বরিশাল: বরিশাল নগরীর কাউনিয়া থানাধীন মনষা বাড়ি গলি এলাকায় বিরোধপূর্ন একখন্ড ভূসম্পত্তি বিবাদীর অনুপস্থিতিতে একটি পক্ষকে দখলে সহযোগিতার অভিযোগ উঠেছে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও পুলিশের বিরুদ্ধে। স্থানীয় নুর এ জামে মসজিদ সংলগ্ন জমিটি মঙ্গলবার বিবাদী পক্ষের অনুপস্থিতিতে দখল দেয়ায় পুলিশ ও কাউন্সিলরের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

সিঙ্গাপুরে অবস্থানরত বিবাদী ইঞ্জিনিয়ার হেলাল উদ্দিনের অভিযোগ পাশ্ববর্তী জমি মালিক অর্থাৎ থানায় অভিযোগকারী  তোফাজ্জেল হোসেনের কাছ থেকে অর্থনৈতিক সুবিধা নিয়ে দখলকার্যে সহযোগিতা করেছে উভয়ে।

 

অবশ্য বিবাদী বিদেশে অবস্থানরত সময়ে জমি দখল নিয়ে  এলাকায়ও তোলপাড় অবস্থা চলছে। বিশেষ করে এক ব্যক্তির লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুলিশ ও কাউন্সিলর দখলকার্যে সহযোগিতা করায় তা বেশি মাত্রায় আলোচনার খোড়াক জুগিয়েছে। এমতাবস্থায় স্থানীয়দের অভিব্যক্তি হচ্ছে- বিরোধপূর্ন কোন ভূসম্পত্তি দখলে পুলিশ বা কাউন্সিলরের উপস্থিতিতে দখল হলে তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠাটাই স্বাভাবিক।’

কারণ বিরোধপূর্ন সম্পত্তি আদালতের রায় ব্যতিত কোন পক্ষই দখল করার ইখতিয়ার রাখে না। কিন্তু নগরীর ২ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মর্তুজা আবেদীন ও সংশ্লিষ্ট কাউনিয়া থানার সহকারি উপ-পরিদর্শক (এএসআই) নিজাম কোন নির্দেশনা ছাড়াই সেই বিরোধপূর্ন জমি এক পক্ষকে বুঝিয়ে দেয়ায় ঢের বিতর্ক চলছে।’

যদিও এখন উভয়ই জমি বুঝিয়ে দেওয়ার পুরো বিষয়টি অস্বীকার করে একে অপরের ওপর দোষ চাপাচ্ছেন। তবে পুলিশ কর্মকর্তা প্রথমে স্বীকার করেছিলেন থানায় অভিযোগকারী তোফাজ্জেল হোসেনকে জমি বুঝিয়ে দেয়ার বিষয়টি। কিন্তু বিবাদীর অনুপস্থিতে বিরোধপূর্ন সম্পত্তি কিভাবে একটি পক্ষকে দখল নিতে সহযোগিতা করলেন এমন প্রশ্নে তালগোল পাকিয়ে এক পর্যায়ে দোষ চাপালেন কাউন্সিলর মর্তুজা আবেদীনের ওপর।

তবে কাউন্সিলর দখলকার্যে জড়িত নন এমন কথা সোজাসাপটা জানিয়ে দিয়ে বলছেন, পুলিশ আসায় থানায় অভিযোগকারী তোফাজ্জেল হোসেন তাকে ফোন দিয়ে ডেকে নেন। কিছুক্ষণ সেখানে অবস্থান করে মাপঝোপ করতে দেখে তিনি চলে যান। অথচ স্থানীয় একাধিক সূত্র ও বিদেশে অবস্থানরত ইঞ্জিনিয়ার হেলাল উদ্দিনের অভিযোগ হচ্ছে- প্রায় ১৫ লাখ টাকা মূল্যের জমিটি পুরো দখল কাজেই পুলিশ ও কাউন্সিলর ভূমিকা রেখেছে। যার দরুণ অভিযোগকারী তোফাজ্জেল হোসেন প্রকাশ্যে জমি দখল নেয়ার সাহস দেখিয়েছেন।

এক্ষেত্রে বিষ্ময়কর বিষয় হচ্ছে- তোফাজ্জেল হোসেন জমিটি যে মালিকের কাছ থেকে কিনেছেন সেও এমন দখলকার্যে হতাশ। কারণ তার বিক্রিত জমি পেছনে ফেলে সামনে থেকে ইঞ্জিনিয়ার হেলাল উদ্দিনের দেড় শতাংশ জমি দখল নিয়েছে বলে জানান সাবেক জমি মালিক সোহরাব হোসেন।

তার ভাষ্যমতে- পেশায় স্কুল শিক্ষক তোফাজ্জেল হোসেন তার কাছ থেকে পৌনে ৫ শতাংশ জমি ক্রয় করেছিলেন। সেই জমির চার কোনায়  সীমানা ঘেরা। কিন্তু কিছুটা অংশ পেছনে ফেলে পার্শ্ববর্তী জমি মালিক বিদেশে অবস্থানরত ইঞ্জিনিয়ার হেলাল উদ্দিনের ভূসম্পত্তি দখল নিয়েছে। বিষয়টি শোনার পর তিনি নিজেও নিষেধ করেছিলেন বলে জানা গেছে। এমতাবস্থায় থানা পুলিশ ও কাউন্সিলর মিলে সেই জমি দখল নিতে সহযোগিতা করায় জনমনে নানা প্রশ্ন সঞ্চার হয়েছে।

যদিও কাউন্সিলর মর্তুজা আবেদীন এবার বলছেন, জমির পুরাতন সীমানা তুলে ফেলানো হয়নি। নতুন করে যেসব স্থানে পিলার বসানো হয়েছে তা যেকোন সময়ে তুলে ফেলা সম্ভব। এমতাবস্থায় বিদেশে অবস্থানরত হেলাল উদ্দিনের ভাষ্য হচ্ছে, বিরোধপূর্ন সম্পত্তি নয়, তবুও এক ব্যক্তির অভিযোগের প্রেক্ষিতে থানা পুলিশ কিভাবে দখল নিলো এমন প্রশ্নে তিনিও হতাশ।

ব্যবসায়িক কাজ শেষে দেশে ফিরে এ বিষয়টি নিয়ে আদালতের শরণাপন্ন হবেন। সেক্ষেত্রে কাউন্সিলর ও পুলিশের বিরুদ্ধেও তিনি একশনে যাওয়ার আভাস দিয়েছেন।