২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার

সিইসির ভাগনে শাহজাদার আয় ও সম্পদ দুটোই বেশি

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১১:৪৬ পূর্বাহ্ণ, ০৫ ডিসেম্বর ২০১৮

পটুয়াখালী-৩ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এস এম শাহজাদার পেশা ব্যবসা। ব্যবসা থেকে বছরে আয় করেন ২৩ লাখ টাকা। তাঁর নামে কোনো মামলা নেই। অপরদিকে বিএনপির প্রার্থী হাসান মামুনের বিরুদ্ধে আছে ১২টি মামলা। তাঁর পেশা ব্যবসা হলেও সে খাতে কোনো আয় দেখাননি। রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে জমা দেওয়া তাঁদের হলফনামা থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

গলাচিপা ও দশমিনা উপজেলা নিয়ে গঠিত পটুয়াখালী-৩ আসন। এ আসনে সাতজন প্রার্থী মনোনয়ন দাখিল করেছিলেন। যাচাই-বাছাইয়ে বিএনপির দুই প্রার্থী গোলাম মাওলা রনি ও মুহাম্মদ শাহজাহানের মনোনয়ন বাতিল হয়েছে। হলফনামা থেকে আরও জানা গেছে, অপর পাঁচ প্রার্থীর মধ্যে তিনজনই ব্যবসায়ী ।

পাঁচ প্রার্থীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আয় ও সম্পদ আছে আওয়ামী লীগের এস এম শাহজাদার। তিনি প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদার ভাগনে। তাঁর বাড়ি দশমিনায়। তিনি টাইলস ও স্যানিটারি সামগ্রী ব্যবসায়ী। তিনি এই ব্যবসা থেকে বছরে আয় করেন ২৩ লাখ ৭৮ হাজার টাকা।

সঞ্চয়পত্র ও ব্যাংক আমানত থেকে আয় করেন ৮ লাখ ৬১ হাজার টাকা। হাতে নগদ টাকার পরিমাণ ৯ লাখ ৬৩ হাজার এবং স্ত্রীর হাতে নগদ রয়েছে ৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা আছে ৮ লাখ ৬১ হাজার টাকা ।

অস্থায়ী সম্পদের মধ্যে আরও আছে শাহজাদার নিজের একটি গাড়ি, যার মূল্যে ৩১ লাখ ২৭ হাজার টাকা। স্ত্রীর নামে আছে আরেকটি গাড়ি, যার মূল্য ১৪ লাখ টাকা। দুজনের নামে আছে ৩৫ ভরি স্বর্ণালংকার। স্থায়ী সম্পদের মধ্যে শাহজাদার নামে ৩২ শতাংশ অকৃষিজমি এবং স্ত্রীর নামে ১৪৭ শতাংশ কৃষিজমি রয়েছে। ঢাকায় তাঁর ফ্ল্যাট রয়েছে, যার মূল্য ২৮ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। এলাকায় তাঁর পাকা বাড়ির মূল্য ২৪ লাখ ৫১ হাজার টাকা। তাঁর বিরুদ্ধে ফৌজদারি কোনো মামলা নেই বলে হলফনামা থেকে জানা গেছে।

এদিকে বিএনপির প্রার্থী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি হাসান মামুন তাঁর হলফনামায় ১২টি মামলা রয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন। এর মধ্যে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে ১১টি মামলা রয়েছে। যার ৯টি মামলা ঢাকার পল্টন থানায় করা। তাঁর বিরুদ্ধে একটি সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা রয়েছে। এই মামলাগুলোর একটি বিচারাধীন এবং সব মামলায় তিনি জামিনে আছেন।

হাসান মামুনের বাড়ি দশমিনায়। সমাজবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর। তিনি গার্মেন্টস সামগ্রী সরবরাহকারী ব্যবসায়ী। তবে তিনি ব্যবসা থেকে কোনো আয় দেখাননি। তাঁর স্ত্রীর চাকরি থেকে আয় দেখানো হয়েছে ৬ লাখ ৮৭ হাজার টাকা। হাসান মামুনের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে কোনো অর্থ জমা নেই। তবে স্ত্রীর নামে ব্যাংকে জমা আছে ২২ লাখ টাকা এবং সঞ্চয়পত্র রয়েছে ৩ লাখ টাকার। দুজনের নামে ৬৫ ভরি স্বর্ণালংকার রয়েছে। এ ছাড়া অস্থাবর সম্পদ হিসেবে তিনি তাঁর ব্যবসায়ের পুঁজি দেখিয়েছেন ৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী কামাল খান। গলাচিপার বাসিন্দা কামাল খান এসএসসি পাস। তিনি ওষুধ ব্যবসায়ী এবং বছরে আয় করেন ২ লাখ ৬৫ হাজার টাকা। তাঁর কৃষিজমি রয়েছে ১২০ শতাংশ এবং এ থেকে বছরে আয় ১৪ হাজার ৪০০ টাকা। হাতে নগদ ১ লাখ টাকা এবং ব্যাংকে রয়েছে ৫০ হাজার টাকা। তাঁর স্ত্রীর পাঁচ ভরি স্বর্ণালংকার রয়েছে। এ ছাড়া ১ লাখ টাকার আসবাব ও ইলেকট্রিক সামগ্রী রয়েছে।

জাতীয় পার্টির প্রার্থী মো. সাইফুল ইসলামের বাড়ি দশমিনায়। তিনি কামিল পাস। পেশায় তিনি চাকরিজীবী। তাঁর আয়ের উৎস কৃষি খাত ও বাসাভাড়া। এ বাবদ তিনি বছরে আয় করেন ২ লাখ টাকা। তাঁর হাতে নগদ আছে ৫০ হাজার টাকা। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা আছে ৩ লাখ টাকা। সাইফুল ইসলামের একটি গাড়ি রয়েছে, যার দাম ৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা।

গণফোরামের প্রার্থী দশমিনা উপজেলার বাসিন্দা মোহাম্মদ উল্লাহ। এসএসসি পাস মোহাম্মদ উল্লাহ তাঁর ব্যবসা ও পেশার বিবরণীতে নিজেকে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের পরামর্শদাতা ও উৎসাহ প্রদানমূলক বক্তব্য দিয়ে থাকেন বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি পরামর্শদাতা হিসেবে বছরে আয় করেন ২ লাখ ২৫ হাজার টাকা। তাঁর হাতে নগদ ২০ হাজার ও ব্যাংকে রয়েছে ১ হাজার টাকা।

4 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন