গোলাপি শার্ট আর কালো প্যান্ট পরা দেহটি পড়ে রয়েছে কুয়োর পাড়ে। মাথার পিছন থেকে বেরিয়ে আসা রক্তে ভেসে যাচ্ছে উঠোন। ডান হাতের আঙুলে তখনও ভাঁজ করে ধরা রয়েছে একটি রুমাল।
ফেসবুকে প্রেমের পরিণতি যে এমন মর্মান্তিক হবে, তা কে জানত!
ভরদুপুরে প্রেমিকার বাড়ির সামনেই রিভলভারের গুলিতে আত্মঘাতী হলেন এক যুবক। রবিবার মেদিনীপুর শহরের বরিশাল কলোনির ২ নম্বর ওয়ার্ডের ঘটনা। কোতোয়ালি থানার পুলিশ জানিয়েছে, বছর তিরিশের ওই যুবকের নাম হাসানুজ চৌধুরী। বোলপুরের বাসিন্দা হাসানুজ বিএড পড়ছিলেন। সেখানেই তাঁদের জেরক্সের পারিবারিক ব্যবসা রয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে একটি ব্যাগ উদ্ধার হয়েছে। তাতে একটি ব্যাঙ্কের পাশবই থেকে মৃতের নাম ও পরিচয় জানা গিয়েছে। প্রাথমিক তদন্তের পর অনুমান, ফেসবুকে প্রেমের পরিণতিতেই এই ঘটনা ঘটেছে।
ঠিক কী ঘটেছিল?
বছরখানেক আগে হাসানুজের সঙ্গে ফেসবুকে আলাপ বছর আঠাশের ওই তরুণীর। তিনি পেশায় ঘাটাল আদালতের করণিক। ঘটনার তদন্তে নেমে কোতোয়ালি থানার পুলিশ জানতে পারে, সামনাসামনি দেখা না হলেও ফেসবুকের মাধ্যমে তাঁদের নিয়মিত কথাবার্তা হত। সেই আলাপচারিতা প্রেমের সম্পর্কে এগিয়েছিল বলেও পুলিশের দাবি। পুলিশের আরও দাবি, মাস দেড়েক থেকেই ওই যুবকের থেকে দূরত্ব বাড়াতে শুরু করেন তরুণী। শনিবার দুপুরে ওই তরুণীর বাড়িতে এসে হাজির হন হাসানুজ। ভুয়ো পরিচয় দিয়ে ওই তরুণীর মায়ের সঙ্গে দেখাও করেন তিনি।
তরুণীর পরিবার জানিয়েছে, একটি ক্যুরিয়ার সংস্থায় কাজ করেন, এই পরিচয় দিয়ে হাসানুজ শনিবার ওই তরুণীর সঙ্গে দেখা করতে চান। তবে সেই সময় ওই তরুণী বাড়িতে ছিলেন না। রবিবার দুপুর ২টো নাগাদ ফের ওই তরুণীর বাড়িতে আসেন হাসানুজ। সেই সময় ওই তরুণী তাঁর বাড়ির উঠোনে দাঁড়িয়েছিলেন। হাসানুজকে দেখেই তিনি দরজা বন্ধ করে দেন। এর কিছু ক্ষণ পরেই রিভলভারের গুলির শব্দ শোনা যায়। পুলিশ জানিয়েছে, প্রেমিকার বাড়িতে ঢুকে সেই উঠোনেই নিজের মাথায় রিভলভার ঠেকিয়ে গুলি করেন হাসানুজ। পুলিশের দাবি, গত কালের পর এ দিনও তাঁর প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন হাসানুজ।
ইতিমধ্যেই বোলপুর থানায় যোগাযোগ করেছে পুলিশ। হাসানুজের দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
সূত্রঃ আনন্দবাজার পত্রিকা