২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বুধবার

পঙ্গুত্বের কারণে ভিক্ষুক বেশে হামিদের ইয়াবা পাচার

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১২:০৭ অপরাহ্ণ, ২৪ নভেম্বর ২০২০

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল:: জন্মগতভাবে কোমর থেকে দুই পা পর্যন্ত অচল। ক্রাচে ভর দিয়ে চলাফেরা তার। পঙ্গুত্বের কারণে ভিক্ষাবৃত্তি করে জীবন ধারণ করেন। কিন্তু ভিক্ষার পাশাপাশি সাত বছর ধরে ইয়াবা পাচার করে চলেছেন তিনি। এবার আর শেষ রক্ষা হলো না। গত রবিবার রাতে নগরীর স্টেশন রোডের নতুন রেলওয়ে স্টেশনের সামনে থেকে দুই হাজার পিস ইয়াবাসহ পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছে।

পঙ্গু ওই ব্যক্তির নাম মুহাম্মদ হামিদ (৩২)। কক্সবাজার জেলার টেকনাফের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত আলী জোহরের ছেলে। তার বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা করেছে কোতোয়ালি থানা পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, হামিদ স্টেশন রোড হয়ে কদমতলী যাচ্ছিলেন। সেখান থেকে বাসে করে ইয়াবা পাচারের উদ্দেশ্যে ঢাকায় যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল তার। দীর্ঘদিন ধরে তিনি টেকনাফ থেকে ইয়াবা সংগ্রহ করে চট্টগ্রাম হয়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় পাচার করে আসছেন। গ্রেপ্তারের আগে হামিদের দেহ তল্লাশি করা হয়। একপর্যায়ে তার পরিহিত লুঙ্গির খোঁজা থেকে দুই হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।

কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন বলেন, তিনি দীর্ঘ সাত বছর ধরেই ভিক্ষুকের ছদ্মবেশে পঙ্গুত্বকে ঢাল করে ইয়াবা পাচারের কাজ করছিলেন। গত রবিবার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আমরা দুই হাজার পিস ইয়াবাসহ তাকে গ্রেপ্তার করি। হামিদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করা হয়েছে। তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

এ ছাড়া চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে পুলিশের পৃথক অভিযানে দুই হাজার পিস ইয়াবাসহ দুই নারী গ্রেপ্তার হয়েছেন। গত রবিবার দুপুর ও সন্ধ্যায় বাঁশখালী উপজেলার পুঁইছড়ি ইউনিয়নের বাঁশখালী-পেকুয়া প্রধান সড়কের ফুটখালী ব্রিজ এলাকায় পৃথক অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। তারা হলেন রাবেয়া খাতুন ও আয়েশা বেগম। দুজনেরই বাড়ি টেকনাফ উপজেলায়।

বাঁশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সফিউল কবীর বলেন, পুলিশের নিয়মিত অভিযানে ইয়াবাসহ দুই নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করা হয়েছে। তাদের জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

গত রবিবার মিয়ানমার থেকে সাগরপথে চট্টগ্রামে সরাসরি ইয়াবার চালান আসার ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। কিন্তু ধরা পড়া মাদককারবারি সোহেল উদ্দিনের কাছ থেকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে কোনো তথ্যই আদায় করতে পারেনি পুলিশ। তাই আদালতের কাছে তার পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করেছে চান্দগাঁও থানা পুলিশ।

গতকাল সোমবার দুপুরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বন্দরনগরীর চান্দগাঁও থানার উপপরিদর্শক (এসআই) কাউসার হামিদ বলেন, সোহেল উদ্দিন বান্দরবান ও রামুতে ব্যবসা করেন এবং ব্যবসার আড়ালে তিনি দীর্ঘদিন মাদক কারবারে জড়িত বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন। তার তিন সহযোগী জাহিদ, জিসান ও আবুল কালামকে গ্রেপ্তার করা গেলে সাগরপথে ইয়াবা পাচারের আদ্যোপান্ত জানা যাবে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশকে কোনো তথ্যই দেননি সোহেল। তাই তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় পুলিশ। তার বিরুদ্ধে পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে। তবে আদালত এখনো শুনানির তারিখ নির্ধারণ করেননি।

3 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন