২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার

সিটি মেয়র সাদিককে বিতর্কিত করতে ষড়যন্ত্রের ছক, নেপথ্যে কথিত মিডিয়া মোড়ল!

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৪:৩৮ অপরাহ্ণ, ২৮ অক্টোবর ২০২০

হাসিবুল ইসলাম, বরিশাল:: ক্লিন ইমেজের আওয়ামী লীগ নেতা ও বরিশাল সিটি কর্পোরেশন মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ’কে এবার বিসিক শিল্পনগরী ইস্যুতে বিতর্কিত করতে মাঠে নেমেছে একটি মহল। শিল্পপ্রতিষ্ঠান মালিকদের সভাপতি মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে গণঅনাস্থা এবং তাকে কমিটি থেকে অপসারণে ব্যবসায়ীদের মেয়রের কাছে হস্তক্ষেপ কামনার বিষয়টি ভিন্নভাবে উপস্থাপন করে প্রশাসনিক সুবিধা নিতে চাইছে। এবং বিসিকে চলমান অসন্তোস নিয়ে সিটি মেয়রের ওপর দোষ চাপাতে মহলটি দৌড়ঝাপ শুরু করেছে। যে কোন উপায়ে এই ইস্যুতে সাদিক আব্দুল্লাহকে বিতর্কিত করে মহলটি বিসিকে নিজেদের আধিপত্য ধরে রাখতে চাইছে। তাদের এই মিশন সফল করতে আড়ালে থেকে কলকাঠি নেড়ে সিটি মেয়রকে কাবু করতে নানান ছক এঁকে দিচ্ছে বরিশাল মিডিয়ার কথিত দুই মোড়ল! এক্ষেত্রে গুটি কয়েক আঞ্চলিক পত্রিকাকেও ব্যবহার করা হচ্ছে। অবশ্য তাদের এই গোপন ষড়যন্ত্রের বিষয়টি ইতিমধ্যে মেয়র আঁচ করতে পেরে সতর্ক ভাবে পথ চলতে শুরু করেছেন বলে জানা গেছে।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, বিসিকে চলমান অসন্তোসের কারণ হিসেবে সিটি মেয়রের অযাচিত হস্তক্ষেপ এবং উন্নয়ন কাজের অর্থে ভাগা বসানোর অভিযোগ এনে প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে প্রতিষ্ঠিত করে সরকারের দৃষ্টি কাড়তে চাইছে। এমনকি মঙ্গলবার সকালে এলাকাবাসীর প্রতিবাদ মানববন্ধনকেও বিসিক নিজের আয়ত্বে নিতে মেয়রের একটি সাজানো নাটক হিসেবে মাঠে চাউর করে দেওয়া হচ্ছে। অথচ এটি ছিল বিসিকে চলমান উন্নয়ন কাজে অনিয়ম-দুর্নীতি ও নানান সেচ্ছাচারিতার প্রতিবাদস্বরুপ স্থানীয়দের প্রথম পদক্ষেপ। যাতে বিসিক শিল্প মালিকদের স্বত:স্ফুর্ত অংশগ্রহণ দেখা যায়।

সূত্র জানায়, গতকালের ওই মানববন্ধনের পরেই অধিকাংশ ব্যবসায়ী সিটি মেয়রের সাথে দেখা করে তাদের সংগঠনের সভাপতি মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ তুলে ধরে অনাস্থা দেন এবং দ্রুত বিসিকের পুরাতন কমিটি ভেঙে নতুন করে গঠনে সহযোগিতা কামনা করেন। মেয়র বিসিক উন্নয়নের স্বার্থে পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিলে ব্যবসায়ীরা যেনো প্রাণ ফিরে পান। কিন্তু মেয়রের এই ইতিবাচক ভুমিকার বিরোধীতা করে ওই মহলটি তাকে বিতর্কিত করতে রাতে প্রশাসনের বিভিন্ন মহলে কড়া নাড়ে। সেই সাথে বরিশাল মিডিয়ায় সিটি মেয়রের বিরুদ্ধে এই ইস্যুতে নেতিবাচক সংবাদ প্রকাশে অনুরোধ রাখে। শোনা যাচ্ছে, কতিপয় মিডিয়াকে সংবাদ প্রকাশ করার জন্য অর্থও দেওয়া হয়েছে।

একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, মেয়র সাদিক বিরোধী ষড়যন্ত্রে সেই দুই কথিত মিডিয়া মোড়ল সম্পৃক্ত থেকে বিসিকে মহলটির আধিপত্য ধরে রাখতে নানান ছক বাতলে দেওয়াসহ প্রশাসনিক সুবিধা পেতে সহায়ক ভুমিকা রাখে। এবং এই ইস্যুতে মেয়রের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশের মাধ্যমে তাদের সাহস জোগানোর প্রতিশ্রুতি দেন। যার ফলশ্রুতিতে গুটি কয়েক মিডিয়ায় এলাকাবাসীর আন্দোলনকে বিসিক ধংসের আলামত হিসেবে উল্লেখ করে সংবাদ প্রকাশ করেছে। আবার ওই মিডিয়া মোড়লদের কাছের কেউ মেয়র সাদিকের বিসিক ইস্যুতে ইতিবাচক ভুমিকা নিয়ে অনলাইন নিউজপোর্টালে সংবাদ করলেও তা অনুরোধ করে বন্ধ করে দেওয়া হয়। এবং সাদিকের আস্থাভাজন রইচ আহম্মেদ মান্নার বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করে বেকায়দায় ফেলারও কৌশল নেওয়া হয়েছে। প্রথমে মামলা ও পরে নেতিবাচক সংবাদ প্রকাশ পেলে মান্না আইনে ঝুট-ঝামেলায় দৌড়ের ওপর রেখে সাদিককে দুর্বল করার এই সেফাও বাতলে দেয় দুই কথিত মিডিয়া মোড়ল।

সার্বিক পর্যবেক্ষণ বলছে, ব্যবসায়ীদের একট্টা হয়ে সিটি মেয়রের কাছে যাওয়া এবং বিসিকের চলমান উন্নয়ন প্রকল্পে লুটপাটসহ সেচ্ছাতারিতা প্রকাশ পাওয়ার পরে যেন দুই মিডিয়া মোড়লের রাতের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। সভাপতির মিজান পথ হারাতে বসে যতটা না চিন্তিত, তার চেয়ে ঢের আতঙ্কিত মিডিয়া মোড়লরা।

বিসিক ব্যবসায়ীদের একটি সূত্র জানায়, পুর্বের কমিটির নেতাদের সাথে ভাল সম্পর্ক রেখে ইতিমধ্যে সাংবাদিক পরিচয়ধারী একাধিক ব্যক্তি প্লট হাতিয়েছেন। এনিয়ে ব্যবসায়ীদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হলেও পুনরায় আরও কয়েকটি প্লট ওই দুই কথিত সাংবাদিক নেতাসহ বেশ কয়েকজনকে দেওয়ার তোড়জোড় শুরু হয়েছিল। সেই সাথে তাদের নানান ভাবে সহায়তা দেওয়া হয়। এই বিষয়টির বিরোধীতা করে একাধিক ব্যবসায়ী ইতিপুর্বে রোষানলে পড়লেও কোনঠাসা হয়ে যাওয়ার ভয়ে মুখ খোলেননি। অবশ্য এমন অভিযোগ মঙ্গলবারের ওই মানববন্ধন শেষে সিটি মেয়রকেও ব্যবসায়ীরা অবহিত করেন এবং সেচ্ছাচারিতার প্রতিকার চেয়েছেন।

এখন বাস্তবতা হচ্ছে, বিসিকে এত সমস্যা, অনিয়ম-দুর্নীতির পরে ব্যবসায়ীরা সমাধানে যখন সিটি মেয়রের হস্তক্ষেপ চেয়ে সুফল পেলেন ঠিক তখনই কথিত দুই মিডিয়া মোড়ল নেপথ্যে থেকে সেই মহলটিকে নয়া ষড়যন্ত্রের পথ দেখিয়ে জল ঘোলা করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। ইতিপুর্বেও সিটি মেয়রের ইতিবাচক কর্মকে নেতিবাচক হিসেবে উপস্থাপন করে এই দুই মিডিয়া মোড়ল ফায়দা লোটার চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়েছে। ফলে এবারও তাদের মিশন বাস্তবায়ন হচ্ছে না বা বিসিকের ব্যবসায়ীরা হতে দেবে না বলে ঘোষণা দিয়েছে।

কারণ সিটি মেয়র বুধবার পর্যন্ত বিসিক ইস্যুতে ব্যবসায়ীদের পরামর্শ দিয়েছেন তার সবগুলোই ইতিবাচক বলে শোনা গেছে। অবশ্য মেয়রও চাইছেন বরিশালের অর্থনীতির চাকা সচ্ছল রাখতে বিসিক নিয়ে সকল ষড়যন্ত্র রুখে দিতে।

সাদিক আব্দুল্লাহ ঘনিষ্ট একটি সূত্র জানায়, মেয়র ইতিমধ্যে দুই মিডিয়া মোড়লের ইশারায় মহলটি মাঠে নামার বিষয়টি ইতিমধ্যে অবগত হয়েছেন। এবং তাদের বিভিন্ন ষড়যন্ত্র সম্পর্কেও ধারণা পেয়েছেন। কিন্তু কোন ষড়যন্ত্রের ছক বাস্তবায়ন হতে দেবেন না ঘোষণা দিয়ে ব্যবসায়ীদের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

5 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন