২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার

শুভসন্ধ্যা সৈকতে জোছনা উৎসবে

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৫:২৩ অপরাহ্ণ, ১১ ডিসেম্বর ২০১৯

সাগরের কোলঘেঁষা নয়নাভিরাম স্থান শুভসন্ধ্যা সমুদ্রসৈকত। যার একদিকে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট, অন্যদিকে সীমাহীন বঙ্গোপসাগর। উপকূলীয় বরগুনা জেলার তিনটি প্রধান নদী- পায়রা, বিষখালী ও বলেশ্বর নদীর জলমোহনায় মিশে যাওয়া স্নিগ্ধ বেলাভূমি শুভসন্ধ্যা সৈকত। তবে স্থানীয়দের কাছে স্থানটি নলবুনিয়া চর ও নলবুনিয়া পিকনিক স্পট নামে পরিচিত।

প্রায় দশ কিলোমিটার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরূপ লীলাভূমি এই চরের বনাঞ্চল। বনবিভাগ সূত্র থেকে জানা যায়, ২০০৬ সালে সিআরপিএআরপি প্রকল্পের অর্থায়নে ৫৮ হেক্টর জমিতে নন ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল গড়ে তোলা হয় এখানে। ঝাউগাছ, আকাশমনি, অর্জুন, খইয়্যা বাবলা, মাউন্ট, কালি বাবলা, কড়াই, খয়ের ও বাদামসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ পাশাপাশি দাঁড়িয়ে রয়েছে আকাশ ছোঁয়া উচ্চতা নিয়ে।

বিস্তীর্ণ বেলাভূমির সাগরপ্রান্তে দাঁড়িয়ে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের অপরূপ দৃশ্য উপভোগ করা যায়। এখানে গোধূলিগুলো মনোরম প্রাকৃতিক রূপে সাজে। ত্রিমোহনার রূপালি জলরাশি ঘেঁষে বিস্তীর্ণ সৈকতে দাঁড়িয়ে হেমন্তের পূর্ণিমা দেখে শিহরিত হন অনেকেই। দূর থেকে পর্যটক সাধারণত নৌ ও স্থলপথে আসেন সেই পূর্ণিমা উপভোগ করতে। আগামীকাল সেই দিন। শুভসন্ধ্যা সৈকতে পূর্ণিমায় জড়ো হবেন জোছনাবিলাসী হাজারো মানুষ। দেশের সর্ববৃহৎ জোছনা উৎসব হবে এখানে। বরগুনা জেলা প্রশাসনের আয়োজনে ৫ম বরগুনা জোছনা উৎসবেরও আয়োজন করা হযেছে। উৎসবে প্রদীপ প্রজ্বলন, বাহারি ঘুড়ি উড়ানো, ফানুস উড়ানো, দেশীয় খেলাধুলা, জাদু প্রদর্শনী, আকর্ষণীয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, পুঁথি পাঠ, মিনি যাত্রা, পুতুল নাচ, র‌্যাফেল ড্র, জোছনায় অবগাহনসহ থাকবে দিনব্যাপী নানান আয়োজন।

জোছনা উৎসবের জন্য নলবুনিয়া শুভসন্ধ্যা’র উদ্দেশে বরগুনা থেকে একাধিক লঞ্চ ছেড়ে যাবে। বরগুনা লঞ্চঘাট থেকে ১২ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় ছেড়ে যাবে দু’টি দ্বিতল লঞ্চ। বরগুনা থেকে যারা যাবেন তারা লঞ্চের বুকিং দেয়ার জন্য ০১৭১৪৯০৬৬৮১ এবং ০১৭৩৭৩৭৪৪২৪ নম্বরে যোগাযোগ করতে পারেন। আসা-যাওয়ার জন্য ডাবল কেবিন ভাড়া ২০০০ টাকা, সিঙ্গেল কেবিন ১২০০ টাকা, ডেক ৩০০ টাকা। যাত্রীদের প্যাকেট লাঞ্চ সরবরাহ করা হবে।

আমতলী লঞ্চঘাট থেকে একই দিন সকাল ১১টায় তালতলীর শুভসন্ধ্যা সৈকতের উদ্দেশ্যে একটি লঞ্চ ছেড়ে যাবে। লঞ্চ বুকিং দেয়া যাবে ০১৭৯২২৫৩৫৮৬ এই নম্বরে। এছাড়া পাথরঘাটা থেকে যারা যাবেন তারা লঞ্চ বুকিং দেয়ার জন্য ০১৭১৪৭২৭৯২৩ নম্বরে যোগাযোগ করতে পারবেন।

লঞ্চ মিস করলে সড়কপথে বাস বা মোটরসাইকেলে গোলবুনিয়া, চালতাতলী, লতাকাটা হয়ে ট্রলারযোগে তালতলী যাওয়া যাবে। লতলী থেকে ভাড়ায়চালিত মটরবাইকে নলবুনিয়া শুভসন্ধ্যা সৈকত যেতে জনপ্রতি ৫০ টাকা ভাড়া লাগে। পটুয়াখালী থেকে বাসযোগে সরাসরি তালতলী যাওয়া যায়। ভাড়া ১৫০ টাকা। একইভাবে বরিশাল থেকে বাসযোগে তালতলী যাওয়া যায়। ভাড়া ২০০ টাকা। ঢাকার গাবতলী এবং সায়েদাবাদ থেকে সরাসরি বরগুনার উদ্দেশ্যে সকালে এবং বিকেলে বাস ছেড়ে আসে। ভাড়া ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা। সদরঘাটা থেকে প্রতিদিন বিকেল ৫টা এবং ৬টায় দু’টি দোতলা লঞ্চ ছেড়ে আসে। ভাড়া ডেক ৩০০ টাকা, সিঙ্গেল কেবিন ১২০০ টাকা এবং ডাবল কেবিন ২২০০ টাকা।

বরগুনা জোছনা উৎসবের স্বপ্নদ্রষ্টা সাংবাদিক সোহেল হাফিজ জানান, লঞ্চে কেবিন সংখ্যা সীমিত। কেবিন না পেলেও সমস্যা নেই। মাদুর আর বিছানার চাদর আনলে কেবিনের চেয়ে অনেক বেশি স্বাচ্ছন্দে যাওয়া যাবে। দল বেঁধে আড্ডা আর কোরাস গানের সাথে মাত্র তিন ঘণ্টার মধ্যে পৌঁছানো যাবে শুভসন্ধ্যার স্নিগ্ধ সৈকতে। লঞ্চ শুভসন্ধ্যায় ভেড়ার পর কেউ লঞ্চে অবস্থান করতে পারবেন না। লঞ্চ নদীর মাঝখানে চলে যাবে বলে জানান তিনি।

2 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন