২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

সোনার খনি থেকে উদ্ধার দুই ‘ভীমরুলের চাক’ নিয়ে রহস্য কাটেনি আজও

বিশেষ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ০৬:১৮ অপরাহ্ণ, ২৩ অক্টোবর ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল >> ইতিহাসে এমন কিছু বিষয় থাকে যেগুলোর কোনো অর্থ খুঁজে পাওয়া যায় না। আজীবন সেগুলো বিস্ময় হয়েই রয়ে যায়। তেমনই একটি হল ‘হর্নেট বলস’।

সোনার খনি থেকে এক সময় উদ্ধার হয়েছিল বিশালাকার এই বল দু’টি। খনিতে কেন এই বল দু’টি ছিল, এর কাজ কী ছিল— এ সব প্রশ্নের কোনো উত্তর এখনও জানা যায়নি। সারা বিশ্বের কাছে এই বল দু’টি আজও বিস্ময়।

খনি অঞ্চল হিসেবে জনপ্রিয় আমেরিকার ভার্জিনিয়া। এলাকা জুড়েই একাধিক খনি রয়েছে। ১৯ শতক জুড়ে ভার্জিনিয়ায় একের পর এক সোনার খনির সন্ধান পাওয়া যায়। সে সময় একটি খনি থেকে ওই দু’টি বল উদ্ধার হয়েছিল।

১৯৯৮ সাল থেকে বল দু’টি রাখা রয়েছে ভার্জিনিয়ার মনরো পার্কের গোল্ড মাইনিং ক্যাম্প জাদুঘরে। ভার্জিনিয়ার খনি অঞ্চলের ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে ওই জাদুঘরে। সেখানেই পার্কের মধ্যে রাখা রয়েছে বল দু’টি।

দেখতে বড় আকারের কলসির মতো ভেতরটি ফাঁকা। আর মুখটি লোহার জাল দিয়ে আটকানো। বলটি তৈরিও হয়েছে লোহার কাঠামোর ওপর।

লোহার কাঠামোর ওপর সিমেন্টের আস্তরণ দিয়ে বানানো বল দু’টি সাত ফুট উঁচু। এর পরিধি প্রায় ২০ ফুট। এক একটি বলের ওজন ছয় হাজার ৩৫০ কিলোগ্রাম। ফলে শুধু আকারেই নয়, ওজনেও বল দু’টি আক্ষরিক অর্থেই দানবীয়।

খনিতে এই বল দু’টির খোঁজ মেলার পর থেকেই বলের কাজ নিয়ে নানা মত প্রকাশ্যে এসেছে। অনেকের মত, খনির আকরিক গুঁড়ো করে সোনা আলাদা করতে কাজে লাগানো হত এগুলো। একটি দণ্ডের দু’পাশে বল দু’টি আটকানো হলে এটি যন্ত্রের মতো কাজ করত। ঘোড়া বা কোনো শক্তিশালী প্রাণীর সাহায্যে দণ্ড ঘুরিয়ে বল দু’টিকে পেষণ যন্ত্রের মতো ব্যবহার করা হত বলে মনে করা হয়।

কেউ কেউ মনে করেন, খনি থেকে উদ্ধার হওয়া পাথর-আকরিক বলের ভিতরে রেখে তার পর সেটিকে খুব জোরে ঘোরানো হত। এতে প্রয়োজনীয় বস্তু পাথর থেকে আলাদা হয়ে পড়ে। তা সহজেই সংগ্রহ করে নেওয়া যায়।

তবে বলগুলো নিয়ে রহস্য এখনও কাটেনি। বলগুলোর নাম রাখা হয়েছিল ‘হর্নেট’। এমন নামকরণ নিয়েও ভিন্ন মত রয়েছে। অনেকেরই মত, দেখতে অনেকটা ভীমরুলের চাকের মতো হওয়াতেই এর নাম রাখা হয়েছে ‘হর্নেট’। ইংরেজিতে ভীমরুলকে ‘হর্নেট’ বলা হয়।

কারও মতে, এর ভেতরে পাথর দিয়ে ঘোরানোর সময় খুব জোর শব্দ তৈরি হয়। ভালোভাবে শুনলে মনে হতে পারে যেন এক ঝাঁক ভীমরুল উড়ে বেড়াচ্ছে। সে কারণেই এমন নামকরণ বলে মনে করেন অনেকে।

এই বলগুলো নিয়ে ধোঁয়াশা কাটেনি আজও। মনরো পার্ক জাদুঘরে সেই বিস্ময় জাগিয়েই পর্যটকদের প্রধান আকর্ষণের কারণ হয়ে রয়ে গিয়েছে ‘হর্নেট বলস’।

সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা

2 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন