ভোলা: সরকারের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ভোলা জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ব্যাঙের ছাতার মত গড়ে ওঠেছে অবৈধ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন কোচিং বাণিজ্য। সরকারি অনুমোদন ছাড়া বাণিজ্যিকভাবে গড়ে ওঠা এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কারণে প্রতারিত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। তবে, অবৈধ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে বোরহানউদ্দিন উপজেলা প্রশাসন। আজ মঙ্গলবার দুপুরে বোরহানউদ্দিন উপজেলার মাসিক আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় অবৈধ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানানো হয়।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে পৌর মেয়র রফিকুল ইসলাম বলেন, বোরহানউদ্দিন পৌর শহর ও উপজেলার বিভিন্ন অলিগলিতে অবৈধভাবে গড়ে ওঠেছে কিন্ডার গার্টেন-ইংলিশ মিডিয়ামসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। গড়ে ওঠেছে অবৈধ কোচিং সেন্টার।
তিনি আরো বলেন, সরকারের অনুমোদনবিহীন এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি করানোর জন্য শহরে পোষ্টারিং করা হচ্ছে। মাইকিং হচ্ছে। ইংলিশ মিডিয়ামের নামে গত তিন দিন ধরে মাইকিং হচ্ছে। মাইকিংয়ের শব্দে কান ঝালাপালা হচ্ছে। ঠিকমত কাজ-কর্ম করা যাচ্ছে। শিক্ষার জন্য নয়, ব্যবসার জন্য এক শ্রেণির লোভী ব্যক্তি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তৈরি করছেন। এসব অবৈধ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে টিউশন ফি নেওয়া হচ্ছে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা।
যেখানে শিক্ষামন্ত্রী অবৈধ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও টিউশন বাণিজ্যের বিরুদ্ধে সেখানে এ উপজেলায় অবৈধভাবে কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠতে পারবে না বলেও হুশিয়ার করে দেন পৌর মেয়র রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, নিয়মের ভেতরে থেকে এবং টিউশন ফি সহনশীল পর্যায়ে রেখে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করতে হবে।
পৌর মেয়রের সঙ্গে একমত পোষণ করে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আঃ কুদ্দূসসহ উপস্থিত প্রায় সব সদস্যই এই মাসিক সভায় অবৈধ শিক্ষাপ্রতষ্ঠান বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান।
সভায় উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার তপন কুমার বলেন, গত মাসিক সভায় সিদ্ধান্ত মোতাবেক বোরহানউদ্দিনে মাদ্রাসা, কিন্ডার গার্টেনসহ প্রায় ১০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে অবৈধ চিহ্নিত করে ওইসব প্রতিষ্ঠান বন্ধ করার জন্য নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আঃ কুদ্দূস জানান, বুধবারের মধ্যে ওই সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করা না হলে বৃহস্পতিবার থেকে প্রশাসন অবৈধ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তালা মেরে বন্ধ করে দেবে। সভায় শহরে হঠাৎ করে চোরের উপদ্রব বাড়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। এ বিষয়ে পুলিশি টহল জোরদারের ওপর গুরুতারোপ করা হয়।
সভায় দুইটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে “মিড দ্যা মিল” চালু করা হয়েছে বলেও জানান ইউএনও। এ ছাড়া আগামী ১৬ ডিসেম্বর বর্ণাঢ্য আয়োজনে এবারের বিজয় দিবস পালন ও বাল্য বিয়ে রোধসহ বিভিন্ন পরিকল্পনা এবং বাস্তবায়নের বিষয়ে আলোচনার পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা চেয়ারম্যান মহব্বত জান চৌধুরী। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন পৌর মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জসিম উদ্দিন হায়দার, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান রাসেল আহমেদ মিয়া, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মাহফুজা আহসান ও আওয়ামী লীগ নেতা জাফর উল্যাহ চৌধুরী। এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সভায় সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, বিভিন্ন ইউপি চেয়ারম্যানসহ কমিটির সদস্যরা।