয়া হয়।

এ সময় বিএসটিআইয়ের ডেপুটি পরিচালক মো. রিয়াজুল আদালতকে বলেন, শুধুই রমজান মাসে নয়, সারাবছরই বিএসটিআই অভিযান পরিচালনা করে। তিনি বলেন, বিএসটিআই আগে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার ক্ষমতা ছিল। কিন্তু এখন নেই। বিএসটিআই মোবাইল কোর্ট পরিচালনার ক্ষমতা পেলে আরও বেশি অভিযান পরিচালনা করতে পারবে।

তখন আদালত বলেন, আইনে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরকে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার ক্ষমতা দেয়া আছে। কিন্তু তারাতো সেটা করে না। আপনারা ক্ষমতা পেলে আপনারা কী করবেন?

আদালত নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের মহাপরিচালকের আচরণে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমরা একজন কর্মকর্তাকে ডাকলাম। তিনি পাঠিয়েছেন এমন এক কর্মকর্তা যিনি এক সপ্তাহ আগে যোগদান করেছেন। ওই কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি কিছুই বলতে পারবেন না। কেন, তিন/চারমাস ধরে আছেন এমন কর্মকর্তাও কি নেই যাকে আদালতে পাঠানো যেত? মহাপরিচালকের এ আচরণ আদালতের সঙ্গে ফাজলামো ছাড়া আর কিছুই নয়। এখন যদি ডিজিকে ডাকি তাহলে তার সমালোচনা করা হবে।

আদালত বলেন, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালককে ওসির ক্ষমতা দেয়া আছে। একজন মহাপরিচালক চাইলে অনেক কিছু করতে পারেন। অথচ ক্ষমতাবানরা এসির মধ্যে নিশ্চুপ বসে থাকেন। ইচ্ছা নেই কিছু করার। অথবা হয়তো বিভিন্ন জায়গা থেকে চাপ আসে। আদালত শ্রমজীবী ও সাধারণ মানুষের জন্য নিরাপদ খাবার পানি সরবরাহ করতে ঢাকা ওয়াসার প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, পাইপ লাইনের মাধ্যমে নিরাপদ খাবার পানি সরবরাহ করতে হবে।

শুনানি শেষে আদালত রুলসহ আদেশ দেন। বিএসটিআই ল্যাব পরীক্ষায় ধরা পড়া ৫২টি নিম্নমানের খাদ্যপণ্য দেশের বাজার থেকে প্রত্যাহার বা জব্দ করতে এবং বিএসটিআইয়ের নির্ধারিত মান লঙ্ঘন করে নিম্নমানের ৫২টি খাদ্যপণ্য প্রক্রিয়াজাতকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে বিবাদীদের ব্যর্থতা কেন বেআইনি ও আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না-জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত।

খাদ্য, বাণিজ্য, শিল্প সচিব, বিএসটিআইর মহাপরিচালক (ডিজি), বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালককে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোখলেছুর সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালককে নির্দেশ দেয়া হয়েছে যে, নিম্নমানের ৫২টি পণ্য বাজারে থাকলে তা বাজার থেকে তুলে নিয়ে সেগুলো ধ্বংস করতে। এসব কোম্পানির পণ্য বিএসটিআইর মানোন্নয়ন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না হওয়া পর্যন্ত উৎপাদন বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।

রিট আবেদনকারী শিহাব উদ্দিন বলেন, বিএসটিআইর মান পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ ৫২টি নিম্নমানের খাদ্যপণ্য বাজার থেকে অপসারণের পাশাপাশি এসব নিম্নমানের পণ্য উৎপাদনকারীদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোখলেছুর বলেন, আমরা আশা করি সরকার খাদ্যে ভেজাল প্রতিরোধের বিষয়টি সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেবে। খাদ্যপণ্যের পাশাপাশি পাইপলাইনে সাধারণ মানুষের জন্য ওয়াসার বিশুদ্ধ পানির সরবরাহ নিশ্চিত করতেও বলেছেন আদালত।

শুধু রমজান মাস আসলেই কেন ভেজালবিরোধী অভিযান সেই প্রশ্ন তুলেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে সারা বছর এসব অভিযান পরিচালনা করা উচিত বলেও মন্তব্য করেন আদালত।

হাইকোর্টের বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রোববার এ মন্তব্য করেন।

