স্বাধীনতার ৪৭ বছর পার হয়ে গেলেও পিরোজপুরের স্বরূপকাঠি উপজেলার ৬ শহীদ মুক্তিযোদ্ধার সন্ধান পাননি তাদের পরিবার। অপরদিকে আজও মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় তাদের নাম গেজেটভুক্ত করা হয়নি।

এই ৬ শহীদ মুক্তিযোদ্ধারা হলেন- উপজেলার দক্ষিণ পূর্ব সোহাগদল গ্রামের এস এম শাহ আলম সরদার, মো. সোহরাব আলী, মো. আইয়ুব আলী হাওলাদার, আব্দুল হাই (আবুল), মো. মাকসুদুর রহমান (মোকছেদ মোল্লা) এবং পার্শ্ববর্তী গণমান গ্রামের জহর আলী শেখ।

বিজয়ের মাস ডিসেম্বর। দীর্ঘ ৯ মাস সশ্রস্ত্র লড়াই সংগ্রামের মধ্যদিয়ে এ দেশ স্বাধীন হয়। ১৯৭১ সনে মহান মুক্তিযুদ্ধে এ দেশের অগণিত ছাত্র, যুবকসহ স্বাধীনতাকামী সর্বস্তরের জনতা ঝাপিয়ে পড়েছিল মুক্তি সংগ্রামে। দেশের অগণিত মুক্তিকামী মানুষ মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে বিজয় বেশে বাড়ি ফিরে আসেন। অনেক মুক্তিযোদ্ধা সমর যুদ্ধে শহীদ হলেও তাদের আত্মীয় স্বজনরা তাদের সন্ধান পেয়েছেন। কিন্তু স্বরূপকাঠির ওই ৬ শহীদ মুক্তিযোদ্ধারা নিজ নিজ বাড়িতে ফিরে আসেননি এবং শহীদ মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতিও মেলেনি।

পারিবারিক সূত্রগুলো জানায়- মুক্তিযুদ্ধ শুরুর দিকে এস এম শাহ আলমের নেতৃত্বে অপারাপর পাঁচ মুক্তিযোদ্ধা দেশকে পরাধীনতার শিকল ও দেশকে হানাদার মুক্ত করতে স্বাধীন বাংলাদেশ গড়ার দীপ্ত শপথ নিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিতে বাড়ি থেকে বের হয়ে যান। দীর্ঘ নয় মাস লড়াই সংগ্রামের মধ্যদিয়ে ১৬ ডিসেম্বর অর্জিত হলো মহান বিজয়। বিশ্বের মানচিত্রে স্থান করে নিল স্বাধীন বাংলাদেশ। দেশ মাতৃকার তরে আত্মহুতি দেওয়া অনেক শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের মতো ওরাও শহীদ মুক্তিযোদ্ধা। ৬ শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের অভিভাবকরা আমৃত্যু প্রহর গুণতেন স্বাধীন দেশে বীরের বেশে ফিরে আসবে তাদের সূর্য সন্তানেরা। কিন্তু পরিবারগুলো আজও খুঁজে পায়নি স্বাধীনতাকামী তাদের সন্তানদের, পায়নি সন্তানদের মৃতদেহ, হদিস মেলেনি তাদের কোনো কবরের।

উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মো. জাহিদ হোসেন বলেন- ওই সকল মুক্তিযোদ্ধাদের নাম গেজেটভুক্ত হয়নি।

শহীদ মুক্তিযোদ্ধা এস এম শাহ আলম সরদারের ভাই অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক এস এম জাহাংগীর হোসেন বলেন, তার ভাইসহ অপর পাচজন শহীদদের নাম অদ্যবধি মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত না হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেন তিনি।

তবে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে স্বাধীনতা যুদ্ধে আত্মহুতি দেওয়া ওই ছয় শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে দক্ষিণ পুর্ব সোহাদল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন সড়কের পাশে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়েছে বলে তিনি জানান।’