২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

সিফাতের মুক্তির দাবিতে বামনায় মানববন্ধন, পুলিশের লাঠিচার্জ (ভিডিও)

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০২:৪০ অপরাহ্ণ, ০৮ আগস্ট ২০২০

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল:: কক্সবাজারের টেকনাফে অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যার সময় পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয় মেজর রাশেদের সাথে থাকা শিক্ষার্থী শাহেদুল ইসলাম সিফাত। সেই থেকে তাকে কারাগারে বন্দি রেখেছে পুলিশ। সিফাতের সাথে তার স্বজনদেরও দেখা করতে দেয়া হচ্ছে না।

শনিবার (৮ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে সিফাতের নিজ এলাকা বরগুনার বামনায় তার মুক্তির দাবিতে মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়েছিলো। কিন্ত বমনা থানা পুলিশের ওসি ইলিয়াস হোসেনসহ পুলিশ সদস্যদের লাঠিচার্জে মুহুর্তের মধ্যেই তা পন্ড হয়ে যায়। পুলিশের লাঠিচার্জে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী দুপুর ১২টার দিকে বামনায় মানববন্ধন কর্মসূচি শুরু করেন সিফাতের সহপাঠীরা। বামনার কলেজ রোড সড়কে শান্তিপূর্ণভাবে চলা মানববন্ধনে হঠাৎ পুলিশের একটি টিম এসে ব্যানার-ফেস্টুন ছিনিয়ে নেয়। এরপরও শান্তিপূর্ণভাবে মানববন্ধন কর্মসূচি চলছিল। এ সময় বামনা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইলিয়াস হোসেন এসে মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীদের প্রথমে গালিগালাজ এবং পরে ওসি নিজেই লাঠিচার্জ শুরু করে অন্যান্য সদস্যদের লাঠিচার্জের নির্দেশ দেন। এতে মুহূর্তেই মানববন্ধন পণ্ড হয়ে যায়।

পুলিশের লাঠিচার্জে আহত একাধিক সহপাঠিরা জানান, সিফাত অত্যন্ত ভালো ছেলে। আর যাই হোক সিফাতের বিরুদ্ধে মাদকের অভিযোগ কোনো ভাবেই যায় না। মিথ্যে মামলায় নির্দোষ সিফাত জেলে রয়েছে। তার মুক্তির জন্য মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেছিলাম। কিন্তু পুলিশ প্রথমে আমাদের মানববন্ধনের ব্যানার-ফেস্টুন ছিনিয়ে নেয়। এরপরও আমরা শান্তিপূর্ণভাবে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছিলাম। পরে বামনা থানার ওসি এসে আমাদের ওপর নির্বিচারে লাঠিচার্জ করে। এমনকি সিফাতের মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন করায় পুলিশ আমাদের দুষ্কৃতকারী বলে আখ্যা দিয়েছে।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, নাতির মুক্তির দাবিতে মানববন্ধনে আসায় সাংবাদিকদের সামনে সিফাতের নানা মো. আইউব আলী হাওলাদারকে গালমন্দ করার পাশাপাশি হুমকি দিয়েছে পুলিশ।
সিফাতের নানা মো. আইউব আলী হওলাদার বলেন, পুলিশ আজ যা করেছে তা মোটেও ঠিক হয়নি।

এ বিষয়ে বামনা থানা পুলিশর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইলিয়াস হোসেন বলেন, আমাদের অনুমতি না নিয়ে একদল দুষ্কৃতকারী রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করছে বলে আমি জানতে পারি। সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হবে বলে মানববন্ধন বন্ধ করে দিয়েছি।

এদিকে সিফাতের স্বজন ও স্থানীয়রা জানান, এক ভাই ও এক বোনের মধ্যে সিফাত বড়। সিফাতের একমাত্র বোন অনন্যা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। ১০ বছর আগে বাবা-মায়ের বিবাহ বিচ্ছেদের পর সিফাতের মা শিরীন আক্তার শিলা ৯ বছর ধরে লন্ডন প্রবাসী। আরা বাবা মো. মোস্তফা থাকেন ঢাকায়।

সিফাতের শৈশব ও কৈশর কেটেছে বরগুনার বামনা উপজেলার পশ্চিম সফিপুর গ্রামের নানা বাড়িতে। বামনার সরকারি সারওয়ার জান মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ২০১৪ সালে এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন সিফাত। এরপর বামনা সরকারি ডিগ্রি কলেজ থেকে ২০১৬ সালে এইচএসসি পাস করে ভর্তি হন স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগে। ঢাকায় ভর্তি হওয়ার পর খালার বাসায় থেকে লেখাপড়া করতেন সিফাত। বছরে দু-চারবার বামনা আসলেও ছবি তোলার নেশায় ক্যামেরা আর ট্রাইপড নিয়ে পড়ে থাকতেন।

ভিডিও দেখতে এখানে ক্লিক করুন

3 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন