২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বুধবার

সারাদেশে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট বন্ধের হুঁশিয়ারি

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৭:৩১ অপরাহ্ণ, ০৪ জুলাই ২০২০

বার্তা পরিবেশক, অনলাইন :: ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবাদাতাদের সংগঠন আইএসপিএবি ইন্টারনেট খাতে ভ্যাট জটিলতার সমাধান না হলে সারা দেশে কিছু সময়ের জন্য ইন্টারনেট বন্ধের হুমকি দিয়েছে।

আজ (শনিবার) এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের পক্ষ থেকে আইএসপিএবি’র সভাপতি আমিনুল হাকিম এ কথা জানান। ভ্যাট জটিলতার সমাধান না হলে সীমিত আকারে সারা দেশে ইন্টারনেট বন্ধ রাখার কথা বললেও এখনো নির্দিষ্ট কোনো তারিখ জানায়নি সংগঠনটি।

ইন্টারনেট খাতে ভ্যাট জটিলতার সমাধান না হলে দেশব্যাপী কিছু সময়ের জন্য ইন্টারনেট বন্ধের হুমকি দিয়েছে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবাদাতাদের সংগঠন আইএসপিএবি।

মহামারীকালে যখন ভার্চুয়াল যোগাযোগের জন্য ইন্টারনেটে মানুষের নির্ভরতা অনেক বেড়েছে, তখন ব্রডব্যান্ড সেবাদাতারা শনিবার (৪জুলাই) এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এই হুমকি দিল।

আইএসপিএবি সভাপতি আমিনুল হাকিম বলেন, ভ্যাট জটিলতার সমাধান না হলে সীমিত আকারে সারাদেশে ইন্টারনেট বন্ধ করার পরিকল্পনা নিয়েছি।

তবে কবে তা হবে নির্দিষ্ট করে না জানিয়ে তিনি বলেন, সুবিধামতো সময়ে দুই থেকে এক ঘণ্টা ইন্টারনেট বন্ধ রাখব। কবে কখন এই কর্মসূচি নেয়া হবে তা সংগঠনের নেতাদের সাথে আলোচনা করে চূড়ান্ত করা হবে।

আমিনুল বলেন, জুলাই মাসের মধ্যে দাবি না মানা হলে এ কর্মসূচিতে যাব আমরা। দাবি মানা না হলে ইন্টারনেট বন্ধের এ কর্মসূচি ধাপে ধাপে অর্থাৎ প্রতিমাসে বা সপ্তাহে সপ্তাহে চলমান থাকবে।

বর্তমানে করোনাভাইরাস মহামারী পরিস্থিতিতে শিক্ষা ও চিকিৎসা, ব্যবসা-বাণিজ্যসহ গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলোতে ইন্টারনেট কার্যকর ভূমিকা রাখছে। ব্রডব্যান্ডের পাশাপাশি মোবাইল ইন্টারনেটও ব্যবহার হচ্ছে।

ইন্টারনেটে ৫ শতাংশ ভ্যাট এবং ভ্যালু চেইনের অন্যান্য (আইটিসি, আইআইজি, এনটিটিএন) খাতে ১৫ শতাংশ আরোপিত ভ্যাট নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে সৃষ্টি হওয়া জটিলতার কারণে চলমান ইন্টারনেট সেবা কার্যক্রম ব্যাহত হতে পারে বলে আইএসপিএবি মনে করছে।

আমিনুল বলেন, ৫ শতাংশ ভ্যাট ইন্টারনেট গ্রাহক থেকে আদায় করে আইএসপি প্রতিষ্ঠানগুলো আর ১৫ শতাংশ ভ্যাট ভ্যালু চেইনের অন্যান্য খাত আইএসপিগুলো থেকে আদায় করে থাকে।

এর ফলে ৫ শতাংশ ভ্যাট গ্রাহক থেকে আদায় করা হলেও আইটিসি, আইআইজি, এনটিটিএনকে ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট পরিশোধ করতে হচ্ছে। সবমিলে প্রায় ৩৫ শতাংশ ভ্যাট বাবদ খরচ দিতে হচ্ছে আইএসপিগুলোকে।

তিনি জানান, ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে ইন্টারনেটে ৫ শতাংশ ভ্যাট এবং ভ্যালু চেইনের অন্যান্য খাতে ১৫ শতাংশ ভ্যাট নির্ধারিত হওয়ায় ইন্টারনেট সেবা খাতে জটিলতা সৃষ্টি হয়। পরে এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে ইন্টারনেটের প্রতিটি স্তরে (আইটিসি, আইআইজি, এনটিটিএন) ৫রশতাংশ ভ্যাট আরোপ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে এনবিআর।

কিন্তু এর কয়েক মাসের ব্যবধানে ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের বাজেটে পুনরায় ইন্টারনেট সেবায় ৫ শতাংশ ভ্যাট এবং অন্যান্য স্তরে ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করায় বিষয়টিতে আবারও আগের জটিলতা সৃষ্টি হয়। এর ফলে প্রান্তিক পর্যায়ে ইন্টারনেটের মূল্য ৩০ শতাংশ থেকে ৪০ শতাংশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

ইন্টারনেটে ৫ শতাংশ ভ্যাট এবং ভ্যালু চেইনের অন্যান্য খাতে ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপকে ‘বৈষম্যমূলক’ এবং মূসক আইনের ‘পরিপন্থি’ বলেও মনে করছে আইএসপিএবি।

ইন্টারনেটে ভ্যাট আরোপ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আইএসপিএবির প্রস্তাব তুলে ধরে আমিনুল বলেন, ইন্টারনেটের সকল ক্ষেত্রে ৫ শতাংশ অথবা ০ শতাংশ হারে ভ্যাট আরোপে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করলে (ইন্টারনেট সেবায় ৫ শতাংশ ভ্যাট এবং ভ্যালু চেইনের অন্যান্য ১৫ শতাংশ ভ্যাট) জটিলতা নিরসন হবে।

প্রান্তিক পর্যায়ে ইন্টারনেটের মূল্য ৩০ শতাংশ থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কাও দূর হবে। এর ফলে সর্বস্তরের ইন্টারনেট গ্রাহক ও দেশের জনসাধারণ অপেক্ষাকৃত কম মূল্যে ইন্টারনেট সেবার আওতায় আসতে পারবেন।

7 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন