২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

সাকিবের বরিশালের কাছে হারল খুলনা

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৪:৫০ অপরাহ্ণ, ২৯ জানুয়ারি ২০২২

সাকিবের বরিশালের কাছে হারল খুলনা

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল >> জিততে হলে করতে হবে ১৪২ রান। শুরুতে দুই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়া খুলনাকে জয়ের আশা দেখিয়েছিলেন অধিনায়ক মুশফিক। কিন্তু পূর্ণতা পায়নি তাতে। শেষ পর্যন্ত সাকিবের বরিশালের কাছে হারতে হয়েছে খুলনা টাইগার্সকে। ১৭ রানের দারুণ জয়ে বিপিএলের লড়াইয়ে ফিরেছে ফরচুন বরিশাল।

শনিবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট করতে নেমে ৯ উইকেটে ১৪১ রান করে বরিশাল। জবাবে ১৯ ওভারে ১২৪ রানে অল আউট হয় খুলনা। চার ম্যাচে বরিশালের এটি দ্বিতীয় জয়। চার ম্যাচে খুলনার এটি দ্বিতীয় হার।

জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই দুই উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে খুলনা টাইগার্স। বল হাতে ইনিংসের প্রথম ওভারেই ভেল্কি দেখান বরিশালের আফগান স্পিনার মুজিব উর রহমান। তৃতীয় বলে ফেরান ওপেনার আন্দ্রে ফ্লেচারকে। তিন বলে চার রান করা ফ্লেচার ক্যাচ দেন জিয়াউরের হাতে। পরের বলেই আউট সৌম্য সরকার। মারেন গোল্ডেন ডাক।

দলীয় ৫ রানে দুই উইকেট হারানো খুলনাকে পথ দেখানোর চেষ্টা করেন রনি তালুকদার ও মেহেদী হাসান। খণ্ড জুটিতে দলের সাময়িক বিপদ কাটে। কিন্তু দলীয় ৪০ রানের মধ্যে এই দুজনই ফেরেন সাজঘরে। মেহেদী হাসানকে ফেরান বরিশাল অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। স্টাম্পিংয়ের শিকার হন মেহেদী ব্যক্তিগত ২৩ বলে ২১ রানের মাথায়। তার ইনিংসে ছিল সমান একটি করে চার ও ছক্কা।

এর কিছুক্ষণ পর বিদায় নেন রনি তালুকদার। ১৬ বলে এক ছক্কায় ১৪ রান করে লিনটটের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন রনি। ৪০ রানে চার উইকেট হারানো খুলনা তখন অনেকটাই চাপে। এমন পরিস্থিতি শক্ত হাতে সামাল দেয়ার চেষ্টা করেন অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। সাথে ছিলেন ইয়াসির আলী।

এই জুটি দলকে নিয়ে যান ৮৬ রান পর্যন্ত। এই জুটি ভাঙেন মেহেদী হাসান রানা। বোল্ড করেন ২০ বলে ২৩ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলা ইয়াসির আলীকে। তার ইনিংসে ছিল সমান একটি করে চার ও ছক্কা। এরপর মুশফিকের সাথে জুটি বাঁধেন লঙ্কান অলরাউন্ডার থিসারা পেরেরা।

এই জুটিই অনেকটা বল-রানের ব্যবধান অনেকটা কমিয়ে আনে। ৩০ বলে খুলনার দরকার ছিল ৫৩ রান। ১৬তম ওভারে স্পিনার মুজিব উর রহমানকে এক চার ও এক ছক্কা হাঁকান পেরেরা। মুশফিক নেন দুই রান। ২৪ বলে দরকার তখন ৪১ রান। ১৭তম ওভারে লিনটটের দুর্দান্ত ক্যাচে সাজঘরে ফেরেন পেরেরা। ৯ বলে এক চার ও দুই ছক্কায় ১৯ রানে পেরেরা দেন শফিকুলের বলে ক্যাচ। পরের ওভারে বিদায় নেন সেকুজে প্রসন্ন। ৩ বলে দুই রান করে তিনি লিনটটের শিকার।

এক প্রান্ত আগলে রেখে খেলছিলেন মুশফিক। ১২ বলে দরকার তখন ২১ রান। ম্যাচ ফিফটি ফিফটি। উইকেটে মুশফিক ও ফরহাদ রেজা। ১৯তম ওভারে মেহেদী রানার দ্বিতীয় বলে উইকেটের পেছনে নুরুল হাসানের গ্লাভসে ক্যাচ দেন ফরহাদ রেজা। রিভিউ চেয়েও কাজ হয়নি। একই ওভারের পঞ্চম বলে খুলনা হারায় নবম উইকেট। দুই বলে এক রান করে সাজঘরে ফেরেন শরিফুল্লাহ। একই ওভারের শেষ বলে মুশফিক আউট হলে হারের লজ্জা নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় খুলনাকে। ১৯ ওভারে খুলনা অল আউট ১২৪ রানে। ইনিংস সর্বোচ্চ রান আসে মুশফিকের ব্যাট থেকে। ৩৬ বলে এক চার ও এক ছক্কায় ৪০ রান করেন তিনি।

বল হাতে ৩ ওভারে ১৭ রানে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নেন বরিশালের মেহেদী রানা। মুজিব উর রহমান ও জ্যাক লিনটট নেন দুটি করে উইকেট। শফিকুল ও সাকিব পান একটি করে উইকেট।

এর আগে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই বেশ মারমুখি ছিলেন বরিশালের দুই ওপেনার জ্যাক লিনটট ও ক্রিস গেইল। উদ্বোধনী জুটিতে দুজনে তোলেন ২৬ রান। ৬ বলে ২ চারে ১১ রান করে শরিফুল্লার বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন লিনটট।

জিয়াকে সাথে করে রানের চাকা সচল রাখেন ক্যারিবীয়ন তারকা গেইল। দলীয় ৬৪ রানে দ্বিতীয় উইকেটের পতন। গেইল রান পেলেও জিয়া ফেরেন ১৩ বলে এক ছক্কায় ১০ রান করে। কামরুলের বলে মেহেদীর হাতে ক্যাচ দেন তিনি। বরিশালের হয়ে ইনিংস সর্বোচ্চ রান গেইলেরই।

জিয়ার বিদায়ের পর টিকতে পারেননি গেইলও। ফিফটির কাছাকাছি গিয়ে তিনি প্রসন্নর শিকার। ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে বাউন্ডারি লাইনে ধরা পড়েন সৌম্যর কাছে। যাওয়ার আগে করে যান ৩৪ বলে ছয়টি চার ও দুটি ছক্কায় ৪৫ রান।

এরপর দ্রুত ফেরেন কিপার ব্যাটার নুরুল হাসান সোহান। ১১ বলে ৮ রান করে তিনি মেহেদীর বলে ক্যাচ দেন সৌম্যর হাতে। এরপর রানের চাকা ঘুরান নাজমুল হাসান শান্ত ও তৌহিদ হৃদয়। দলীয় ১২২ রানে সাজঘরে ফেরেন হৃদয়। ফরহাদ রেজার বলে আউট হওয়ার আগে তিনি করেন ২১ বলে ২৩ রান।

ক্রিজে আসা অধিনায়ক সাকিব ব্যাট হাতে এদিনও ব্যর্থ। ৬ বলে দুই চারে করেন তিনি ৯ রান। পেরেরার বলে ক্যাচ দেন ফ্লেচারের হাতে। এরপর পেরেরার বলে বোল্ড শান্ত। ১৫ বলে তার রান ১৯, বাউন্ডারি দুটি।

শেষের দিকে লেজের সারির ব্যাটাররা তেমন ঝড় তুলতে পারেননি। সবার রান ছিল দুই অঙ্কের নিচে। ইরফান শুকুর করেন ২ রান। আফগান স্পিনার মুজিব উর রহমান ৯ বলে করেন ৭ রান। বল হাতে খুলনার সব বোলারই পেয়েছেন উইকেটের দেখা। কামরুল ইসলাম, থিসারা পেরেরা, ফরহাদ রেজা নেন দুটি করে উইকেট। মেহেদী হাসান, শরিফুল্লাহ ও প্রসন্ন পান একটি করে উইকেটের দেখা।

2 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন