২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

সিংহ প্রতীক নিয়ে ভোটের মাঠে হিরো আলম

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৩:৫৬ অপরাহ্ণ, ১২ ডিসেম্বর ২০১৮

উচ্চ আদালতে আপিল করে প্রার্থিতা ফিরে পাওয়া বগুড়া-৪ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী হিরো আলম নির্বাচনী প্রচারে নামছেন।সিংহ প্রতীক নিয়ে বুধবার থেকেই তার ভোটের প্রচার শুরু করার কথা।

প্রার্থিতা ফিরে পাওয়ার পর হাইকোর্টের আদেশের কপি মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশনে জমা দেন হিরো আলম।

এসময় তিনি বলেন, ‘আজ (মঙ্গলবার) রাতেই বগুড়ায় চলে যাব। বুধবার থেকে প্রচার শুরু করব। আমার আর তর সইতেছে না।’

প্রচার শুরু করেছেন কিনা জানতে বিকাল ৩ টায় হিরো আলমের মুঠোফোনে ফোন করা হলে তিনি লাইনটি কেটে দেন।

মঙ্গলবার হিরো আলম জানান, ঢাকায় তার আর কোনো কাজ নেই। মঙ্গলবার সকালে হাইকোর্ট মাজার জিয়ারত করেছেন।পরে সন্ধ্যায় ইসিতে গিয়েছেন।

হিরো আলম বলেন, বগুড়ায় ফিরে প্রথমে রিটার্নিং অফিসারের কাছে গিয়ে পছন্দের সিংহ প্রতীক নেব। এরপর নন্দীগ্রাম উপজেলা ও পরে কাহালু উপজেলায় মাজার জিয়ারতের মাধ্যমে নির্বাচনী প্রচার শুরু করব।

নির্বাচন কমিশন (ইসি) তার প্রার্থিতা বাতিল করায় বিরক্ত হিরো আলম বলেন, ইসি আমায় খুব প্যারা দিল। শুনানিতে যখন ইসি আমাকে বাদ দিল, তখনই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিলাম লড়াই করব প্রার্থিতা ফিরে পেতে।বহুত লোকের কটু কথা সহ্য করে এই পর্যন্ত এসেছি। থেমে থাকার পাত্র আমি নই। হাইকোর্টে যেতে হবে। শেষমেশ তো ইসিকে হাইকোর্ট দেখিয়েই ছাড়লাম।

বগুড়া-৪ আসনে জাতীয় পার্টি থেকে মনোনয়ন চেয়েছিলেন হিরো আলম। কিন্তু পাননি। এর পর স্বতন্ত্র হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেন তিনি। জেলা রিটার্নিং অফিসার তার মনোনয়ন বাতিল করেন। ইসিতে আপিল করেন হিরো আলম।

এরপর ৬ ডিসেম্বর প্রার্থিতা বাতিলের বিরুদ্ধে হিরো আলমের আপিল নামঞ্জুর করে নির্বাচন কমিশন। ইসিতে ব্যর্থ হয়ে উচ্চ আদালতে আপিল করেন হিরো আলম।

গত সোমবার নির্বাচন কমিশনের প্রার্থিতা বাতিলের সিদ্ধান্ত স্থগিত করে বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ সোমবার হিরো আলমের মনোনয়ন গ্রহণের নির্দেশ দেন।

আদেশের পর হিরো আলম বলেন, ইসিকে হাইকোর্ট দেখিয়ে দিলাম। আমি এখন খুব খুশি। হাইকোর্টে যে ন্যায়বিচার পাওয়া যায়, তা প্রমাণ হল। ইসি যে বলছিল-আমার ভোটার তালিকা ভুয়া, তা আজ মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে।

হাইকোর্টের আদেশের সার্টিফায়েড কপি নিয়ে মঙ্গলবার আসেন নির্বাচন কমিশনে। এখানে এসে কিছুটা ভোগান্তির শিকার হন হিরো আলম।

অভ্যর্থনা ডেস্কের কর্মকর্তা হিরো আলমের রায়ের কপি যাচাই-বাছাই করেন। তিনি এ কপি জমা নেননি। তাকে ওপরে গিয়ে জমা দিতে বলেন।

হিরো আলম মাথা ঠাণ্ডা রেখে দ্বিতীয় তলায় যান। সেখানে ইসির কর্মকর্তারা হিরো আলমকে অভিনন্দন জানান প্রার্থিতা ফিরে পাওয়ার জন্য।

এক কর্মকর্তা বলে ওঠেন, আরে হিরো আলম ভাই, আপনি এলে লোকজন ভিড় করেন, অথচ অন্যরা এলে এত লোক হয় না। আপনি সত্যিকারের হিরো ভাই।

কিছুটা মৃদু হেসে সহজ-সরল হিরো আলম বলেন, ‘এসবই আপনাদের ভালোবাসা ভাই। কাগজপত্র বুঝে লেন (নেন), ভালো করে দেখেশুনে সই করে লেন! আমাকে যেন আর না আসতে হয়।’

এ সময় ইসির আরেক কর্মকর্তা কিছুটা টিপ্পনি মেরে বলে ওঠেন, ‘আপনার সাহস আছে ভাই, আপনি পারেন।’

উত্তরে হিরো আলম দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, ‘সাহস আছে বলেই তো ইসি আমাকে সিংহ মার্কা দিল। এখনই মরে গেলেও আমার আর কোনো কষ্ট থাকবে না। জীবনে যা পাওয়ার, সবই পাইছি। বাকি জীবন বাঁচব শুধু মানুষের জন্য।

প্রসঙ্গত, ইউটিউবে বিচিত্র অভিনয়, গান আর নাচ দেখিয়ে দেশব্যাপী আলোচনায় আসেন হিরো আলম। তার প্রকৃত নাম আশরাফুল আলম। তিনি এর আগেও স্থানীয় নির্বাচনে অংশ নেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ আলোচিত এই ‘হিরো’।

1 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন