২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার

সাগরে ইলিশ মাছ ধরার উৎসব: ট্রলারভর্তি তীরে ফিরছে জেলেরা

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৬:০১ অপরাহ্ণ, ১৬ আগস্ট ২০২১

সাগরে ইলিশ মাছ ধরার উৎসব: ট্রলারভর্তি তীরে ফিরছে জেলেরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল >> বঙ্গোপসাগরে চলছে ইলিশ মাছ ধরার উৎসব। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর জেলেদের জালে ধরা পড়ছে কাঙ্ক্ষিত পরিমাণ ইলিশ। ফিশিং ট্রলার ভর্তি করে ইলিশ নিয়ে হাসিমুখে কূলে ফিরছেন জেলেরা। সাগরে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ায় আড়ৎগুলোতে এখন কর্মচাঞ্চল্য দেখা যাচ্ছে। ইলিশের পাশাপাশি ধরা পড়ছে রূপচাঁদা, লইট্যাসহ নানা প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ। তবে দাম একটু বেশি। বর্তমানে ১০০ ইলিশের দাম চাওয়া হচ্ছে ১ লাখ ২০ হাজার। দুই কেজির কাছাকাছি ওজনের একটি ইলিশের দাম ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত।

গতকাল রোববার (১৫ আগস্ট) সকালে কক্সবাজার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে চলছে উৎসবের আমেজ। টানা তিন মাস পর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র জেলে ও মৎস্য ব্যবসায়ীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে। বৈরী আবহাওয়া ও ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে সাগরে গেলেও ইলিশের দেখা পাচ্ছিলেন না জেলেরা। এতে হতাশা ও আর্থিক সংকটে ছিলেন জেলে ও মৎস্য ব্যবসায়ীরা। কিন্তু গত কয়েক দিনে পাল্টে গেছে চিত্র। সাগর থেকে মণ মণ ইলিশ নিয়ে ঘাটে ফিরছে শত শত ফিশিং ট্রলার। ঘাট থেকে ডিঙি নৌকায় ঝুড়ি নিয়ে মোকামে তোলা হচ্ছে ছোট-বড় ইলিশ। ব্যবসায়ীদের হাকডাক ও বেচাকেনায় সরগরম হয়ে উঠে ফিশারি ঘাট নামে পরিচিত এই মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র। এখানে কারো যেন দম ফেলার ফুসরত নেই। অনেক ব্যবসায়ী ট্রাকে করে দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠাচ্ছেন ইলিশের চালান।

ফিশারি ঘাটে কথা হয় ফিশিং ট্রলারের জেলে রমিজ উদ্দিনসহ কয়েকজনের সঙ্গে। তারা জানান, অনেক দিন মাছ শিকার বন্ধ থাকায় অনেক কষ্টে দিন গেছে। তার ওপর করোনার প্রাদুর্ভাব ছিল। সব মিলিয়ে অনেক দুঃখ-কষ্টে পরিবার-পরিজন নিয়ে দিন কাটাতে হয়েছে। এবার সাগরে প্রচুর পরিমাণ মাছ ধরা পড়ায় হয়তো সেই দুঃখ-কষ্ট ঘুচবে।

মাছ ব্যবসায়ী শফিউল আলম সাংবাদিকদের বলেন, ‘এখনকার জালগুলো পাতলা হওয়ায় মাছ বেশি ধরা পড়ছে। এখন যে ইলিশগুলো ধরা পড়ছে তা ওজনে দেড় থেকে ২ কেজির কাছাকাছি। লোকসানের তেমন ঝুঁকি নেই।’

কক্সবাজার মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি জানে আলম সাংবাদিকদের বলেন, ‘বৈরী আবহাওয়া ও ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে গত এক সপ্তাহে শত শত ফিশিং ট্রলার সাগরে মাছ ধরতে গেছে। প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণ ইলিশ নিয়ে ফিরছে ট্রলারগুলো। নিষেধাজ্ঞাকালে যে ক্ষতি হয়েছে, আশা করি, তা পুষিয়ে নিয়ে লাভের মুখ দেখবেন ব্যবসায়ী ও ফিশিং ট্রলারের মালিকরা।’
কক্সবাজার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ম্যানেজার মো. এহসানুল হক বলেন, ‘মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে ট্রলারগুলো ফিরতে শুরু করায় মাছের পরিমাণ ও রাজস্ব বাড়ছে।’

কক্সবাজার জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এসএম খালেকুজ্জামান বলেছেন, ‘গত বছর কক্সবাজারে ইলিশ আহরণ হয়েছিল ১৫ হাজার ২৫৬ মেট্রিক টন। এবার ইলিশ আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৭ হাজার মেট্রিক টন। গত ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিন সাগরে মাছ আহরণ বন্ধ ছিল। এ কারণে ইলিশের প্রজনন ও আকৃতি বেড়েছে অনেক গুণ। দুর্যোগকাল কাটিয়ে জেলেরা সাগরে নামছেন ইলিশ ধরতে। আশা করছি, এবার ইলিশ আহরণের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করবেন জেলেরা।’

9 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন