২২ িনিট আগের আপডেট সকাল ৯:১৭ ; শনিবার ; ডিসেম্বর ২, ২০২৩
EN Download App
Youtube google+ twitter facebook
×

পাকিস্তানের তোষামোদকারীরা যেন ইতিহাস বিকৃতির সুযোগ না পায়

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট
১০:৫১ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১৮, ২০১৭

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাঙালি জাতি স্বাধীন বাংলাদেশ লাভ করলেও পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট তাকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যার পর ইতিহাস মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছিল বলে অভিযোগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, পাকিস্তানের তোষামোদকারী-চাটুকার-প্রেতাত্মারা আর যেন ইতিহাস বিকৃতির সুযোগ না পায়, সেজন্য সমগ্র বাংলাদেশের মানুষকে জাগ্রত হতে হবে। শনিবার (১৮ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত নাগরিক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এসব কথা বলেন। বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ ইউনেস্কো ঘোষিত ‘বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্যে’র স্বীকৃতি পাওয়ায় নাগরিক কমিটির ব্যানারে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে বঙ্গবন্ধু বাঙালির অধিকার আদায়ের সংগ্রাম করতে গিয়ে তার জীবনের সোনালী সময় কারাগারের অন্তরালে কাটিয়েছেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা লাভের পর মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় সেই বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। এরপর বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাঙালি জাতির ২৩ বছরের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস, তার ৭ মার্চের ভাষণ এবং মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়।

ইতিহাস বিকৃতির জন্য পাকিস্তানের এ দেশীয় দোসরদের অভিযুক্ত করে বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ওই পাকিস্তানের খোশামোদী, তোষামোদী, চাটুকার-প্রেতাত্মারা ৭ মার্চের ভাষণ পর্যন্ত মুছে ফেলতে চেয়েছিল। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর একটা সময় এই ভাষণ পর্যন্ত বাজানো নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। কিন্তু মুজিব সৈনিকেরা শত নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার হয়েও এই ভাষণ বাজাতে থাকেন, এই ভাষণকে বাঁচিয়ে রাখেন। ‘সেই ইতিহাস চাইলেও তারা মুছে ফেলতে পারেনি। ইতিহাস মুছে ফেলা যায় না। এখন এই ভাষণ ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের দলিল হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। কিন্তু যারা এই ভাষণ মুছে ফেলতে চেয়েছিল, তাদের কি এখন লজ্জা হয় না?’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইউনেস্কোর এই স্বীকৃতি শুধু স্বীকৃতি নয়। ইতিহাসও যে প্রতিশোধ নেয় তার প্রমাণ। ইতিহাস ঠিকই তার সত্য অবস্থান করে নেয়। শুধু বাংলাদেশ নয়, আজ পুরো বাঙালি জাতি, মুক্তিযুদ্ধে আত্মদানকারী শহীদেরা, সবাই সম্মানিত হয়েছে।

আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে দেশের উন্নয়ন দ্রুতগতিতে চলছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি যে ক্ষমতায় থাকলে উন্নয়ন হয়, সেটা আমরা প্রমাণ করেছি। ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে আমাদের এখন আর দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হয় না। অথচ তারা বাঙালিকে গোলামির জাতিতে পরিণত করতে চেয়েছিল। কিন্তু আমরা ঘুরে দাঁড়িয়েছি। কারণ আমরা মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ী শক্তি, আর তারা পরাজিত শক্তি। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে।

সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, শহীদ জায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, সমকাল সম্পাদক গোলাম সারওয়ার, বিজ্ঞানী ও লেখক অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল এবং বাংলাদেশে ইউনেস্কোর প্রতিনিধি ও প্রধান বিয়েট্রিস খলদুন।

বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণকে বিশ্ব ঐতিহ্যের দলিল হিসেবে অন্তর্ভূক্ত করার জন্য ইউনেস্কোর প্রতি ধন্যবাদ জানিয়ে নাগরিক কমিটির পক্ষে ‘লেটার অব থ্যাংকস’ পড়ে শোনান সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। অনুষ্ঠানে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, বাংলাদেশ জাতীয় জোটের (বিএনএ) ব্যারিস্টার নাজমুল হুদাসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, নেতৃস্থানীয় শিক্ষক, বুদ্ধিজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।

