১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

সাদিকই রইলেন বরিশাল আওয়ামী লীগের প্রাণভোমরা

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৮:৩৯ অপরাহ্ণ, ০৯ ডিসেম্বর ২০১৯

শাকিব বিপ্লব, বরিশাল:: বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের নতুন নেতৃত্ব সভাপতি একেএম জাহাঙ্গীর ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ’কে চুড়ান্তকরণে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তকে দলের সুশীল অংশ প্রত্যাশিত মনে করছেন। তাদের অভিমত হচ্ছে- সাংগঠনিক যোগ্যতার মুল্যায়ন এবং বরিশাল প্রেক্ষাপট স্থিতিশীল রাখতেই বিশেষ করে সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহ’কে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। অবশ্য দলের ক্ষুদ্র একটি অংশ এমন সিদ্ধান্তে হাতাশা ব্যক্ত করে বলেন- স্থানীয় বিভাজনের রাজনীতির অবসান টানতে ক্ষমতার বিকেন্দ্রিকরণের উদ্যোগ হিসেবে নয়া নেতৃত্ব চুড়ান্তে সাদিক আব্দুল্লাহ’র পাশাপাশি সদর আসনের এমপি পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীমকে মনোনীত করায়ই কাম্য ছিল।

এখন রাজনীতি একপেশে হয়ে যাওয়ায় দলীয় নেতাকর্মীদের মুল্যায়ন ও প্রতিহিংসা পরায়ণ হয়ে একটি অংশকে চেপে ধরার সম্ভবনা তৈরি হয়েছে। এমন ধারনার ঘোর বিরোধী দলের সুশীল অংশ পাল্টা অভিমত ব্যক্ত করেন। এক্ষত্রে তাদের যুক্তি হচ্ছে- পরস্পর বিরোধী শীর্ষ দুই নেতা শামীম এবং সাদিকের সমন্বয় নয়া নেতৃত্বে উদ্ভব ঘটলে উভয়ের অনুসারীরা ক্ষমতা বৃদ্ধির প্রতিযোগিতায় সাংগঠনিক পরিস্থিতি দিনোত্তর সংঘাতময় করে তুলতো। উত্তাপ ছড়াতো রাজপথে। জাহিদ ফারুক শামীম আউট ও সাদিক আব্দুল্লাহ ইন এনিয়ে পক্ষে বিপক্ষে নানা মত থাকলেও নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনের পর বিরাজমান পরিস্থিতি ইতিবাচক হিসেবেই দেখছে দলের নেতাকর্মীরা। বরং সাদিক আব্দুল্লাহ’কে নেতৃত্ব বিয়োগ টানলে তার বিশাল কর্মী-বাহিনী বা অনুসারীদের ক্ষোভ-বিক্ষোভ মিশ্রিত পরিস্থিতি আরও বেশামাল উঠতো। সম্ভবত এমন সমীকরণ বিবেচনায় আ’লীগের হাইকমান্ড সাদিক আব্দুল্লাহ’র বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণে সতর্ক ছিল।

সার্বিক বিবেচনায় স্থানীয়ভাবে সংগঠনকে সু-সংগঠিত করার পাশাপাশি অনুষ্ঠিত কাউন্সিল সম্পন্নে গত মাসখানেক যাবত সাদিক আব্দুল্লাহ’র নানামুখী প্রস্তুতি ছিল প্রসংশনীয়। এই নেতা নেতৃত্ব পাওয়ার দুয়ার সহসাই উন্মোচনে ওয়ার্ড কমিটি গঠনে কৌশলী ভুমিকা রেখে এমন পদ প্ররিক্রমা তৈরি করেছিলেন যে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় কাউন্সিলরদের ভোটাভুটি হলেও তাকে পেছনে ফেলার কোন সুযোগ ছিল না। সর্বশেষ কাউন্সিল সফলতায় ও জমকালো সাজ সজ্জা ও ব্যয় বহুল আয়োজনে নানা দিক থেকে তরুণ এই নেতার চাওয়া পাওয়ার ক্ষেত্রে অন্য কোন প্রতিদ্বন্দ্বি অন্তরায় হয়ে দাঁড়ানোর মতো মনবল সৃষ্টি করতে পারেননি। সঙ্গত কারণে অনুষ্ঠিত রোববারের সম্মেলনে কণ্ঠভোটে সাদিক আব্দুল্লাহ প্রত্যাশা-প্রাপ্তির যোগফলে সাধারণ সম্পাদক পদে আসীন হন।

বিদায়ী কমিটিতে এই নেতা যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্বে থাকলেও তার ভুমিকা ছিল অপরাপর নেতাদের তুলানায় অনেক বিচক্ষণ ও সাংগঠনিক। এই সময়কালে নিজেকে এমন এক নেতা হিসেবে তৈরি করতে সক্ষম হন যে দলের প্রাণভোমরা হিসেবে পরিচিতি পেতে থাকেন। এমন কোন দিক ছিল না যা বিবেচনায় সাদিক আব্দুল্লাহ’র প্রতিদ্বন্দ্বি বা বিকল্প হিসেবে প্রদপ্রত্যাশিরা নিজেদের সমকক্ষ ভাবার পথ তৈরি করেছিল। হয়তো এই কারণেই সাধারণ সম্পাদক পদে সাদিক আব্দুল্লাহ’র পদন্নোতি নিয়ে দলের মধ্যে কোন ক্রিয়া প্রক্রিয়া সৃষ্টি হয়নি। বিষয়টি লক্ষ্যণীয় যে গুরুত্বপুর্ণ দুটি পদের যেন কোন একটি পাওয়ার তুমুল আকাঙ্খায় থাকা প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অবসরপ্রাপ্ত) জাহিদ ফারুক শামীম অথবা সাবেক সাংসদ জেবুন্নেছা আফরোজ নয়া নেতৃত্ব চুড়ান্ত পরবর্তী কোন নৈতিবাচক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেননি।

যদ্দুর জানা গেছে- জাহিদ ফারুক শামীম নবগঠিত নেতৃত্বকে মেনে নেওয়ার পাশাপাশি দলীয় কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। যদিও এই নেতা অনেকটাই হতাশ বলে তার ঘনিষ্টজনেরা জানিয়েছেন। জেবুন্নেছা আফরোজও অনেকটা অভিন্ন মেজাজেই রয়েছেন। তবে এই নেত্রীকে পুর্ণাঙ্গ কমিটিতে দেখা যেতে পারে বলে নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র আভাস দিয়ে বলছে এই ধরনের আশ্বাস তাকে ইতিমধ্যে দেওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে জাহিদ ফারুক শামীম জেলা কমিটি বা কেন্দ্রে স্থান পেয়ে চমক দেখিয়ে তার অনুসারীদের সতেজ রাখার নতুন পন্থা খুঁজছেন। এতসব ভাবনাকে পেছনে ফেলে মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহ প্রত্যাশার সাথে প্রাপ্তির মিল খুঁজে পাওয়ায় ফুরফুরে আমেজে রয়েছেন। বলা চলে তার বৃহস্পতি এখন তুঙ্গে। তরুণ বয়সে মেয়র সর্বশেষ ঐতিহ্যবাহী সংগঠন আ’লীগের মতোন দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে আসায় রাজনীতিতে চাওয়া পাওয়ার অবশিষ্ট আর কিছু নেই বলে তার অনুগতরা মনে করছেন। যে কারণে সম্মেলন পরবর্তী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুনে আনন্দের যে বাতায়ন তৈরি হয় তা স্পর্শ করে তার বিশাল কর্মী-সমর্থকদের হৃদয়ে।’

4 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন