২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার

সিনেটরদের শপথের মাধ্যমে ট্রাম্পের বিচার শুরু

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১১:৪৮ পূর্বাহ্ণ, ১৭ জানুয়ারি ২০২০

বার্তা পরিবেশক, অনলাইন:: যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্ট কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিশংসন বিচারের কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে। মার্কিন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি জন রবার্টস সেনেটরদের শপথ গ্রহণের মাধ্যমে বিচার কাজ শুরু করেন বলে জানা গেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে ট্রাম্প হলেন তৃতীয় প্রেসিডেন্ট যিনি উচ্চকক্ষ সিনেটে অভিশংসন বিচারের মুখোমুখি হচ্ছেন।

এর আগে গত ১৮ ডিনেম্বর সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদের অভিশংসিত হন ট্রাম্প। এবার চূড়ান্ত অভিশংসনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চকক্ষ সিনেটে বিচার শুরু হয়েছে। সেখানে দুই তৃতীয়াংশ ভেটে অভিশংসিত হলে প্রেসিডেন্ট পদ থেকে সরে দাঁড়াতে হবে ট্রাম্পকে। তবে সেই সম্ভবনা নেই বললেই চলে। কেননা সিনেট রিপাবলিকন দলের সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে। ইতিমধ্যেই সিনেট সদস্যরা ট্রাম্পের প্রতি নিজেদের সমর্থন ব্যক্ত করেছেন।

প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার ও কংগ্রেসের কাজে বাধা দেয়ার অভিযোগ পড়ে শোনানোর পর বৃহস্পতিবার দেশটির সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি জন রবার্টস সিনেট সদস্যদের শপথ পড়ান বলে বিবিসি জানিয়েছে।

মার্কিন কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটের মোট সদস্য সংখ্যা ১০০ জন। অভিশংসন বিচারে এসব সদস্য জুরির ভূমিকায় থাকবেন।

শুনানির পর এ জুরিরাই প্রতিনিধি পরিষদের আনা অভিযোগের ভিত্তিতে ট্রাম্পকে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হবে কিনা, সে সিদ্ধান্ত নেবেন।

বৃহস্পতিবার সিনেটের সার্জেন্ট অ্যাট আর্মস মাইকেল সি স্টেনজার উচ্চকক্ষের কার্যক্রম শুরু করেন। এরপর ডেমোক্রেট কংগ্রেসম্যান ও মামলার প্রধান বাদী অ্যাডাম স্কিফ প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে অভিযোগ পড়ে শোনান।

প্রতিনিধি পরিষদের গোয়েন্দা বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান স্কিফ ছাড়াও প্রতিনিধি পরিষদের বিচারবিভাগীয় কমিটির প্রধান জেরল্ড নেডলার, নিউ ইয়র্কের হাকিম জেফ্রিস, ক্যালিফোর্নিয়ার জো লফগ্রেন, কলোরাডোর জেসন ক্রো, ফ্লোরিডার ভাল ডেমিংস এবং টেক্সাসের সিলভিয়া গার্সিয়া সিনেটের এ বিচারে বাদীর ভূমিকায় থাকবেন।

অভিযোগ পড়ে শোনানোর পর প্রধান বিচারপতি রবার্টস সিনেটরদের ‘নিরপেক্ষভাবে বিচাররের’শপথ পড়ান। এরপর সিনেটের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশের নেতা মিচ ম্যাককনেল প্রেসিডেন্টের অভিশংসন বিচারের কার্যক্রম মঙ্গলবার স্থানীয় সময় দুপুর ১টা পর্যন্ত মুলতুবি ঘোষণা করেন।

এর আগে ডোনাল্ড ট্রাম্পের ইমপিচমেন্ট সংক্রান্ত বিলে স্বাক্ষর দান করেন প্রতিনিধি পরিষদের (হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভের) স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি।

এর আগে ট্রাম্পের অভিশংসন সংক্রান্ত বিলটি বুধবার পরিষদে ২২৮-১৯৩ ভোটে পাস হয়। কেবল মিনেসোটা রাজ্যের রিপাবলিকান সদস্য কলিন পিটারস এর বিরোধিতা করেন। বুধবার সন্ধ্যায় এক ভাব গম্ভীর পরিবেশে ট্রাম্পের ক্ষমতার অপব্যবহার এবং কংগ্রেসে বাঁধাদান সম্পর্কিত দুটি বিলে স্বাক্ষর দেন হাউস স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি। এরপরই সেটি সিনেটে পাঠানো হয়। যদিও সেখানে ট্রাম্পের বিপদ হওয়ার তেমন সম্ভবনা নেই বললেই চলে।

কেননা প্রেসিডেন্টের অপসারণের জন্য সিনেটের দুই-তৃতীয়াংশ সদস্যের সমর্থন লাগবে। আর সিনেট রিপাবলিকান দলের সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে। ইতিমধ্যেই সিনেট সদস্যরা ট্রাম্পের প্রতি নিজেদের সমর্থন ব্যক্ত করেছেন।

তাছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে ইমপিচমেন্টের জন্য কোনো মার্কিন শাসকেকে ক্ষমতা ছাড়তে হয়নি। মার্কিন ইতিহাসে ট্রাম্প হচ্ছেন তৃতীয় প্রেসিডেন্ট যিনি প্রতিনিধি পরিষদে অভিশংসিত হয়েছেন।

ট্রাম্পের অভিশংসনের বিচার শুরু হওয়ার কথা রয়েছে আগামী সপ্তাহ থেকে। তবে সিনিটের সংখ্যাগরিষ্ঠদের নেতা মিচ ম্যাককনেল বলেন, এ সপ্তাহের মধ্যেই সমস্ত প্রক্রিয়া সেরে ফেলা হবে। আর ট্রাম্পের বিচার শুরু হবে মঙ্গলবার থেকে। স্থানীয় সময় দুপুর ১টা থেকে শুরু হবে বিচার প্রক্রিয়া। সোম থেকে শনিবার সপ্তাহের ৬ দিনই বিচার চলবে বলেও জানান তিনি।

বিচারে ট্রাম্পের পক্ষে কারা লড়বেন, হোয়াইট হাউস তা এখনও না জানালেও প্যাট সিপোলোনে ও জে সেকুলো প্রেসিডেন্টের কৌঁসুলিদের নেতৃত্ব দেবেন বলে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।

এদিকে হোয়াইট হাউস সংবাদিকদের জানিয়েছে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের পক্ষে মামলা খুব সহজ হবে এবং এই বিচার প্রক্রিয়া দুই সপ্তাহের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে।

1 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন