১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

হাতে লেখা পৃথিবীর সবচেয়ে বড় কুরআন শরিফ

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০২:৫১ অপরাহ্ণ, ০৬ জানুয়ারি ২০২৩

হাতে লেখা পৃথিবীর সবচেয়ে বড় কুরআন শরিফ

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল:: সর্ববৃহৎ পবিত্র কুরআন হাতে লিখে সম্পন্ন করার দাবি করেছেন সাতক্ষীরার হাবিবুর রহমান। ১৪২ পাতার এ কুরআন শরিফের দৈর্ঘ্য ১১ ফুট (৩৩৫ সেন্টিমিটার) ও প্রস্থ ১৭ ফুট ৪ ইঞ্চি (২৬৪ সেন্টিমিটার)। এর ওজন ৪০৫ কেজি। লাল, নীল, সবুজ ও কালো রঙের চারটি কলাম করা হয়েছে।

হাবিবুর রহমান জানান, তিনি মাদরাসায় না পড়লেও নিজ উদ্যোগে আরবি পাঠ ও লেখা শেখেন। ২০০৩ সালে সাতক্ষীরা শহরের পিএন মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করে ২০০৫ সালে এইচএসসি ও পরবর্তী সময়ে এলএলবি সম্পন্ন করেন। ২০১৩ সালের দিকে সাতক্ষীরা শহরের সমাজসেবা অফিসে কম্পিউটার ইনস্ট্রাক্টর হিসেবে কাজ করলেও বর্তমানে ব্যবসা করেন।

সমাজসেবা অফিসে কাজ করার সময় থেকে সমাজের অসহায়, অবহেলিত, গরিব মানুষের দুরাবস্থা দেখে তাদের পাশে থেকে চিকিৎসাসেবার জন্য কিছু একটা করার ইচ্ছা হয় তার। তখন থেকে তিনি চিন্তা করেন এমন কিছু করবেন, যেটি বিশ^রেকর্ড করবে। সেই চিন্তা থেকেই বিশ্বের সবচেয়ে বড় কুরআন হাতে লেখার ইচ্ছা হয় তার। ২০১৬ সালের পহেলা জানুয়ারি পবিত্র কুরআন হাতে লেখা শুরু করে ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ শেষ করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, দীর্ঘ ৬ বছর ৮ মাস ২৩ দিন অক্লান্ত পরিশ্রম করে ১৪২ পাতার কুরআন হাতে লিখেছি। লাল, নীল, সবুজ ও কালো রঙের চারটি কলাম শোভা বাড়িয়েছে ঐশী বাণীর। এতে ৩৪০৮টি আর্ট পেপার ও ৬৬০টি কলম ব্যবহার করেছি। এ ছাড়া এক পাতা লেখা হলেও অন্য পাতা ফাঁকা রাখা হয়েছে। মার্জিন ডিজাইনে আল্লাহর নাম লেখা হয়েছে। সেখানে সর্বমোট সাড়ে ৩ লাখ বার আল্লাহর নাম লেখা হয়েছে। এটি ৩৩৫ সেন্টিমিটার (১১ ফুট) দৈর্ঘ্য ও ২৬৪ সেন্টিমিটার (১৭ ফুট ৪ ইঞ্চি) প্রস্থ। ইউটিউব দেখে তিনি এ ব্যাপারে অভিজ্ঞতা নিয়েছেন বলে জানান। ৬টি কুরআন শরিফ দেখে তিনি এটি লিখেছেন। এটি লেখার পর তিনজন হাফেজ এবং একজন মাওলানা দিয়ে পুরো কুরআন শরিফ পড়ানো হয়েছে। তারা বলেছেন, কোনো সমস্যা নেই।

হাতে লেখা পৃথিবীর সবচেয়ে বড় কুরআন শরিফ কীভাবে দাবি করছেন, এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন গণমাধ্যমের তথ্য মতে, দুবাই এক্সপোতে ২০২০ সালে বড় একটি কুরআন প্রদর্শিত হয়েছিল। সেটার দৈর্ঘ্য ছিল ২৫৯ সেন্টিমিটার (৮. ৫ ফুট) ও প্রস্থ ছিল ১৯৮ সেন্টিমিটার (৬.৫ ফুট) এবং আমার লেখা ১৪২টি পাতা কুরআনের ৩৩৫ সেন্টিমিটার (১১ ফুট) দৈর্ঘ্য ও ২৬৪ সেন্টিমিটার (১৭ ফুট ৪ ইঞ্চি) প্রস্থ। সে কারণেই এটিকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় হাতে লেখা কুরআন শরিফ বলে দাবি করছি। তিনি আরও বলেন বিশ্বের কোনো সহৃদয়বান আমার এ কুরআন শরিফ সংগ্রহ করলে সেই অর্থ দিয়ে একটি হাসপাতাল করার ইচ্ছা আছে তার। সাতক্ষীরা মসজিদে কুবার ইমাম হাফেজ মাওলানা মুফতি সাইফুল ইসলাম বলেন, হাবিবুর রহমানের হাতে লেখা কুরআন শরিফ কয়েক পারা পড়ে নির্ভুল পেয়েছি। ৩০ পারার ঝকঝকে হরফে লেখা ১১৪টি সুরার এই কুরআন দেখে বোঝার উপায় নেই এটি ছাপা নাকি হাতে লেখা। বিশ্বের কোনো সংস্থা এটিকে তাদের সংগ্রহে রাখুক, এই প্রত্যাশা করি।

জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কারপ্রাপ্ত ও সাবেক ফিফার রেফারি তৈয়ব হাসান সামছুজ্জামান বাবু বলেন, সাতক্ষীরার হাবিবুর রহমানের হাতে লেখা কুরআন শরিফটি মসজিদে কুবায় সম্প্রতি দুদিনব্যাপী প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। পুরুষ-নারীসহ কয়েক হাজার মানুষ এটি দেখতে আসেন।

সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক হুমায়ুন কবির বলেন, হাবিবুর রহমানের হাতে লেখা কুরআন শরিফ বিশ্বের বড় কুরআন কি না ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে সেটা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।’

12 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন