২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার

ঝালকাঠির মহাসড়ক থেকে সরানো হচ্ছে স্পীড ব্রেকার

বরিশালটাইমস, ডেস্ক

প্রকাশিত: ১১:১৩ পূর্বাহ্ণ, ৩০ আগস্ট ২০২২

ঝালকাঠির মহাসড়ক থেকে সরানো হচ্ছে স্পীড ব্রেকার

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল: বরিশাল-খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়ক এবং বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়ক ঝালকাঠির ওপর দিয়ে চলে গেছে । এ মহাসড়কের ৫৪ কিলোমিটারে অর্ধশতাধিক স্পিড ব্রেকার রয়েছে। ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় এ স্পিড ব্রেকারগুলো টপকাতে হয় প্রতিটি যানবাহনকে।

মহাসড়কের এই স্পিড ব্রেকারগুলো সরিয়ে নিচ্ছে সড়ক ও জনপদ বিভাগ। পদ্মাসেতু উদ্বোধনের পর আগামি ৪ সেপ্টেম্বর উদ্বোধন হতে যাচ্ছে বরিশাল-খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কের কঁচা নদীর ওপর নির্মিত বেকুটিয়া সেতু।

এ সেতুটির নামকরণ করা হয়েছে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব অষ্টম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু। নির্বিঘ্নে যান চলাচল করতে এসব ব্রেকারগুলো উঠিয়ে ফেলা হচ্ছে।

স্পিড ব্রেকারের স্থানগুলোতে জেব্রা ক্রসিং দিয়ে পথিকের স্বাভাবিক চলাচলের ব্যবস্থা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ঝালকাঠি সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ মো. নাবিল হোসেন।

ঝালকাঠি জেলায় কতগুলো স্পিড ব্রেকার রয়েছে তার সঠিক পরিসংখ্যান নেই কোনো দপ্তরেই। ঝালকাঠি জেলার প্রায় সব সড়ক ও মহাসড়কে অপরিকল্পিত আর অবৈধ স্পিড ব্রেকারের দখলে।

জানা গেছে, বরিশালের সীমান্তবর্তী কালিজিরা ব্রিজের পশ্চিম পাড় থেকে ঝালকাঠি জেলার এরিয়া থেকে শুরু হয়ে পিরোজপুর জেলার ভান্ডারিয়া উপজেলার সীমান্ত পর্যন্ত ৩৯ কিলোমিটার মহাসড়ক রয়েছে।

আবার এ সড়কেরই রাজাপুর মেডিক্যাল মোড় থেকে বেকুটিয়া ব্রিজের পূর্বে কাউখালী উপজেলার সীমান্ত পর্যন্ত আট কিলোমিটার মহাসড়ক রয়েছে। অপরদিকে, জেলার নলছিটি উপজেলার খায়েরহাট ব্রিজ থেকে পটুয়াখালীগামী সাত কিলোমিটার সড়ক রয়েছে।

জেলার মোট ৫৪ কিলোমিটার মহাসড়কে স্পিড ব্রেকার ছিলো অর্ধশতাধিক। যা গড়ে প্রতি কিলোমিটারে একটি করে স্পিড ব্রেকার দেওয়া হয়েছিলো। সূত্র মতে, সড়ক ও মহাসড়কে বিপুলসংখ্যক স্পিড ব্রেকার কিভাবে বসল তার কোনো তথ্য নেই খোদ সড়ক বিভাগের কাছে।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দাবি, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতাদের চাপে এগুলো বসানো হয়েছিলো। সড়ক-মহাসড়কে স্পিড ব্রেকার দেওয়ার বিধান নেই। দিক নির্দেশক চিহ্ন এবং পথচারী পারাপারের জেব্রা ক্রসিংয়ের বাইরে এসব সড়কে থাকতে পারে শুধু র‌্যাম্বেল স্ট্রেট (আধা ইঞ্চি উঁচু বিট এক সঙ্গে ছয় থেকে আটটি)।

অথচ বিপজ্জনক স্পিড বেকারগুলো বসিয়ে শুধু গাড়ির ক্ষতিই করা হচ্ছেনা, দুর্ঘটনার আশঙ্কাও বাড়িয়ে তোলা হচ্ছে কয়েকগুণ। সরেজমিনে দেখা গেছে, সড়কের পাশে ৫-৭টি দোকান থাকলেই তার দু’প্রান্তে বসিয়ে দেওয়া হয়েছিলো দুটি স্পিড ব্রেকার।

কোথাও কোথাও প্রভাবশালী কারো বাড়িতে প্রবেশের শাখা সড়ক কিংবা বিত্তশালী শিল্প মালিকের কারখানার সামনেও তৈরি করে রাখা হয়েছে জোড়ায় জোড়ায় গতিরোধক।

যেমনটা দেখা গেছে বরিশাল থেকে ঝালকাঠির পথে আমিরাবাদ, রায়াপুর, ষাটপাকিয়া, ভৈরবপাশা, প্রতাপ, ঢাপড়, সুতালড়ি, পেট্রোলপাম্প মোড় এলাকায়। অবস্থাটা এমন হয়েছে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে যার যেখানে ইচ্ছে হয়েছে সেখানেই স্পিড ব্রেকার বসিয়েছে।

ঝালকাঠি-রাজাপুর সড়কে নৈকাঠি বাজার সংলগ্ন একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সামনে দুইটি স্পিড ব্রেকার বসানো হয়েছিল। যেখানে রাতে এক অটোরিকশা চালক উল্টে প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। পরে ওই ঠিকাদার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ মামলার ভয়ে পরেরদিনই স্পিড ব্রেকার তুলে নেয়।

ঝালকাঠি সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ মো. নাবিল হোসেন বলেন, সড়কে মসৃণ গতিতে যানবাহন চলাচল করবে এটাই মূলত সড়ক ও সেতু বিভাগের দায়িত্ব।

সড়ক বিধিতে স্পিড ব্রেকার বলতে কিছু নেই। উন্নত দেশগুলোতেও একই নিয়ম বিদ্যমান। তারপরেও আমাদের দেশের বাস্তবতায় এটা পুরোপুরি পালন করা সম্ভব হয় না। কিছু স্পিড ব্রেকার আমাদের দিতে হয়েছে

। কিন্তু যৌক্তিক প্রয়োজনীয়তার বাইরে চাপের মুখে বা আমাদের অজান্তে বেশিরভাগ স্পিড ব্রেকার বসানো হয়েছে। পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পরে ৪ সেপ্টেম্বর বেকুটিয়া সেতুও উদ্বোধন হতে যাচ্ছে।

উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী সড়কে মসৃণ চলাচলের জন্য স্পিড ব্রেকার উঠিয়ে নেওয়া হচ্ছে। সে স্থানগুলোতে জেব্রা ক্রসিং দিয়ে পথচারীদের স্বাভাবিক চলাচলের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

7 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন