বরিশাল টাইমস রিপোর্ট
প্রকাশিত: ০১:০৬ অপরাহ্ণ, ০১ অক্টোবর ২০২০
সাইফুল ইসলাম, বরিশাল:: বহুল আলোচিত পর্যটনকেন্দ্র পেয়ারা বাগান। প্রতিবছর হাজারও দর্শনার্থী দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ঘুরতে আসে পেয়ারাবাগানে। আটঘর কুরিয়ানা থেকে ভিমরুলি যেতে প্রধান ব্রিজটি এখন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। প্রতিদিন এই বিপদজনক ব্রিজ পার করতে হয় অসংখ্য অটোগাড়ি, ভ্যান, মোটরসাইকেল, যেকোনো মুহূর্তে গাড়িসহ ভেঙে পড়তে পাড়ে ব্রিজটি। ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা ঘটার আশংকা রয়েছে। জনমনে আতংক নিয়ে পারাপার হতে বাধ্য হচ্ছে হাজারও জনগণ। ব্রিজের ওপর কাঠ ব্যবহার করে পারাপার হচ্ছে মানুষ ও গাড়ি। চারটি পিলারের একটি পিলার ভাঙা থাকায় এক পাশ নিচু হয়ে গেছে। এখান থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে রপ্তানি হয় পেয়ারা। সব সময় থাকে লোকেলোকারন্য, দূর-দূরান্ত থেকে সময় কাটাতে প্রতিনিয়ত পর্যটক এসে পাড়ি জমাচ্ছে বহুল আলোচিত এই পেয়ারা বাগানে। প্রাই পর্যটকদের পড়তে হয় বিপাকে। যে কোনো সময় ভেঙে যেতে পারে ব্রিজটি। ভয়ভীতি নিয়ে ব্রিজ পারাপার করছে এলাকাবাসী।
স্থানীয় সূত্র জানায়, বিগত ৫-৬ বছর ধরে বেহাল অবস্থা আছে ব্রিজটি। কর্তৃপক্ষের নেই কোনো মাথা ব্যথ্যা। আশার আলো দেখেছে বহুবার। ব্রিজটি মেরামত করার জন্য একাধিক বার মাপজোক করা হলেও বাস্তবে তার কোনো রুপ নেয়নি। ব্রিজটি নিয়ে ভোগান্তিতে দিন কাটাচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দারা। প্রতিবার আশার আলো দেখানো হলেও তা রয়ে যায় অন্ধকারের ওই পিছনের ঘরটাতেই, যা আদৌ পূরণ হবে কিনা তা নিয়ে আছে অনিশ্চয়তার মধ্যে পর্যটকসহ এলাকাবাসীরা।
স্থানীয় বাসিন্দা সুভ্রত মন্ডল বরিশালটাইমসকে জানান, মাস খানেক আগেও ইঞ্জিনিয়ার এসে মাটি পরীক্ষাসহ বিভিন্ন কার্যক্রম সম্পন্ন করে চলে যায়। একইভাবে বেশ কয়েকবার উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এসে পরীক্ষা চালায় কিন্তু কোনো কাজের অগ্রসর হয়নি, শুধুই আসার আলো নিয়ে দিনযাপন করছে পর্যটকসহ আটঘর কুরিয়ানার বাসিন্দারা।
আরও জানান, স্থানীয় একটি ক্লাবের পক্ষ থেকেও মেরামত যেনো করা হয় সেই বাবদ ১০ হাজার টাকা উত্তোলন করে দেওয়া হয় তবুও ফল মেলেনি। প্রতিদিন মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে পুরোনো এই ব্রিজ পারাপার করছে স্কুল শিক্ষার্থীসহ শতাধিক মানুষ ও যানবাহন। কয়েক গ্রামের মানুষ প্রতিদিন এই ব্রিজ পারাপার করে। পেয়ারার মৌসুমে থাকে উপচেপড়া ভিড়, তৈরি হয় প্রতিনিয়ত মিনি যানযট। অনিহা আসে ভ্রমণে অনেক পর্যটকের, কখনও কখনও আবার গাড়ির চাকা ব্রিজের গর্তে পড়ে যায়।
পর্যটক সূত্র জানায়, ভাঙা ব্রিজের জন্য তাদের যাতায়াত ব্যবস্থার ব্যাপক বিঘ্ন ঘটছে। পর্যটকদের দাবি- এই ব্রিজ সংস্করণ হলে তুলনামূলক বেড়ে যাবে অনেকগুণ পর্যটক। ব্রিজ থেকে গাড়ি নিতে কেউ কেউ দিধার মধ্যে পড়ে যায়। নবগ্রাম থেকে কুরিয়ানার রাস্তা কাছে থাকাতেও তাদের প্রায় ৫ কিলোমিটার ঘুরে নবগ্রাম-ঝালকাঠির হাইওয়ে রোড ঘুরে যেতে হচ্ছে পেয়ার বাগান। ভোগান্তির যেনো অবসান ঘটে তার জন্য কর্তৃপক্ষের জোরালো ভূমিকার আহ্বান জানায় পর্যটকরা। বড় ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পেতে হলে এর সংস্কার করা আবশ্যক।
স্থানীয়দের দাবি, ব্রিজটি নিয়ে ভোগান্তি বৃদ্ধির আগেই যেনো দ্রুত সংস্কারের ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
স্থানীয় নেতৃবৃন্দের সহায়তা চাচ্ছেন অসহায় জনগণ এবং পর্যটনকেন্দ্রে পর্যটক বাড়াতে ও গাড়ি নিয়ে চলাচল করার জন্য যথাসম্ভব দ্রুত ব্রিজ সংস্কারের কাজ শুরু করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে পর্যটকসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ। যত দ্রুত ব্রিজটি সংস্কার হবে ততই পর্যটক বৃদ্ধি পাবে এবং আরও জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি হবে আটঘর কুরিয়ানার এটাই এলাকাবাসীর মন্তব্য।’