বেলা ২টা ৪০ মিনিটে সমবেত জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে শুরু হয় নাগরিক সমাবেশ। গান, আবৃত্তি আর অতিথিদের বক্তব্যে প্রাণবন্ত এ সমাবেশেঅংশ নেন হাজার হাজার মানুষ। গো‍টা সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ছেয়ে যায় লাল সবুজে। বিশাল নৌকায় মঞ্চ ছাড়াও উদ্যানের বিভিন্ন অংশে ছোট বড় নৌকাসহ নানা সাজে সজ্জিত করা হয় ঐতিহাসিক এই উদ্যানকে।

পবিত্র ধর্মগ্রন্থগুলো পাঠের পর বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে রচিত ‘ধন্য মুজিব ধন্য, বাংলা মায়ের মুক্তি এলো এমন ছেলের জন্য’, ‘সাড়ে সাত কোটি মানুষের আরেকটি নাম মুজিবুর’, ‘শোন একটি মুজিবরের থেকে লক্ষ মুজিবরের কন্ঠস্বরের ধ্বনি-প্রতিধ্বনি’, ‘যতদিন রবে পদ্মা মেঘনা/গৌরী যমুনা বহমান/ততদিন রবে কীর্তি তোমার/শেখ মুজিবুর রহমান’ শীর্ষক জনপ্রিয় গানগুলোর অংশ বিশেষ পরিবেশন করা হয়।

এরপর ‘তুমি যে সুরের আগুন লাগিয়ে দিলে মোর প্রাণে…’ শীর্ষক রবীন্দ্রসংগীত পরিবেশন করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও জাতীয় সংসদের উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর ছেলে শিল্পী সাজেদ আকবর।

জাতীয় কবি কাজী নজরুলের লেখা ‘তোরা সব জয়ধ্বনি কর’ গানটি গেয়ে শোনান স্বাধীন বংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী শাহীন সামাদ। প্রয়াত সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হকের লেখা ‘আমার পরিচয়’ কবিতাটি আবৃত্তি করেন সংস্কৃতিমন্ত্রী এবং অভিনেতা ও আবৃত্তিশিল্পী আসাদুজ্জামান নূর। এরপর বঙ্গবন্ধু’র ৭ মার্চের ভাষণ নিয়ে স্বরচিত কবিতা ‘স্বাধীনতা, এই শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ আবৃত্তি করেন কবি নির্মলেন্দু গুণ। একটি ভাওয়াইয়া গান পরিবেশন করেন অনিমা মুক্তি গোমেজ, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে একটি গান পরিবেশন করেন সংসদ সদস্য ও সংগীতশিল্পী মমতাজ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন নাট্য ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার ও শহীদ বুদ্ধিজীবী ডা. আবদুল আলীম চৌধুরীর কন্যা ডা. নুজহাত চৌধুরী।

 

 

খবর বিজ্ঞপ্তি, জাতীয় খবর, রাজনীতির খবর

আপনার ত লিখুন :

 
ভারপ্রাপ্ত-সম্পাদকঃ শাকিব বিপ্লব
© কপিরাইট বরিশালটাইমস ২০১২-২০১৮ | বরিশালটাইমস.কম
বরিশালটাইমস মিডিয়া লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান।
ইসরাফিল ভিলা (তৃতীয় তলা), ফলপট্টি রোড, বরিশাল ৮২০০।
ফোন: +৮৮০২৪৭৮৮৩০৫৪৫, মোবাইল: ০১৮৭৬৮৩৪৭৫৪
ই-মেইল: barishaltimes@gmail.com, bslhasib@gmail.com
© কপিরাইট বরিশালটাইমস ২০১২-২০১৮
টপ
  প্রথম দিনেই কক্সবাজার এক্সপ্রেস ট্রেনে কাটা পড়লেন যুবক  এবার সকল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের বদলির নির্দেশ ইসির  জনগণের ইচ্ছায় স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন আ'লীগ নেতা আতিক  আ'লীগ প্রার্থী স্বপনের মনোনয়ন দাখিলে জনতার ঢল  বরিশালে শ্রেণিকক্ষ দখল করে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে শিক্ষকের বসবাস  সব থানার ওসি বদলির নির্দেশ নির্বাচন কমিশনের  জাকির নায়েককে সাড়ে ৩ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিলেন মালয়েশিয়ার রাজনীতিবিদ  মুলাদীতে নৌকার প্রার্থী বদলের গুঞ্জনে আওয়ামী লীগে হতাশা  ঝালকাঠিতে ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমরের কুশপুত্তলিকা দাহ  স্বতন্ত্র প্রার্থীকে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