এ সময় বিএসটিআই পরীক্ষায় মানহীন ৫২টি পণ্য অবিলম্বে বাজার থেকে প্রত্যাহারের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে এসব খাদ্যপণ্য বিক্রি ও সরবরাহে জড়িতদের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ারও নির্দেশ দেয়া হয়।

নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের প্রতি এ নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এসব নির্দেশ বাস্তবায়ন করে আগামী ১০ দিনের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতেও বলা হয়েছে।

আদালত আদেশে বলেন, শুধু রমজান মাসে ভেজালবিরোধী অভিযান কাম্য নয়, সারা বছর এ অভিযান চলা উচিত। খাদ্য নিরাপদকরণের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা যেন শুধু কর্মকর্তা হিসেবে কাজ না করেন, তারা যেন দেশপ্রেমিক হিসেবে জনগণের প্রতি ভালোবাসা দেখিয়ে দায়িত্ব পালন করেন। একটি সমন্বিত উদ্যোগ (খাদ্যের মান নিয়ন্ত্রণ, তদারকি প্রতিষ্ঠানগুলোর) ছাড়া আসলে সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। বাংলাদেশ সরকার, ক্ষমতাসীন দল ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রত্যাশা মাদকের বিরুদ্ধে যেমন যুদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে, তেমনি খাদ্যে ভেজালের বিরুদ্ধে যেন যুদ্ধ ঘোষণা করা হয়। এ জন্য প্রয়োজনে জরুরি অবস্থা ঘোষণারও অনুরোধ জানান হাইকোর্ট।

আদালত আরও বলেন, যদিও এ বিষয়গুলো দেখার দায়িত্ব নির্বাহী বিভাগের। আদালতের এগুলো দেখার বিষয় না। তারপরও জনস্বার্থ বিবেচনায় এ বিষয়গুলো আদালত এড়িয়ে যেতে পারে না। খাদ্য নিরাপত্তার ব্যাপারে আপস করার কোনো সুযোগ নেই। তাছাড়া এ সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য প্রত্যেকটা নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের সমন্বিত অংশগ্রহণ করা দরকার।

আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার শিহাব উদ্দিন খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোখলেছুর রহমান। নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার মুহম্মদ ফরিদুল ইসলাম।

৫২টি পণ্য বাজার থেকে প্রত্যাহার বা জব্দ চেয়ে কনসাস কনজ্যুমার সোসাইটির (সিসিএস) পক্ষে ব্যারিস্টার শিহাব উদ্দিন খান জনস্বার্থে (৯ মে) বৃহস্পতিবার এ রিট দায়ের করেন। ওই রিটের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ও বিএসটিআইয়ের দুই কর্মকর্তার বক্তব্য জানতে রোববার আদালতে হাজির হতে বলেন। সে অনুযায়ী বিএসটিআইয়ের উপ-পরিচালক মো. রিয়াজুল হক ও নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের পরিচালক সহদেব চন্দ্র সাহা নির্ধারিত দিনে হাজির হন।

শুনানিতে আদালত বলেন, দুধের কী অবস্থা দেখুন। দুধে পানি মেশানো হচ্ছে। টেলিভিশনে দেখলাম, ইটের গুঁড়ো দিয়ে মসলা বানাচ্ছে, ভূসি দিয়ে মসলা বানানো হচ্ছে। অথচ নামীদামি কোম্পানির বিজ্ঞাপনে দেখি তাদের মসলা সবচেয়ে ভালো। এ খাদ্যে ভেজালের কারণে গত ১০ বছরে দেশে ক্যান্সার রোগীর সংখ্যা উদ্বেগজনক হারে বেড়ে গেছে।

আদালত আরও বলেন, সুস্থভাবে বাঁচতে হলে প্রয়োজনে হলুদ ছাড়াই তরকারি রান্না করে খেতে হবে। প্রয়োজনে সিদ্ধ ডিম খাব। আদালত ডিম নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করে বলেন, এখনতো প্লাস্টিকের ডিম পাওয়া যায়।

