২৩শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, মঙ্গলবার

সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলেও মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে শুধুই আশ্বাস

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৪:১৫ অপরাহ্ণ, ২০ জানুয়ারি ২০১৯

মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে শুধুই আশ্বাস! এ বৃহৎ শ্রমবাজারের সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলেও অদৃশ্য সংকটে আটকে আছে জনশক্তি রফতানি।

দেশটির অনেক প্রতিষ্ঠান শ্রমিকদের চাহিদাপত্র চেয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগে জমা করলেও মিলছে শুধুই আশ্বাস।

মালয়েশিয়ায় বৈধভাবে জনশক্তি প্রেরণ এক প্রকার থমকে থাকায় বাস্তবে তেমন কোনো ফল পাওয়া যাচ্ছে না।

অনেক ভুক্তভোগী জানান, বিভিন্নজনের কাছে টাকা, পাসপোর্ট দিয়ে তারা হয়রানির শিকার হচ্ছেন। কবে খুলবে এই বন্ধ দুয়ার তা মালয়েশিয়া সরকার ছাড়া কেউ জানে না।

তবে সম্ভাবনাময় এ শ্রমবাজার মালয়েশিয়ায় কর্মী যাওয়া দ্রুত সময়ের মধ্যে নতুন অফলাইন পদ্ধতি কার্যকর হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মহ. শহীদুল ইসলাম।
এদিকে পাইপলাইনে আটকে থাকা ২৫ হাজার কর্মী এখনও বাংলাদেশ থেকে এসপিপিএ পদ্ধতিতে (আগের নিয়ম) আসতে পারেনি, তাদের জন্য মালয়েশিয়া সরকার দুই মাস সময় বাড়িয়ে ছিল অর্থাৎ গেল বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছিল।

এ বিষয়ে ম্যানপাওয়ার ব্যবসায়ীরা বলছেন, বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যে অনেক কর্মীর ভিসা স্ট্যাম্পিং হওয়ার পরও বিএমইটি থেকে ছাড়পত্র না দেয়ার কারণে তাদের পাঠানো সম্ভব হয়নি।

মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাকের আমলে বাংলাদেশ থেকে ১০টি রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে শ্রমিক পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়। এ সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে প্রায় আড়াই লাখ কর্মী দেশটিতে পাড়ি জমায়।

এসব শ্রমিক সে দেশে যাওয়ার একবারে শেষের দিকে মালয়েশিয়ার জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে নাজিব রাজাক সরকারের দলকে বিপুল ভোটে পরাজিত করে মাহাথির মোহাম্মদের সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

এর পরই নাজিব সরকারের আমলে শ্রমবাজারে ব্যাপক অনিয়ম, দুর্নীতি ও লুটপাটের অভিযোগ উঠতে শুরু করে। এতে সিনারপ্লাক্সের তৈরি করা এসপিপিএ সিস্টেম স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেয় মাহাথির সরকার।

এ নিয়ে শ্রমবাজারে অস্থিরতা দেখা দিলেও থেমে যায়নি কূটনৈতিক তৎপরতা। মালয়েশিয়ার বাংলাদেশ হাইকমিশনের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় দুই দেশের জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের দুটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

দুটি বৈঠকেই সিদ্ধান্ত হয়, সে দেশের সরকার পুরনো সিস্টেম (এসপিপিএ) বাংলাদেশ থেকে আর কোনো কর্মী নেবে না। তারা সোর্স কান্ট্রিভুক্ত দেশের তালিকায় বাংলাদেশকে অন্তর্ভুক্ত করলেও নতুন অনলাইন পদ্ধতিতে কর্মী নেয়া হবে বলে গেল বছর মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত দুটি জয়েন্ট ওয়ার্কিং বৈঠকে অংশ নেয়া হাইকমিশন এবং মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা আশ্বস্ত করেছেন।

এ ছাড়া তারা যে পদ্ধতিতে লোক নেবে, সেখানে কোনো ধরনের সিন্ডিকেট থাকবে না বলেও মাহাথির সরকারের সিদ্ধান্ত সবাইকে জানিয়ে দেয়া হয়।

তবে নতুন কোনো পদ্ধতিতে বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক যাবে সে ব্যাপারে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীলরা জানাতে পারেননি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এ বিপুলসংখ্যক মানবসম্পদকে দেশে-বিদেশে কাজে লাগাতে পারলে দেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করা সম্ভব।

এ জন্য সরকার মালয়েশিয়ার সরকারের সঙ্গে কূটনৈতিক তৎপরতা বৃদ্ধি করে কর্মী প্রেরণে দ্রুততর কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন- এটিই কর্মমুখী মানুষের একমাত্র প্রত্যাশা এবং মালয়েশিয়ায় শ্রমিক রফতানি বাড়ানো গেলে এ আয় আরও বাড়বে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।

7 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন