২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

সর্বসাধারণের পেনশন ও সামাজিক নিরাপত্তা

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০২:১৮ অপরাহ্ণ, ০৫ মার্চ ২০২২

সর্বসাধারণের পেনশন ও সামাজিক নিরাপত্তা

প্রফেসর ড. মো. ছাদেকুল আরেফিন:: বঙ্গবন্ধুর উন্নয়ন দর্শন ছিল বৈষম্যহীন সমতাভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা। জাতির পিতার অসমাপ্ত স্বপ্নকে বাস্তবে পরিণত করে ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও বৈষম্যহীন সমতাভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাম্প্রতিক সময়ে সর্বসাধারণের জন্য যে পেনশন-ব্যবস্হা প্রচলনের উদ্যোগ নিয়েছেন তা প্রশংসনীয় উদ্যোগ। এটি দেশের সামগ্রিক সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে। বৈষম্যহীন কল্যাণকর রাষ্ট্রগঠন ছিল মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম অঙ্গীকার। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর এ মাহেন্দ্রক্ষণে সর্বসাধারণের জন্য পেনশন স্কিমের উদ্যোগ সরকারের দূরদর্শী চিন্তার একটি সফল প্রতিফলন।

এ কথা ঠিক যে, বর্তমানে মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি, প্রবৃদ্ধির অগ্রগতি, রিজার্ভসহ অর্থনৈতিক সব ক্ষেত্রে দৃশ্যমান ধারাবাহিক অগ্রগতি ও উন্নয়নের সুফল সর্বজনের কাছে পৌঁছে দিতে এবং ব্যবধান কমিয়ে আনতে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতা বৃদ্ধি ও সম্প্রসারণ অত্যন্ত গুরুত্ববহ। আর এক্ষেত্রে সব রকম বেসরকারি খাতকে সর্বসাধারণের পেনশনের আওতায় নিয়ে আসার কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। প্রাসঙ্গিকভাবে আমরা জানি, বেসরকারি বিমাসহ বেশকিছু কর্মসূচি বা কার্যক্রম বেসরকারি পর্যায়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। পাশাপাশি সরকারের উদ্যোগে চালু রয়েছে বিভিন্ন ধরনের সামাজিক নিরাপত্তাবান্ধব কর্মসূচি। বিধিবদ্ধ পেনশন-ব্যবস্হাসহ যে ভাতাগুলো চালু রয়েছে, যেমন : মাতৃত্বকালীন ভাতা, বয়স্ক ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, মুক্তিযোদ্ধা ভাতা, প্রাইমারি-সেকেন্ডারি স্কলারশিপ ভাতা, দরিদ্রদের কর্মসংস্হানের জন্য ভাতা বা অনুদান, বিধবা বা স্বামী পরিত্যক্তদের জন্য ভাতাসহ নানাবিধ কার্যক্রম। এছাড়া সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের অধীনস্হ কর্মসূচি তো রয়েছেই। তবে এসব কর্মসূচির কার্যকর ও সফল বাস্তবায়নই এখন বড় চ্যালেঞ্জ। যদিও সরকার এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে নানাভাবে।

এ কথা মনে রাখতে হবে যে, মধ্যম আয়ের দিকে ধাবমান বাংলাদেশের অর্থনীতিসহ প্রতিটি ক্ষেত্রের দৃশ্যমান অগ্রগতি যেমন :মাথাপিছু আয়, রিজার্ভ, রপ্তানি বৃদ্ধি আশার সঞ্চার করে তেমনিভাবে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির সফল বাস্তবায়ন উল্লেখযোগ্য ব্যবধান কমাতে তথা সমতা আনয়নের ক্ষেত্রে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। ধনী-গরিবের ব্যবধান কমিয়ে এনে দেশের সব মানুষের মধ্যে সমতা আনয়ন কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার অপরিহার্য শর্ত। ঠিক তেমনিভাবে বর্তমান সরকারের উন্নয়নমুখী নানা পদক্ষেপ যথাযথভাবে বাস্তবায়নের মাধ্যমে অর্থনৈতিক-সামাজিক অগ্রগতি তথা কল্যাণমুখী সমাজ প্রতিষ্ঠা করার জন্যও অন্যতম শর্ত।

লেখক: উপাচার্য, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়

1 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন