ঝালকাঠি: নলছিটিতে কথিত বাল্যবিবাহের খোড়া অজুহাতে এক ইউপি সদস্য ও পুলিশের সহকারি উপ-পরিদর্শক (এএসআই) উৎকোচ নিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বাল্যবিবাহের নাটক সাজিয়ে উপজেলার সিদ্ধকাঠী ইউনিয়নের ভাটিয়া গ্রামের তিন জনকে থানায় এনে ৬ঘন্টা আটকে দাবির টাকা পাওয়ার পর রাত ২টার দিকে তাদেরকে থানা থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

 
অভিযোগে জানা গেছে, ভাটিয়া গ্রামের ভ্যান চালক দেলোয়ার মৃধার ৫ম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়ে শারমিন একই গ্রামের দলু হাওলাদারের ছেলে উজ্জ্বল হাওলাদার রোববার প্রেমের টানে ঢাকায় পাড়ি জমালে আত্মীয় স্বজনের হস্তক্ষেপে সোমবার ফিরে আসে। স্থানীয় চৌকিদার আসলাম ও সিদ্ধকাঠী ৫নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার মাসুম ব্যাপারী বিষয়টি টের পেয়ে উজ্জলের বাড়ি এসে বিষয়টি সামাধানের কথা বলেন হঠাৎ নলছিটি থানার এএসআই সোহাগ ঘটনাস্থলে পৌঁছেন।

 
তিনি বাল্যবিবাহের খোড়া অজুহাত তুলে বাজার থেকে উজ্জ্বলের পিতা দলু হাওলাদার, বড় চাচা কালু হাওলাদার ও শারমিনের পিতা দেলোয়ার মৃধাকে আটক করে এনে নলছিটি থানায় এনে হাজতে আটকে রাখেন। খবর পেয়ে উজ্জ্বলের অপর চাচা সত্তার হাওলাদার থানায় আসলে সিদ্ধকাঠী ইউপি মেম্বার মো. আলম খান ও ৫নং ওয়ার্ডের মেম্বার মাসুদ ব্যাপারী থানা থেকে নিতে টাকা-পয়সা লাগবে জানিয়ে সোমবার রাত সাড়ে ১২টায় নগদ ১৯হাজার টাকা মাসুদ ব্যাপারী, উজ্জলের ফুপাতো ভাই রমজান হাওলাদার ও উত্তর মালোয়ার এলাকার শাজাহানের উপস্থিতিতে আলম খানকে দেয়।’
সত্তার হওলাদার অভিযোগ করেন- পুলিশকে ম্যানেজ করতে আলম মেম্বার ১৯হাজার টাকা নেয়ার  পর রাত ২টার দিকে আটক ৩জনকে থানা হাজত থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়।  যে টাকার মেয়ে পক্ষ ধার করে ১০হাজার টাকা ও ছেলে পক্ষ বাকী ৯হাজার টাকা দেয়। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে বাল্যবিয়ের আয়োজনের কথা বলে প্রচার করলেও তারা নলছিটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কে কিছু জানায় নি।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে নলছিটি থানার এএসআই সোহাগ বলেন- ‘বাল্যবিবাহ আয়োজনের খবর পেয়ে বিয়ে আসর থেকে ওই তিন জনকে আটক করা হয়। বিয়ে আসর থেকে কোন কাজী আটক বা নিকাহ নিবন্ধন (বালাম) বহি জব্দ হয়েছে কিনা প্রশ্নের কোন সদুত্তোর দিতে পারেননি এএসআই সোহাগ।’
তবে স্থানীয়রা জানায়- ঘটনার দিন আটকদের বাড়ীতে কোন বিয়ের আয়োজন বা কাজী উপস্থিতি কিছুই হয়নি। শুধুমাত্র আর্থিক বাণিজ্যের জন্য তিন জনকে থানায় আটকে রাখা হয়। আর মেম্বার আলম খান ও মাসুদ ব্যাপারী আর্থিক লেনদেনের ব্যাপারটি অস্বীকার করে ‘আটকদের ছাড়িয়ে আনতে থানায় গিয়ে ছিলো বলে স্বীকার করেন।
এ ব্যাপারে নলছিটি উপজেলার (ভারপ্রাপ্ত) নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাসুমা আক্তার জানান- ‘বাল্যবিবাহের ব্যাপারে কেউ আমাকে অবহিত করেনি বলে আমি কিছু জানি না।’