বরিশাল টাইমস রিপোর্ট
প্রকাশিত: ০৭:২৭ অপরাহ্ণ, ০৮ ডিসেম্বর ২০১৭
কক্ষ স্বল্পতা, শিক্ষক সংকট এবং বিভিন্ন অজুহাতে শিক্ষক অনুপস্থিতির কারণে জোড়াতালি দিয়ে চলছে ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো। শিক্ষা বিভাগের কর্মকর্তাদের তদারকিও শূন্যের কোঠায়। প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের অবৈধ সুযোগ নিয়ে ক্লাস ফাঁকি দিয়ে শিক্ষা অফিসকে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান বানিয়েছে কয়েকজন শিক্ষক। বর্তমানে এর সাথে নতুন করে যোগ হয়েছে ডেপুটেশন বাণিজ্য।
উপজেলার মোল্লারহাট ইউনিয়নের চর আমতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে সহকারি শিক্ষক জয়িতা হালদার ২০১৭ সালের এপ্রিল মাসে মন্ত্রণালয়ের অনুমতি না নিয়ে ডেপুটেশনে যান কান্ডপাশা গোহালকাঠি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। আট মাস কেটে গেলেও এখনো তিনি ওই স্কুলেই কর্মরত রয়েছেন। বরিশাল বিভাগীয় শিক্ষা অফিসের উপ-পরিচালক (ডিডি) এস.এম ফারুকের মৌখিক অনুমতিতে তিনি ডেপুটেশনে রয়েছেন বলে দাবি করেছেন ওই শিক্ষক। এ কারণে বিধি মোতাবেক শিক্ষার্থী অনুযায়ী কান্ডপাশা গোহালকাঠি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৫ জন শিক্ষক থাকার নিয়ম থাকলেও ৬ জন শিক্ষক দিয়ে পরিচালিত বিদ্যালয়টি।
সরেজমিনে উপজেলার চর আমতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেল করুণ অবস্থা। স্কুলটিতে শিক্ষার্থীর অভাব নেই। কিন্তু ক্লাস সংকট আর শিক্ষক স্বল্পতার কারণে চরের শিশুগুলো অকালেই ঝড়ে পড়ছে। জানা গেল, বিদ্যালয়টিতে মোট ৬ জন শিক্ষকের পদ রয়েছে। বর্তমানে শিক্ষক আছে ৫ জন। এদের মধ্যে জয়িতা হালদার নামের একজন ক্ষমতার জোরে ডেপুটেশনে রয়েছেন অন্য স্কুলে। ডেপুটেশনের কারণে বিদ্যালয়ে অচলাবস্থার সৃষ্টি হলেও শিক্ষা প্রশাসন থাকছেন নির্বিকার।
একাধিক সূত্রে জানা গেছে, বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষকা জয়িতা হালদার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে বিধি ভঙ্গ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের লিখিত অনুমতি না নিয়ে বরিশাল বিভাগীয় শিক্ষা অফিসের উপ-পরিচালক (ডিডি) এস.এম ফারুকের মৌখিক আদেশে এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি সুবিধাজনক বিদ্যালয়ে ডেপুটেশনে যান। চলতি বছরের ১৯ এপ্রিল মাসে তিনি সেখানে যোগদান করেন।
শিক্ষা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এই অবস্থা চলতে থাকলে গ্রামাঞ্চলের প্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থা পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যাবে। ডেপুটেশনে চলে যাওয়ায় সংশ্লিষ্ট স্কুলে তৈরি হচ্ছে শিক্ষক সংকট। অথচ এই স্কুলের নামেই বেতন-ভাতা পাচ্ছেন ডেপুটেশনে যাওয়া শিক্ষক।
এ ব্যাপারে সহকারি শিক্ষক জয়িতা হালদার বলেন, যাতায়াতে অসুবিধার কারণে ডেপুটেশন নিয়েছি। সামনের জানুয়ারিতে বদলির চেষ্টা করবো। তিনি আরও বলেন, চর আমতলী স্কুল থেকে তিনি নিয়মিত বেতন-ভাতা উত্তোলন করছেন।
কান্ডপাশা গোহালকাঠি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তাছলিমা বেগম বলেন, ‘ডিডি স্যারের মোখিক আদেশে জয়িতা হালদার এপ্রিল মাস থেকে এ স্কুলে ডেপুটেশনে রয়েছেন।’
বরিশাল বিভাগীয় শিক্ষা অফিসের উপ-পরিচালক (ডিডি) এস.এম ফারুক বলেন, ইভটিজিং সংক্রান্ত একটি ঝামেলার কারণে জয়িতা হালদারকে চর আমতলী স্কুল থেকে কিছুদিনের জন্য কান্ডপাশা গোহালকাঠি স্কুলে আনা হয়েছিল। এটা ডেপুটেশন নয়। শীঘ্রই তাকে চর আমতলী স্কুলে ফেরত পাঠানো হবে।