এ সময় রিটকারী আইনজীবী ব্যারিস্টার শিহাব উদ্দিন খান বলেন, কোম্পানিগুলো এমনভাবে বিজ্ঞাপনের প্রচারণা চালায় যে, যিনি মসলা খান না তিনিও ওই মসলা কিনতে প্রলুব্ধ হন। আদালত বলেন, এসব অভিযান নিয়েও ব্যবসায়ীদের অভিযোগ শোনা যায়। তাদের অভিযোগ, তাদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের চাঁদা চাওয়া হয়।

এ সময় বিএসটিআইয়ের ডেপুটি পরিচালক মো. রিয়াজুল আদালতকে বলেন, শুধুই রমজান মাসে নয়, সারাবছরই বিএসটিআই অভিযান পরিচালনা করে। তিনি বলেন, বিএসটিআই আগে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার ক্ষমতা ছিল। কিন্তু এখন নেই। বিএসটিআই মোবাইল কোর্ট পরিচালনার ক্ষমতা পেলে আরও বেশি অভিযান পরিচালনা করতে পারবে।

তখন আদালত বলেন, আইনে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরকে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার ক্ষমতা দেয়া আছে। কিন্তু তারাতো সেটা করে না। আপনারা ক্ষমতা পেলে আপনারা কী করবেন?

আদালত নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের মহাপরিচালকের আচরণে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমরা একজন কর্মকর্তাকে ডাকলাম। তিনি পাঠিয়েছেন এমন এক কর্মকর্তা যিনি এক সপ্তাহ আগে যোগদান করেছেন। ওই কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি কিছুই বলতে পারবেন না। কেন, তিন/চারমাস ধরে আছেন এমন কর্মকর্তাও কি নেই যাকে আদালতে পাঠানো যেত? মহাপরিচালকের এ আচরণ আদালতের সঙ্গে ফাজলামো ছাড়া আর কিছুই নয়। এখন যদি ডিজিকে ডাকি তাহলে তার সমালোচনা করা হবে।

আদালত বলেন, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালককে ওসির ক্ষমতা দেয়া আছে। একজন মহাপরিচালক চাইলে অনেক কিছু করতে পারেন। অথচ ক্ষমতাবানরা এসির মধ্যে নিশ্চুপ বসে থাকেন। ইচ্ছা নেই কিছু করার। অথবা হয়তো বিভিন্ন জায়গা থেকে চাপ আসে। আদালত শ্রমজীবী ও সাধারণ মানুষের জন্য নিরাপদ খাবার পানি সরবরাহ করতে ঢাকা ওয়াসার প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, পাইপ লাইনের মাধ্যমে নিরাপদ খাবার পানি সরবরাহ করতে হবে।

শুনানি শেষে আদালত রুলসহ আদেশ দেন। বিএসটিআই ল্যাব পরীক্ষায় ধরা পড়া ৫২টি নিম্নমানের খাদ্যপণ্য দেশের বাজার থেকে প্রত্যাহার বা জব্দ করতে এবং বিএসটিআইয়ের নির্ধারিত মান লঙ্ঘন করে নিম্নমানের ৫২টি খাদ্যপণ্য প্রক্রিয়াজাতকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে বিবাদীদের ব্যর্থতা কেন বেআইনি ও আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না-জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত।

খাদ্য, বাণিজ্য, শিল্প সচিব, বিএসটিআইর মহাপরিচালক (ডিজি), বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালককে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোখলেছুর সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালককে নির্দেশ দেয়া হয়েছে যে, নিম্নমানের ৫২টি পণ্য বাজারে থাকলে তা বাজার থেকে তুলে নিয়ে সেগুলো ধ্বংস করতে। এসব কোম্পানির পণ্য বিএসটিআইর মানোন্নয়ন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না হওয়া পর্যন্ত উৎপাদন বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।

রিট আবেদনকারী শিহাব উদ্দিন বলেন, বিএসটিআইর মান পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ ৫২টি নিম্নমানের খাদ্যপণ্য বাজার থেকে অপসারণের পাশাপাশি এসব নিম্নমানের পণ্য উৎপাদনকারীদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোখলেছুর বলেন, আমরা আশা করি সরকার খাদ্যে ভেজাল প্রতিরোধের বিষয়টি সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেবে। খাদ্যপণ্যের পাশাপাশি পাইপলাইনে সাধারণ মানুষের জন্য ওয়াসার বিশুদ্ধ পানির সরবরাহ নিশ্চিত করতেও বলেছেন আদালত।

4 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন